ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়ে ব্রিটেনে এখন পর্যন্ত ১১৪ জন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এছাড়াও দেশটিতে অন্তত ১৬ জন সমাজকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
মঙ্গলবার সকালের দিকে করোনায় মৃত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের শ্রদ্ধা জানাতে দেশজুড়ে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয় ব্রিটেনে। স্বাস্থ্যসেবা খাতের কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এই কর্মসূচিতে অংশ নেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও।
ব্রিটিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেছেন, দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা (এনএইচএস) সংস্থার ৮২ কর্মী এবং ১৬ জন সমাজকর্মী কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার পর মারা গেছেন। কিন্তু বিবিসি বলছে, তাদের অনুসন্ধানে ব্রিটেনে করোনায় ১১৪ জন স্বাস্থ্যকর্মীর প্রাণহানির তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ৫৯ জন পুরুষ এবং ৫৪ জন নারী।
ব্রিটিশ এই সংবাদমাধ্যম বলছে, আমরা এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ডে ১০০, স্কটল্যান্ডে ৪ এবং ওয়েলসে ৯ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীর মৃত্যুর তথ্য রেকর্ড করেছি। নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে করোনায় কোনও চিকিৎসক কিংবা স্বাস্থ্য কর্মীর প্রাণহানির তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে করোনায় মৃতদের প্রায় ৭০ শতাংশই জাতিগত কৃষ্ণাঙ্গ, এশীয় এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য।
এই তিন সম্প্রদায়ের মৃত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে ২৬ জন কৃষ্ণাঙ্গ, ২১ জন দক্ষিণ এশীয়, ১৯ জন পূর্ব এশীয়; যাদের ১৪ জনই ফিলিপিনো এবং চারজন আরব বংশোদ্ভূত।
দেশটিতে স্বাস্থ্য খাতের কর্মীদের মধ্যে কতসংখ্যক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সেব্যাপারে পরিষ্কার কোনো পরিসংখ্যান নেই।
ব্রিটেনে করোনাভাইরাস মহামারিতে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৯২ জন মারা গেছেন। এছাড়া এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ১৪৯ জন এবং সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৩৪৪ জন। করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে এলেও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সোমবার বলেছেন, করোনার দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ ভয়াবহ হতে পারে; যে কারণে এখনই লকডাউন প্রত্যাহার কিংবা শিথিলের কথা ভাবছে না সরকার।
ব্রিটিশ এই প্রধানমন্ত্রী করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর আইসিইউতে ভর্তি হয়েছিলেন। দীর্ঘ এক মাসের চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ওঠার পর সোমবার কাজে ফেরেন তিনি।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে ধরা পড়ে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস। সেই থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২২০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ৩০ লাখের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ২ লাখ ১১ হাজার ৭৮০ জন।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।
সেরা নিউজ/আকিব