নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি ব্যবহার করে বাজেট তৈরি করে না উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি দেশটির উদ্বেগ রয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর অফ-বাজেট অর্থায়ন বা বাজেট বহির্ভূত অর্থায়ন নিয়ে।
বাংলাদেশের আর্থিক স্বচ্ছতায় উল্ল্যেখযোগ্য কোনো উন্নতি হয়নি বলেও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের আর্থিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদন ২০২০-এ এসব তথ্য দেয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার আর্থিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদন ২০২০ প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, এ প্রতিবেদন যখন তৈরি করা হচ্ছিল তখন বাংলাদেশ তার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছে। আর এ বাজেটের সংক্ষিপ্ত বিবরণী অনলাইনসহ খুব সহজে সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয় বাজেট বাস্তবায়নের মাসিক প্রতিবেদন তার ওয়েব সাইটে প্রতিনিয়ত প্রকাশ করলেও ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের পর বাৎসরিক বাজেট বাস্তবায়নের তথ্য ওয়েব সাইটে হালনাগাদ করেনি। বাংলাদেশের ঋণ বোঝা নিয়ে তথ্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। বাজেটে সরকারের প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে আয়সহ সার্বিক আয় ও ব্যয় পরিকল্পনার পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া যায়।
বাজেটে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বরাদ্দ এবং তার থেকে আয়ের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তবে উদ্বেগ তখনই সৃষ্টি হয়, যখন এর কিছু প্রতিষ্ঠানের অফ-বাজেট অর্থায়ন করা হয়। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এ প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আর্থিক নিরীক্ষার বিবরণী নিয়মিত জনসাধারণের কাছে তুলে ধরে না। বাজেটে থাকা তথ্যগুলো সাধারণত নির্ভরযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হলেও বাজেট আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় না। এছাড়া বাংলাদেশের সর্বচ্চো নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারের হিসেব-নিকেশ পর্যালোচনা করে। তবে তাদের প্রতিবেদনও যথা সময়ে জনসাধারণের কাছে তুলে ধরা হয় না।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনে সুনির্দিষ্ট আইন, নিয়মকানুন এবং অন্যান্য নথি রয়েছে। যার ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে চুক্তি বা লাইসেন্স দিয়ে থাকে। সরকারকে এসব প্রচলিত আইন ও নিয়মগুলোকে ব্যবহারও করতে দেখা যায়। তবে প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনে চুক্তি নিয়ে মৌলিক তথ্যগুলো ধারাবাহিকভাবে জনসাধারণের কাছে দেয়া হয় না।
বাংলাদেশের আর্থিক স্বচ্ছতা উন্নয়নের প্রতিবেদনে পাঁচটি পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আর্থিক স্বচ্ছতা উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরীক্ষা প্রতিবেদন জনসাধারণের জন্য নিশ্চিত করতে হবে। অফ-বাজেট বরাদ্দগুলো দূর করতে হবে। অথবা তার হিসেবগুলো নিরীক্ষাসহ জনসাধারণের সামনে দিতে হবে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত নীতি অনুযায়ী বাজেট তৈরি করতে হবে। সর্বচ্চো নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যথাসময়ে নিরীক্ষা প্রতিবেদন জনসাধারণের সামনে তুলে ধরতে হবে। আর প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনে চুক্তি নিয়ে মৌলিক তথ্যগুলো নিয়মিতভাবে জনসাধারণের সামনে দিতে হবে।
সেরা নিউজ/আকিব