ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
অনানুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ দেশটির সেনা জেনারেলদের হাতে ফিরছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশটির সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তারা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করায় প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে শুরুর দিকে ঘনিষ্ঠতা থাকলেও বর্তমানে তাতে ফাটল ধরেছে। আর এটি স্পষ্ট হয়েছে করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান পরিবহন সংস্থা, বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব এখন সেনাবাহিনীর হাতে। এসব প্রতিষ্ঠানই দেশটিতে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই তিন প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে গত দুই মাসের মধ্যে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক টানাপড়েন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের দুর্নীতির তদন্তের কারণে দেশটিতে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ার মাঝে বাড়ছে সেনা আধিপত্য। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আসা বিশ্লেষকরা সেনাবাহিনীর এ ধরনের সমর্থন ইমরান খানের দলের জন্যও শঙ্কার কারণ হতে পারে জানাচ্ছেন। দেশটির পার্লামেন্টে ইমরান খানের রাজনৈতিক দলের ৪৬ শতাংশ আসন রয়েছে; ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশটির ছোট ছোট কিছু দলের সঙ্গেও জোট বাঁধতে হয়েছে খানকে।
তবে কিছু দিক থেকে দেখা হলে এটাকে নতুন কিছুই মনে হবে না। পাকিস্তানে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখা হয় দেশটির সেনাবাহিনীকে। স্বাধীনতার সাত দশকের ইতিহাসের প্রায় অধিকাংশ সময়ই সরাসরি পাকিস্তান শাসন করেছে সেনাবাহিনী। ২০১৮ সালে নয়া পাকিস্তান গড়ার অঙ্গীকার করে ইমরান খান ক্ষমতায় এলেও এখনও তা অধরাই রয়ে গেছে।
দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে সাবেক এবং বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের ক্রমবর্ধমান নিয়োগ বেসামরিক নীতি-নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের যে জায়গা ছিল সেগুলো ফুরিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আটলান্টিক কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ ফেলো উজাইর ইউনুস। তিনি বলেন, প্রশাসনে সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ ও গোপনীয় ভূমিকা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পাকিস্তানের অনেকেই দেখেছেন দেশটির করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় সরকারকে ইউনিফর্ম পরিহিত সামরিক বাহিনীর সদস্যরা কীভাবে সহায়তা করছেন। এছাড়া ইমরান খানের বর্তমানে যোগাযোগ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দেশটির সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল অসিম সালিম বাজওয়া। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পের দেখাশোনার দায়িত্ব সাবেক এই সেনা কর্মকর্তার।
সেরা নিউজ/আকিব