অনলাইন ডেস্ক:
খেলোয়াড়ি জীবনে অনেক ভক্তের দেখাই পেয়েছেন লিওনেল মেসি, রোনালদিনহোরা। এবার তাদের একদল ভক্তের দেখা মিলেছে। যারা মেসি রোনালদিনহোর শেষ বিদায়ের দিন শোকপ্রকাশের বদলে রীতিমতো গানবাজনা করে নাচানাচি করতের চাইছেন। বলা হচ্ছে, ঘানার কফিন পলবিয়ারারদের কথা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে এরই মধ্যে ভাইরাল তারা। এদের কাজই হলো যখন কেউ মারা যায়, তখন শেষকৃত্যের জন্য মৃতব্যক্তির মরদেহ নেয়ার সময় নাচানাচি করা। এতে মৃত ব্যক্তির বিদায়টা আনন্দের হয় বলে মনে করে এ দলটি।
২০০৭ সালে ঘানার আক্রায় নানা ওতাফ্রিজা পলবিয়ারিং নামের এক প্রতিষ্ঠান খোলেন বেঞ্জামিন আইদু। গান ও নাচের মাধ্যমে শেষকৃত্য অনুষ্ঠান আয়োজন করে মৃত ব্যক্তিকে সম্মান জানানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন।
আইদুর দাবি, ‘কিছু মানুষ এখন আর কাঁদতে চায় না। অন্যরা কাঁদে। কিন্তু তাঁরা কাঁদতে চান বা না চান, আমরা সবাইকে খুশি করি। আমরা যা করি, তাতে অন্যরা খুশি হয়।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর বিখ্যাত হয়ে গেছে আইদু ও তাঁর প্রতিষ্ঠান। মিম বানানো হচ্ছে, তাদের ভিডিও দিয়ে করোনার বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা হচ্ছে। এমনকি লেগোও সৃষ্টি হয়েছে তাদের অনুকরণে। ফরাসি ফুটবলবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ফুত মেরকাতো প্রশ্ন রেখেছিল, সুযোগ পেলে কোন ফুটবলারের শেষকৃত্যে নাচতে চান তাঁরা? আইদুর উত্তর দিতে সময় লাগেনি, ‘আমি অবশ্যই দীর্ঘ আয়ু কামনা করি তাঁদের। কিন্তু যদি সুযোগ পাই, স্বপ্ন দেখি রোনালদিনহোর শেষকৃত্যে নাচছি। এর পর ম্যারাডোনা এবং সবশেষে মেসি। রোনালদিনহো হচ্ছেন এমন একজন যিনি সব সময় আমাকে মুগ্ধ করেছেন। এটা হচ্ছে একজন নৃত্যশিল্পীর পক্ষ থেকে আরেক শিল্পীর প্রতি অর্ঘ্য যিনি ফুটবল মাঠেই নাচতেন।’
বার্সেলোনা সমর্থক এই শববাহক ক্লাবের একজন ফুটবলারকে অবশ্য দেখতে পারেন না। ক্লাবের হয়ে লুইস সুয়ারেজের সাফল্য তাঁর সহ্য হয় না। ২০১০ বিশ্বকাপে ঘানার বিপক্ষে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে হাত দিয়ে বল ঠেকিয়ে প্রথমবারের মতো ঘানার বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে যাওয়া আটকে দিয়েছিলেন সুয়ারেজ। পেনাল্টি পেলেও গোল করতে ব্যর্থ হন আসামোয়াহ জিয়ান। সুয়ারেজের কারণে বিশ্বকাপের সেমিতে ওঠার স্বপ্ন শেষ হওয়ার দুঃখ এখনো পোড়ায় আইদুকে, ‘(সুয়ারেজের কারণে বার্সা সাফল্য পেলে) আমি দ্বিধান্বিত থাকি, লজ্জা পাই। খুব খারাপ লাগে।
যখনই এই খেলোয়াড়কে দেখি, যখনই সুয়ারেজ নামটা শুনি আমার মন খারাপ হয়। তার এক হাতের কারণে আমার ঘানা দল বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলতে পারেনি, এটা জঘন্য একটা অনুভূতি।’ সুয়ারেজ নামটা ঘানায় অভিশাপ হিসেবে বিবেচিত হয়। অন্তত আইদু তেমনই বলছেন, ‘আমাদের এখানে সুয়ারেজের নামটার একটা অর্থ আছে। সুয়ারেজ মানে অসম্ভব। যদি কিছু অর্জন করতে চান বা কোথাও যেতে চান কিন্তু সেখানে সুয়ারেজ আছে, তাহলে আপনি সাফল্য পাবেন না। আপনি মন থেকেই যতই চান না কেন, সুয়ারেজ থাকা মানে, আপনি সেটা পাবেন না।’
সেরা নিউজ/আকিব