আদালতের স্থগিতাদেশ ডিঙিয়ে মোবাইলে জি-ফাইভ, প্রযোজকদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
আদালতের স্থগিতাদেশ ডিঙিয়ে মোবাইলে জি-ফাইভ, প্রযোজকদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া - Shera TV
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ অপরাহ্ন

আদালতের স্থগিতাদেশ ডিঙিয়ে মোবাইলে জি-ফাইভ, প্রযোজকদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৯

বিনোদন ডেস্ক:

উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ ডিঙিয়ে মোবাইলে চালু হল জি-ফাইভ অ্যাপ।

দেশের অন্যতম মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি’র মাধ্যমে দেশের বাজারে প্রবেশ করলো হিন্দি তথা সাবকন্টিনেন্টাল কনটেন্ট।

এমন ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে সংগীত সংশ্লিষ্টরা। প্রযোজকরা জানিয়েছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।
গত ৩ জুলাই রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেলে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি তাদের গ্রাহকদের জন্য যুক্ত করেছে ভারতীয় জনপ্রিয় স্ট্রিমিং অ্যাপ ‘জি-ফাইভ’। যার মাধ্যমে রবি গ্রাহকরা ছাড়াও ওয়াইফাই দিয়ে নেট চালানো শ্রোতারা এই অ্যাপটির মাধ্যমে অবাধে উপভোগ করতে পারবেন হিন্দি গানসহ বিদেশের বিভিন্ন নাটক, সিনেমা ও ওয়েব সিরিজ।
সংগীত সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন, দেশের উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ অমান্য করে কীভাবে একটি মুঠোফোন প্রতিষ্ঠান এই কাজটি করতে পারে? তবে কি তারা বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি আর সংগীতকে ধ্বংস করে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে আবারও হিন্দি গানের উৎসব ছড়িয়ে দিতে চান?
এমন উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে এমআইবি’র (মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) পক্ষ থেকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মুঠোফোন প্রতিষ্ঠান রবি আজিয়াটা লিমিটেড বরাবর একটি উকিল নোটিশ পাঠানো হয়। জানতে চাওয়া হয়, কেন উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ অমান্য করে প্রতিষ্ঠানটি ফের উপমহাদেশের গান-নাটক বিপণন করছে তারা।
এমন প্রশ্ন উত্থাপন করে এমআইবি’র সভাপতি ও দেশের অন্যতম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান লেজার ভিশন-এর চেয়ারম্যান একে এম আরিফুর রহমান বলেন, ‘যে সময়টাতে এসে বাংলা গান ও গান সংশ্লিষ্ট ইন্ডাস্ট্রিটা পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পেল, ঠিক সেই সময়ে এসে রবির ওপর ভর করে বাংলাদেশে আবারও হিন্দি কনটেন্ট প্রবেশ করলো! এখন সবার হাতে মোবাইল। সেই মোবাইলে যদি আবার আমরা হিন্দি গান ছড়িয়ে দেই, তাহলে মানুষ বাংলা গান শুনবে কেন? বাংলা গান যদি হিন্দির প্রভাবে আবার ঢাকা পড়ে যায়, তাহলে আর আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি থাকবে না। অথচ খেয়াল করুন, গত পাঁচ বছরের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় নাচের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে বিয়ের উৎসবেও এখন বাংলাদেশের গান বাজে। যেটা বছর পাঁচেক আগেও ছিল স্বপ্নের মতো। তারচেয়ে বড় বিস্ময় রবি এই কাজটির মাধ্যমে আমাদের উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালো! আমরা এর বিচার চাই।’
এদিকে দেশের অন্যতম প্রযোজক (ধ্রুব মিউজিক স্টেশন) ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ধ্রুব গুহ বলেন, ‘সবার আগে দেশকে রক্ষা করতে হবে। দেশের গান ও সংস্কৃতি রক্ষার মাধ্যমেই সেটি সম্ভব। দেশের সংস্কৃতি বিকিয়ে, হিন্দি গান ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে আমাদের রেভিনিউ বাইরে চালান হয়ে যাবে- এটা তো হয় না। বাংলা গান মানে বাংলা ভাষা- এটুকু বোধ আমাদের থাকতে হবে। হিন্দি গান সবসময়ই আমাদের দেশের জন্য বড় থ্রেড। সেজন্যই সেটির কথা বলছি। তাই আগেও আমরা এর প্রতিবাদ করে মাহামান্য আদালতের কাছ থেকে একটা স্থগিতাদেশ পেয়েছি। সেই স্থগিতাদেশের সূত্র ধরেই আমরা আবারও বাংলা গানের বিকাশে রাত-দিন কাজ করে চলেছি। সেটি যদি আবারও ব্যাহত হয়- তবে সেটাকে প্রতিরোধ করা উচিত। ব্যক্তি স্বার্থে নয়, দেশের স্বার্থেই প্রতিটি মানুষের এটার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা উচিত।’
দেশের অন্যতম প্রাচীন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অনুপম রেকর্ডিং। বিশেষ করে দেশীয় চলচ্চিত্র ও গানের সবচেয়ে বড় আর্কাইভ রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটির সার্ভারে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চার দশক ধরে চলচ্চিত্রের গানগুলো আমি কিনেছি। মাঝে লম্বা সময় প্রচণ্ড হতাশার মধ্যে কেটেছে। কারণ, ইনভেস্টমেন্ট করে বসে আছি কিন্তু গান তো শোনানোর সুযোগ পাই না। চারদিকে শুধু হিন্দি সিনেমার গানের দৌরাত্ম্য। অবশেষে সম্প্রতি আবারও নতুন করে শুরু করলাম। বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে গানগুলো বেশ চলছিল। আবারও বিনিয়োগ শুরু করলাম নতুন আশা নিয়ে। এরমধ্যেই আবার হিন্দি গান প্রবেশ করলো। আবারও আমরা যদি হিন্দির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হই, তবে তো নিঃশেষ হয়ে যাবো। নতুন গান আর প্রডিউস করতে পারবো না। অথচ ভাবতে অবাক লাগে, এই বাংলা ভাষার জন্য একমাত্র আমরাই রক্ত দিয়েছি ৫২ সালে। আমার নিজের পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন ৫২ আর ৭১ এর আন্দোলনে। যার সূত্র ধরে এখন রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলার প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। গোটা বিশ্বে আমাদের এই ভাষাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। অথচ সেই আমরাই বার বার পরাজিত হচ্ছি হিন্দি গানের কাছে। আমাদের মমতাময়ী নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি মিনতি করে বলছি, প্লিজ বাংলা গানকে হিন্দির গ্রাস থেকে বাঁচান।’

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360