ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
ত্রিপলির ফারনাজ এলাকায় বাস্তুচ্যুতদের একটি হোস্টেলে গতকাল রকেট হামলায় নিহত পাঁচ বছরের শিশুটি বাংলাদেশি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। শিশুটির নাম ওয়াহি জহির মতিন। তার বাবা জহির মতিন ফেনীর সোনাগাজীর থানার বাসিন্দা।
জানা গেছে, জহির দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়ায় বসবাস করছেন এবং শিশুটির মা একজন লিবিয়ান নাগরিক। জহির স্বপরিবারে ত্রিপলির আইনজারা এলাকায় বসবাস করতেন। আইনজারা এলাকায় যুদ্ধ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে তারা বেশ কিছুদিন পূর্বে ফারনাজের হোস্টেলে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল।
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস যে স্থানকে তারা নিরাপদ মনে করে আশ্রয় নিয়েছিল সেখানেই বোমা হামলায় ফুটফুটে শিশুটি নিহত হন। একই ঘটনায় শিশুটির বাবা, মা এবং বোন গুরুতরভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।
লিবিয়া প্রবাসী কল্যাণ ফোরামের পক্ষ থেকে নিষ্পাপ শিশুটির আত্মার শান্তি কামনা করা হয়েছে এবং তারা বাব-মা ও বোনের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়েছে। এ ঘটনায় দেশটির প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যেও ত্রিপলিতে চলমান যুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ত্রিপলি শহরের বিভিন্ন রেসিডেন্সিয়াল এলাকায় এলোপাতাড়ি রকেট ও মিসাইল নিক্ষেপের কারণে বেসামরিক নাগরিকের হতাহতের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে মে মাসের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং ৫০ জনের অধিক গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, জানুয়ারিতে লিবিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বি পক্ষের মধ্যে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির পূর্বের সময়ে বিমান ও ড্রোনযোগে প্রতিপক্ষের অবস্থানের উপর মিসাইল হামলা পরিচালিত হতো। ফলে তখন তুলনামূলক বেসামরিক নাগরিকের ক্ষয়ক্ষতি কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিপক্ষের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেত্র বিশেষে ৮-১০ কি.মি. দূর থেকে রকেট ও মিসাইল নিক্ষেপ করা হচ্ছে। যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে সাধারণ জনগণের বাসাবাড়িতে পড়ছে। ফলে প্রতিনিয়ত বেসামরিক নাগিরিক হতাহত হচ্ছেন।
গত কয়েকদিন আগে ত্রিপলীতে নতুন করে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু শীঘ্রই যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নাই। বরং বর্তমানে যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং এলোপাথাড়ি মিসাইল নিক্ষেপের পরিমাণ আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় ত্রিপলীতে বসবাসরত প্রবাসীরা মারাত্মক নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। বিশেষ করে এলাকার আশপাশে বসবাসরত প্রবাসীদের সতর্ক থাকা জরুরি। এছাড়াও ত্রিপলী শহরের সকল সামরিক স্থাপনা প্রবাসীদের এড়িয়ে চলা সমীচীন হবে।
সেরা নিউজ/আকিব