বিনোদন ডেস্ক:
সুশান্ত সিং রাজপুতের অকাল মৃত্যুর পর ডিপ্রেশন নিয়ে মুখ খুলেছেন অনেকেই। সরব হয়েছেন স্বজনপোষন নীতি নিয়ে। উঠে এসেছে বেশ কিছু তাবড় ব্যক্তিত্বের নাম। তবে অন্দরের চিত্রটা সর্বত্রই এক। সেই কথাই অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র তুলে ধরেছেন তাঁর নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে।
তিনি বলেছেন, ইন্ডাস্ট্রিতে সুশান্তের মতই তাঁর কোনও গডফাদার ছিল না । ফলে কাজ পেতে এবং কাজ টিকিয়ে রাখতে তাঁকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তাঁর কথায় ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে সবসময়ই পাওয়ার গেম চলে। সেই সঙ্গে রয়েছে ক্ষমতার আস্ফালন।
অবশ্য সেই ক্ষমতা কে কীভাবে ব্যবহার করবে তা নিতান্তই ব্যক্তিগত। শ্রীলেখা বলেছেন, ১৯৯৭-৯৮ যখন তিনি অভিনয় করতে আসেন তখন জুটি হিসেবে হিট প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা। কোনওদিনই মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেলাম না। সবদিনই নায়িকার বোন, দিদি হয়েই থাকতে হল। এমনকী জুটিও তৈরি করতে পারলাম না।
তাঁর কথায়, আসলে আমি ক্যামেরার সামনে ভালো নাটক করতে পারি। কিন্তু ক্যামেরাটা বন্ধ হয়ে গেলে অভিনয়টা আর করতে পারি না। ফলে প্রথম দিন থেকেই আমি এখানে ঠিক খাপ খাওয়াতে পারলাম না। কিন্তু মুখে বলা হত আমি অভিনয়টা ভালো পারি। হিরোইন হওয়ার যোগ্য। কিন্তু সব ঠিক হয়ে যাওয়ার পরই কীভাবে যেন বাদ পড়ে যেতাম…আজ আমার বাড়ির নীচে দামি গাড়ি সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে না।
কিন্তু আমার রাতের ঘুমটা তাঁদের থেকে অনেক ভালো হয়। নিজের শর্তে খুব ভালো আছি। শ্রীলেখা স্পষ্টভাবে বলেছেন, হ্যাঁ, আমি ডিপ্রেশনের রোগী। তবে হারিনি। আমার অভিমান খুব ব্যক্তিগত। আমি কাজ পাওয়ার জন্য প্রেম করতে চাইনি। কোনও ছলানিপনা নেই। আমি সৎ, আমি যখন থাকব না তখন যাতে আমার সততাটুকু থেকে যায় সেই চেষ্টাই করেছি। আমি কাঁধ চাই না। আমার কাধ খুব শক্ত। আমার কাঁধেই অনেকে মাথা রাখতে পারে।
মিডিয়া নামক সার্কাসে রুচি নেই শ্রীলেখার। বিশ্বাস করেন সব কিছু টিআরপির নিরিখে হয় না। শুধুমাত্র কাজের বিনিময়ে শ্রীলেখা মিত্র কোনও দিন কারোর সঙ্গে প্রেম করেনি, করবে না। শ্রীলেখা অনুরোধ করেছেন, তাঁর মৃত্যুর পর সাদা পোশাকে কেউ যেন শোক দেখাতে না আসে। কারণ মৃত্যু তিনি তাঁর কাছের লোকদের সঙ্গেই সেলিব্রেট করতে চান। ভেবেছিলেন এই সোশ্যাল মিডিয়া, এই তঞ্চকতার জগত থেকে অনেক দূরে থাকবেন।
কিন্তু সুশান্তের মৃত্যু তাঁকে গভীর ভাবে নাড়া দিয়েছে। তাই এত বছর বাদে মনের কথা তিনি খুলে বললেন। ব্যক্তি বিশেষে ইন্ডাস্ট্রির তাবড় ব্যক্তিত্বদের নাম তিনি নিয়েছেন। কিন্তু কেউ ব্যক্তিগত আঘাত পেলে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী নন এমনটাও জানিয়ে দিয়েছেন। ফ্ল্যাটবাড়ি ছেড়ে শহরের উপকন্ঠে কোথাও একটা বাড়ি বানিয়ে থাকতে চান পোষ্যদের সঙ্গে।
এমনটাই তাঁর আশা। নিজেকে ঝাঁকিয়ে বলেছেন, আমি স্ট্রং, আমাকে ভালো থাকতেই হবে..লড়াইয়ের ময়দানে হেরে যেতে চাই না। আবারও একটা সুশান্ত সিং এর মৃত্যুকে উদাহরণ হিসেবে টেনে যেন এই সত্যগুলি বলতে না হয় সেদিকে নজর দেওয়া হোক…ইন্ডাস্ট্রির কাছে আরজি শ্রীলেখার। তাঁর মতে, নেপোটিজম ইন্ডাস্ট্রিতে আছে, ছিল থাকবে।
সেরা নিউজ/আকিব