যুক্তরাজ্যে মুসলিম শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
যুক্তরাজ্যে মুসলিম শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা - Shera TV
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ অপরাহ্ন

যুক্তরাজ্যে মুসলিম শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৯ মে, ২০২০

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
তিনি আইনের শিক্ষার্থী। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন এক দাতব্য সংস্থায়। লকডাউনে আটকা পরিবারের জন্য গিয়েছিলেন বাজার সদাই করতে। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই তাকে গুলি করে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। ১৯ বছর ওই তরুণীর নাম আয়া হাশেম। তিনি থাকেন ইংল্যান্ডের ব্ল্যাকবার্ন শহরে। বলা হচ্ছে, তিনি ‘ভুল সময়ে ভুল জায়গায়’ গিয়েছিলেন তিনি। আর শিকার হন এক নৃশংস হামলার।

বৃটেনের ডেইলি মিরর পত্রিকার এক খবরে বলা হয়েছে, আয়া হাশেমের পরিবার লেবানন থেকে যুক্তরাজ্যে যান।

মাত্রই স্যালফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে চিলড্রেন’স সোসাইটি নামে এক প্রতিষ্ঠানের তরুণ ট্রাস্টি হিসেবে কাজ করছিলেন। ইতিমধ্যেই তার মৃত্যু নিয়ে কাজ শুরু করেছে বৃটিশ গোয়েন্দারা। খুনিকে খুঁজে বের করতে অভিযানও শুরু হয়েছে। পুলিশ একটি ব্যবহৃত গাড়ি খুঁজে পেয়েছে, যেটি রোববার বিকেলের ওই হামলায় ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
বন্ধুরা আয়া হাশেমকে বর্ণনা করেছেন মেধাবী, সুন্দরী ও দয়ালু একজন মানুষ হিসেবে। দাবি জানিয়েছেন বিচারের। পুলিশ বলছে, তার হত্যাকাণ্ডকে এখনই সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না। তবে খুনের উদ্দেশ্য কী ছিল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় আছেন গোয়েন্দারা। এক প্রত্যক্ষদর্শী সান পত্রিকাকে বলেছেন, রাস্তা দিয়ে সাধারণভাবে হাঁটছিলেন হাশেম। অকস্মাৎ গাড়ির জানালা থেকে তার দিকে অস্ত্র তাক করা হয়।

মুসলমানদের পবিত্র মাস রমজানে এই হত্যার ঘটনা ঘটলো। শোকাহত এলাকাবাসী তার স্মরণে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ২৭ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করে। এই অর্থ দিয়ে পশ্চিম আফ্রিকার নাইজারে একটি মসজিদ নির্মান করা হবে। হাশেম বিভিন দাতব্য সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বেচ্ছাসেবী কাজ ও গবেষণার জন্য পুরষ্কারও পেয়েছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক আইনের ওপর ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছে ছিল তার। তার পিতা ইসমাইল হাশেম বলেন, তার মেয়েকে অন্যায়্যভাবে হত্যা করা হয়েছে।

আয়া হাশেম স্থানীয় মাক্কি পরিবারের বন্ধু ছিলেন। ওই পরিবারেরই সন্তান ইউসেফ ১৭ বছর বয়সে ম্যানচেস্টারের হেল বার্নসে উপর্যুপরি ছুরির আঘাতে মৃত্যুবরণ করেন গতবছরের মার্চে। ‘ইউসুফের জন্য ন্যায়বিচার’ শীর্ষক একটি গ্রুপ থেকে টুইটারে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আয়া হাশেম ছিলেন আমাদের পারিবারিক বন্ধু। মুসলিম এই লেবানিজ মেয়ে তার পিতার জন্য বাজারে গিয়েছিলেন পাশের দোকানে। বাসা থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে গাড়ির জানালা থেকে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। কিছুই বলার নেই। কোনো কারণ ছাড়া আরেকটি পরিবারকে ধ্বংস করে দেওয়া হলো।’ গ্রুপের একজন মুখপাত্র মিররকে বলেন, ‘এৎ মারাত্মক সহিংসতা! আরেকটি পরিবার ধ্বংস হলো। আমরা আশা করি তিনি প্রাপ্য সুবিচার যেন পান। আমরা শুধু এটাই জানি যে, তিনি বাসা থেকে দোকানের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন তার পিতার জন্য কিছু কিনতে। আর তখনই তাকে গাড়ি থেকে গুলি করা হয়। তার পরিবার নিশ্চিতভাবে শোকাহত এই মুহূর্তে। আমরা আশা করি তারা যেন ন্যায়বিচার পান, আর বিচার কাঠামো যেন আমাদের মতো তাদেরও হতাশা না করে।’
আয়ার বন্ধু ব্লিন আজিজ বলেন, ‘আমি কীইবা বলতে পারি। আমরা এখনও স্তব্ধ হয়ে আছি। আয়া ছিল এমন এক মেয়ে যে সবার কথা শুনতো, যে-ই সাহায্য চাইতো তাদের জন্য চেষ্টা করতো। আমাদের সবার জন্য থাকতো সে। সে সত্যিকার অর্থেই ফেরেস্তার মতো, যে কিনা মর্ত্যে বসবাস করতো, কিন্তু তাকে নিয়ে নেওয়া হলো। তার এত এত স্বপ্ন ছিল। আন্তর্জাতিক আইনজীবী হতে চেয়েছিল।’
আজিজ আরও বলেন, ‘আমি আয়াকে চিনি আমাদের স্নাতক শুরুর পর থেকেই। আমার একেবারে প্রথম দিককার বন্ধু ছিল। সে ছিল বুদ্ধিমতি, আত্মবিশ্বাসী, অপরের জন্য বিলিয়ে দেওয়া এক মেয়ে।’
ব্ল্যাকবার্নের অ্যাসাইলাম অ্যান্ড রিফিউজি কমিউনিটি (এআরসি) প্রজেক্ট থেকেও হাশেমের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি ফেসবুকে প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে জানায়, ‘অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে জানাচ্ছি যে, আমরা আয়াকে হারিয়েছি। লেবানন থেকে আসা সামার ও ইসমাইলের মেয়ে ছিলেন তিনি।’
২০১৭ সালের মার্চে হাশেম ও আরও ৩ জন মেয়ে জিতেছিলেন চিলড্রেন’স সোসাইটির স্টার অ্যাওয়ার্ড। ইয়ং রিপোর্টার্স শীর্ষক এক ফিল্ম প্রজেক্টের জন্য।
স্থানীয় পুলিশের প্রধান পরিদর্শক জোনাথন হোমস বলেন, ‘এটি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর এক হত্যাকাণ্ড। এক তরুণীর জীবন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তার পরিবারকে জানানো হয়েছে। তারা খুবই ভেঙ্গে পড়েছেন। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। কারা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী, আমরা তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। জড়িতদের খুঁজে পেতে আমরা জনগণের কাছে সাহায্য চাইছি।’ জোনাথন হোমস স্থানীয়দের কাছে ঘটনা সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে পুলিশকে জানাতে বলেছেন। তিনি আরও জানান, ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360