ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
করোনা ভাইরাসে মারা গেলেন জমজ দুই বোন। তাদের একজন হলেন কেটি ডেভিস (৩৭)। অন্যজন ইমা ডেভিস (৩৭)। করোনা ভাইরাস পজেটিভ ধরা পড়ার পর তিন দিনের ব্যবধানে মারা যান তারা। এর মধ্যে কেডি ডেভিস চিলড্রেনস নার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি মঙ্গলবার মারা গিয়েছেন সাউদাম্পটন জেনারেল হাসপাতালে। অন্যদিকে একই হাসপাতালে শুক্রবার সকালের দিকে মারা গিয়েছেন সাবেক নার্স ইমা ডেভিস। তাদের আরেক বোন জোই বলেছেন, তারা সব সময়ই বলতো যে, আমরা একসঙ্গে পৃথিবীতে এসেছি।
যাবও একসঙ্গে। তিনি আরো বলেন, ওরা ছিল বিস্ময়কর এক জুটি। একসঙ্গে থাকতো সব সময়। সম্প্রতি তাদের অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। কিছু সময় ধরে তারা অসুস্থতায় ভুগছিল। ওরা যে কতটা স্পেশাল ছিল তা বোঝানোর মতো কোনো শব্দ নেই। ওরা সব সময় অন্য মানুষকে সাহায্য করতে চাইতো। যখন ওরা ছোট ছিল তখন নিজেরা ডাক্তার সাজতো। আর নিজেদের পুতুলগুলোকে নার্সিং করতো। শেষ পর্যন্ত পেশাগত জীবনেও ওরা নার্সিং করে গেছে। সব রোগীকে সর্বোচ্চ দিয়ে সেবা করেছে। ওদের কাজে ওরা ছিল ব্যতিক্রম।
সাউদাম্পটন চিলড্রেনস হাসপাতালে চাকরি করতেন কেটি। তিনি অসুস্থ হওয়ার পর করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। এরপর তাকে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে সংশ্লিষ্টরা শোক প্রকাশ করেছেন। ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল সাউদাম্পটন এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের প্রধান নির্বাহী পলা হেড বলেছেন, কেটিকে তার সহকর্মীরা এমন একজন নার্স হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যিনি নার্সিংকে চাকরির চেয়ে বড় করে নিয়েছিলেন।
এই হাসপাতালের সবার পক্ষ থেকে, এমনকি রোগী ও সব সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তার পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা প্রকাশ করছি। দ্য রয়েল কলেজ অব নার্সিং বলেছেন, কেটি নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি ছিলেন স্বার্থহীন একজন নার্স। তিনি নিজের দক্ষতা সম্পর্কে সবাইকে শেয়ার করতেন। রোগীদের কিভাবে চমৎকারভাবে যত্ন নিতে হয় এই জ্ঞান সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতেন।
অন্যদিকে একই হাসপাতালে কোলোরেক্টাল সার্জারি ইউনিটে ২০১৩ সাল থেকে ৯ বছর ধরে নার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন ইমা ডেভিস।
স্টাফদের কাছে এক বার্তা চিফ নার্সিং অফিসার গেইল বাইরন বলেছেন, কেটির যে শারীরিক গঠন ছিল ইমারও তাই ছিল। পরিবারটির জন্য এটা ভীষণ এক বেদনা আর ট্রাজেডি। ইমা ছিলেন একজন চমৎকার নার্স। সব সময় তিনি থাকতেন ঠান্ডা মাথায়। হাসিখুশি থাকতেন। সবার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতেন। সবাই তাকে পছন্দ করতেন। আমাদের সঙ্গে তিনি যতদিন দায়িত্ব পালন করেছেন, তিনি ছিলেন একজন মূল্যবান সদস্য। ইমা মারা যাওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে বৃহস্পতিবার হাসপাতালের প্রধান ফটকের বাইরে হাসপাতাল কর্মীরা ‘ক্লাপ ফর কেটি’ আয়োজন করেন।
সেরা নিউজ/আকিব