ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
হার্ট অপারেশনের পর কিম জং উনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেলেও উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতার বর্তমান শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। জাপানের এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, কিম জং উন এখন অচেতন অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়া তার মৃত্যুর খবরও প্রকাশ করেছে কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম।
তবে উত্তর কোরিয়ার নেতার মৃত্যুর খবর প্রচার হচ্ছে অসমর্থিত সূত্রের বরাতে। আন্তর্জাতিক কোনো সংবাদমাধ্যম এখনো তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সসহ অনেক সংবাদমাধ্যম কিমের আশঙ্কাজনক অবস্থার খবর প্রচার করেছে। এদিকে নিউইয়র্ক পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কিমের মৃত্যুর বিষয়টি গুজব।
প্রকৃত ঘটনা হলো, চলতি মাসের শুরুতে এক দুর্গম গ্রামীন এলাকা সফরে গিয়ে মাটিতে পড়ে যান কিম। এরপর তার তার হার্টে সার্জারির প্রয়োজন পড়ে। এছাড়া গত আগস্ট থেকে কিম হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। পায়েকতু নামের ওই পাহাড়ি এলাকা থেকে ঘুরে আসার পর থেকেই তার সেই সমস্যা আরও প্রকট হয়।
এদিকে বেইজিং সমর্থিত হংকং স্যাটেলাইট টেলিভিশনের সহকারী পরিচালক দাবি করেন, কিম জং উন মারা গেছেন। তিনি এই খবরের পেছনে ‘খুব নিশ্চিত সূত্রের’ বরাত দেন। তার এমন পোস্ট চীনের জনপ্রিয় বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ উইবোতে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। তবে হংকং ব্রডকাস্ট নেটওয়ার্ক এই খবর ‘ভুয়া’ বলে জানিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি এনকে গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন গত ১২ এপ্রিল কার্ডিওভাসকুলারের অস্ত্রোপচার করেছেন বলে খবর দেয়। উত্তর কোরিয়ার অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে কিমের অসুস্থতার এই খবর দেয় ডেইলি এনকে। তবে পরে অনেক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কিমের আশঙ্কাজনক অবস্থার খবর প্রকাশ পায়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স আজ শনিবারে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জন উনকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ দিতে দেশটিতে একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল পাঠিয়েছে চীন। চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ এক সদস্যের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞটি দলটি বৃহস্পতিবার দেশ ছেড়েছে।
তবে বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় ওই উত্তর কোরিয়ার উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করা ওই প্রতিনিধি দল তাদের পরিচয় প্রকাশে অস্বীকৃতি জানান। গত শুক্রবার চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কাউকে পায়নি রয়টার্স। এমনকি চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
জাপানি সংবাদমাধ্যম সুখান গেন্দাই, কিমের হার্ট অপারেশনের বিস্তারিত জানিয়ে বলছে, অপারেশনের সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা কিম জং উনকে অজ্ঞান করেননি। আর অপারেশনের সময় তিনি প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়েন। তাই কারণে অপারেশনে বিলম্বিত হওয়ার এক পর্যায়ে অচেতন অবস্থায় চলে যান কিম।
কিমের স্বাস্থ্যের অবনতি গুঞ্জন চাউর হলেও উত্তর কোরিয়ার কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম এ নিয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা কেসিএনএ ও রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক রোদং সিনমুন, কিম জং উন কোথায় আছেন কিংবা তার শারীরিক অবস্থা এখন কেমন এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেনি।
সেরা নিউজ/আকিব