সেরা নিউজ ডেস্ক:
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় কার্যকরী রেমডেসিভির ইনজেকশন উৎপাদন করল ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
শুক্রবার (৮ মে) থেকে ওষুধটি বাজারজাত করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস-এর প্রধান মোহাম্মদ মুজাইহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ওষুধটির প্রতিটি ধাপের প্রস্তুতি আমরা শেষ করেছি। আগামী ১০ মে আমরা ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে ইনজেকশনটির স্যাম্পল পাঠাবো। আশা করি খুব দ্রুত আমরা বাজারজাত করার অনুমতি পাবো। আরও কিছু ধাপ আছে, সেগুলো সম্পূর্ণ করে কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা বাজারজাত করতে পারবো।
‘ওষুধের বাজারমূল্য পাঁচ হাজার পাঁচশ টাকা। যেসব হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা দেওয়া হবে, শুধু সেখানেই এই ওষুধ পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ৫ থেকে ১০টি ডোজ দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, বিশ্বে করোনার একমাত্র কার্যকর ওষুধ বলে স্বীকৃত জেনেরিক রেমডেসিভির উৎপাদনের সব ধাপ এসকেএফ সম্পন্ন করেছে। এসকেএফের উৎপাদন করা রেমডেসিভিরের বাণিজ্যিক নাম দেওয়া হয়েছে— ‘রেমিভির’। এসকেএফই বিশ্বে প্রথম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, যারা জেনেরিক (মূল/গোত্র) রেমডেসিভির উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে।
১ মে করোনা চিকিৎসায় রেমডেসিভিরের অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। আক্রান্ত রোগী যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন তাদের জন্য এই ওষুধটি ব্যবহার করা হবে বলে জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজিজেসের পরিচালক অ্যান্থনি এস ফাউসি বলেন, সকল তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে দেখা যায় যে, রেমিডেসিভির প্রয়োগের ফলে করোনা আক্রান্ত রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।
ইতোমধ্যে রেমডেসিভির ওষুধ তৈরির জন্য ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের কেমিক্যাল ও ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে গিলিয়াড। ৭ মে গিলিয়াড সায়েন্সেসর প্রধান ড্যানিয়েল ও’ডে এক বিবৃতিতে বলেন, ভারত-পাকিস্তানসহ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। গিলিয়াড স্বল্প ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে ওষুধ সরবরাহের লক্ষে ইউনিসেফের সাথে আলোচনা করছে।
বিবৃতিতে ড্যানিয়েল ও’ডে বলেন, গিলিয়াড এসব দেশে উৎপাদনের সুবিধার্থে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করবে। অবশেষে রেমডেসিভির উৎপাদনের লাইসেন্স দেওয়ার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ চুক্তিতে যাচ্ছে গিলিয়াড। আমাদের লক্ষ্য ২০২২ সালের মধ্যে এশিয়া ও বিশ্বের উয়ন্নশীল দেশগুলোতে ওষুধ তৈরি শুরু করা ও সরবরাহ নিশ্চিত করা।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ-এর তত্ত্বাবধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ১০৬৩ মানুষের ওপর এ ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। রেমডেসিভির গ্রহণকারীরা গড়ে ১১ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠার প্রমাণ পাওয়া যায়। করোনায় গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ দিনের ডোজের প্রয়োজন হতে পারে। পরীক্ষামূলক অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ রেমডেসিভির ওষুধটি মূলত ইবোলার চিকিৎসায় তৈরি হয়।
সেরা নিউজ/আকিব