স্পোর্টস ডেস্ক:
করোনার এই সংকটকালে অসহায়-দুস্থদের সহায়তার জন্য এগিয়ে আসলেন তাসকিন আহমেদ ও সৌম্য সরকার। গতকাল রাত সাড়ে দশটায় ‘অকশন ফর অ্যাকশন’ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে নিজের হ্যাটট্রিক বল নিলামে তোলেন তাসকিন। একই সময়ে নিলামে তোলা হয় সৌম্য সরকারের ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট শতকের ব্যাটটিও। দুটি স্মারকেরই ভিত্তি মূল্য ছিল ৩ লাখ। শেষ পর্যন্ত অনলাইন নিলামে তাসকিনের বল ৪ লাখ ও সৌম্যর ব্যাট বিক্রি হয় সাড়ে ৪ লাখে।
বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক কিনেছে ব্যাট ও বলটি। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকটির নাম জানা যায়নি। শিগগিরই নাম জানিয়ে দেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে ‘অকশন ফর অ্যাকশন’।
২০১৭ সালে ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন তাসকিন। সেই বল নিলামে তোলা নিয়ে ডানহাতি এই পেসার বলেন, ‘হ্যাটট্রিকের বল আমার জন্য অনেক স্পেশাল।
কেবল হ্যাটট্রিকেরটা না পাঁচ উইকেট পাওয়া প্রত্যেকটা বলই আমার কাছে খুব স্পেশাল। আর আমি যখন দেখলাম অনেকে তাদের প্রিয় জিনিস নিয়ে এগিয়ে আসছে। তাই আমারও মনে হলো আমার প্রিয় একটা জিনিস নিয়ে এই করোনা ভাইরাসের সময়ে এগিয়ে আসতে চেয়েছিলাম। তাই এই বল নিয়েই আমি এগিয়ে এসেছি।’
তাসকিন যোগ করেন, ‘হ্যাটট্রিক করতে আসলে স্কিলের থেকে বেশি লাগে ভাগ্য। ডেব্যু (অভিষেক) ম্যাচে পাঁচ উইকেট পাওয়া বলটা হারিয়ে গেছে না হলে আমি ওটাই দিতাম। কারণ ওই বলটা আমার কাছে আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমার আরও অনেক কাছের ছিল বলটি।’
অন্যদিকে, ২০১৯ সালের মার্চে হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ও একমাত্র সেঞ্চুরি হাঁকান সৌম্য সরকার। শেষ পর্যন্ত ১৪৯ রানে থামেন এই বাঁহাতি। সৌভাগ্যের প্রতীক হয়ে থাকা সেই ব্যাট নিলামে তোর বিষয়ে সৌম্যর মন্তব্য, ‘অবশ্যই যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্য সেঞ্চুরি একটা বড় বিষয়। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ব্যাট করতে নামার আগে রাতে প্র্যাক্টিস করছিলাম। তো সেদিন রাতে ‘এসএস’ আমার ব্যাটের স্পন্সরদের কাছ থেকে আমার দুটি ব্যাট আসে। পরেরদিন হ্যামিল্টনে খেলতে নেমেছিলাম ওই নতুন ব্যাট নিয়ে। যে সময় আমি একশ করি তখন ব্যাটটার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম। আমার টেস্টের প্রথম একশ, ওই ব্যাটটার সঙ্গে আমার অনেক আবেগ জড়িত। আমি ভেবেছিলাম ব্যাটটা অনেকদিন আমার কাছে থাকবে। কিন্তু এমন একটা সুযোগ আসছে মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য এই ব্যাটটা দিচ্ছি, আমার খুব ভালো লাগছে।’
সৌম্য সেই সেঞ্চুরির জন্য মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সেদিন সেঞ্চুরির আগে ৭০/৭৫ রান যখন তখন বল হাতে লেগে হাত ফুলে গিয়েছিল। ৮০/৯০ রানের দিকে হাতের ব্যথা অনেক বেড়ে গিয়েছিল। রিয়াদ ভাইকে বলেছিলাম ভাই আমি আর ব্যাট করতে পারবো না। এই সময় একটা দুইটা ওভার আপনি ব্যাট করেন, আমার হাতের ব্যথা কমতে টাইম লাগবে। তাই যখন সেঞ্চুরি পূর্ণ হয় তখন রিয়াদ ভাইকে গিয়ে বলি ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। রিয়াদ ভাই ওইদিন আমাকে সাহায্য না করলে আসলে আমি সেঞ্চুরি করতে পারতাম না।’
সেরা নিউজ/আকিব