বিনোদন ডেস্ক:
হলিউডের ‘এক্সট্র্যাকশন’ ছবিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অনেক দর্শক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এরইমধ্যে তারা এ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ছবিটিতে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে ভুল ভাবে তুলে ধরা হয়েছে বলেই নেটিজিনরা মন্তব্য করেন।
নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। হলিউডের ‘অ্যাভেঞ্জার্স : ইনফিনিটি ওয়ার’ ছবির পরিচালকদ্বয় জো রুশো ও অ্যান্থনি রুশোর প্রযোজনায় এ ছবিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন থর’খ্যাত অভিনেতা ক্রিস হেমসওর্থ। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার প্রেক্ষাপটে এ সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন স্যাম হারগ্রেভ। এর মধ্য দিয়ে এই প্রথম ঢাকা শহরের গল্প নিয়ে কোনো সিনেমা নির্মাণ করা হয়েছে হলিউডে। আগেই জানা গিয়েছিলো এই খবর।
তবে কী সেই গল্প, কীভাবে দেখানো হবে ঢাকাকে।তা জানা না যাওয়ায় ছবিটি নিয়ে এদেশের দর্শকের আগ্রহ ছিলো তুঙ্গে। তাই ছবিটি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেতেই এটি দেখার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন সবাই। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে ছবিটি দেখতে শুরু করেছিলেন দর্শক। কিন্তু অভিজ্ঞতা হলো খুবই বাজে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে দেখানো হয়েছে একটি অপরাধপ্রবণ শহর যা আমাদের জন্য অপমানের। শুধু তাই নয়, ঢাকাবাসীদের ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে ছবিতে মিথ্যে তথ্য দিয়ে। দেশের পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেখানো হয়েছে দুর্নীতিবাজ হিসেবে। এ কারণে ‘এক্সট্রেকশন’ ছবির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকই।
শত শত রিভিউ দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যার অধিকাংশই এ ছবির সমালোচনায় ভরা।
অনেকেই ছবির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের দেশ হিসেবে দেখিয়ে ভাবমূর্তি নষ্ট করায় আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণও করেছেন। সেইসঙ্গে অনেকে ছবিটির দুর্বল গল্প, মানহীন নির্মাণের জন্যও সমালোচনা করেছেন। সাধারণ দর্শকদের পাশাপাশি অনেক তারকাও ছবিটির গল্প, নির্মাণ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা ছবিতে বাংলাদেশ ও ঢাকাকে হেয় করায় ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।
তাদের মধ্যে অভিনেত্রী ও পরিচালক মেহের আফরোজ শাওন লিখেছেন, মারামারি ছাড়া আর কিছু ভালো লাগে নাই। দুর্বল গল্প। বাংলাটা ঠিকঠাক বললেও চলত।
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশ পুলিশের আইনি নোটিশ পাঠানো উচিত। অভিনেত্রী মৌটুসী কঠোর সমালোচনা করেছেন এক ভিডিওতে। সেখানে তিনি বলেছেন, একেবারেই মেনে নিতে পারিনি। যে সময়ে আমাদের পুলিশ-আর্মি একসঙ্গে হাতে হাত রেখে মানুষকে বাঁচানোর জন্য করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। এরজন্য তারা নিজের জীবনটাকে বাজি রাখছে রোজ। ঠিক সেই সময়ে এমন একটা বাজে গল্পের ছবি আমাকে অশান্ত করে তোলে। যে ছবিতে দেখা যায়, একজন ডনের ইশারায় দেশের সকল পুলিশ-আর্মি রাস্তায় নেমে ফাইট করছে আর পুতুলের মতো মার খাচ্ছে।
মৌটুসী আরও বলেন, নেটফ্লিক্সের এই তামাশা না দেখে দুটি রান্নার অনুষ্ঠান দেখলেও কাজে লাগতো। আমি পুরাটাই ডিজহার্টেড ছবিটা দেখে। এ ছবির সমালোচনা করে ‘আয়নাবাজি’ সিনেমার প্রযোজক ও অভিনেতা গাওসুল আলম শাওন ফেসবুকে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে ছবিটির কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে মন্তব্য করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, শাহনাজ খুশি, শামীমা তুষ্টি, আদনান আল রাজীবসহ আরও অনেকেই।
তাদের মধ্যে অনেকেই দাবি করছেন এই ছবির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আইনি ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এই ছবিটি যেন নেটফ্লিক্স থেকে সরিয়ে দেয়া হয় সেই বিষয়েও দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করছেন অনেকেই।
সেরা নিউজ/আকিব