আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বহুল ব্যবহৃত নিম পাতার ঔষধি গুণের শেষ নেই। এই নিম পাতা থেকেই রোগের উপশম, ত্বকের যত্নসহ পাওয়া যাবে চুলের উপকারও। নিম পাতার ব্যবহারে চুলের একটি উপকার নয়, একসাথে পাওয়া যাবে বেশ কয়েকটি চমৎকার উপকারিতা। জেনে নিন এক নিম পাতা চুলের তিনটি ভিন্ন সমস্যা দূর করতে কীভাবে ব্যবহার করতে হবে।
খুশকি তাড়াতে নিম পাতার ব্যবহার
চুল নষ্ট হওয়ার এবং অতিরিক্ত চুল পড়ার অন্যতম বড় কারণ হল খুশকির সমস্যা। এই সমস্যাটি যতটা সম্ভব কমিয়ে আনতে পারলে ও দ্রুত তাড়াতে পারলে চুলের বেশিরভাগ সমস্যার সমাধান করে ফেলা সম্ভব হয়। নিম পাতায় থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাংগাল ধর্ম মাথার ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী।
ব্যবহারের জন্য নিম পাতা বাটার সাথে সমপরিমাণ টকদই মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই পেস্টটি মাথার ত্বকসহ চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে ২০-২৫ মিনিট রেখে এরপর ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রতি সপ্তাহে একবার এই নিয়মে নিম পাতা ব্যবহারে উপকার পাওয়া যাবে।
উকুন তাড়াতে নিম পাতার ব্যবহার
উকুনের সমস্যাটি যতটা বিরক্তিকর, ঠিক ততটাই বিব্রতকরো বটে। মাথার ত্বকের থেকে রক্ত শোষণ করে উকুন বেঁচে থাকে বলে মাথার ত্বকে ঘায়ের সমস্যা দেখা দেয়। সেই সাথে প্রবলভাবে চুলকানির সমস্যা তো রয়েছেই। উকুননাশক শ্যাম্পু ব্যবহারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপকার পাওয়া যায় না এবং পুনরায় উকুন ফিরে আসে। এমন সমস্যায় নিম পাতার ব্যবহার দারুণ কাজে আসবে।
উকুনের সমস্যা দূর করতে আধা কাপ নারিকেল তেলে ১৫-২০টি নিম পাতা জ্বাল দিয়ে নিম তেল তৈরি করতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে নিম তেল মাথার ত্বকে ও চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে ঘুমিয়ে যেতে হবে এবং পরদিন সকালে চুল শ্যাম্পু করে নিতে হবে। প্রতি ২-৩ দিন পরপর এই নিয়মে নিম তেলের ব্যবহারে উকুন পুরোপুরি দূর হয়ে যাবে।
চুলের বৃদ্ধিতে নিম পাতার ব্যবহার
অনেকের চুলের বৃদ্ধির হার স্বাভাবিকের চাইতে বেশ অনেকটা স্লথ হয়ে থাকে। চুলজনিত অন্য কোন সমস্যা না থাকলেও, চুল সহজে বৃদ্ধি পেতে চায় না। এক্ষেত্রে সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি চুলের যত্নে সঠিক ও প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহারের ভূমিকা অনেকখানি। চুলের ত্বকের মরা চামড়া, বায়ু দূষণ, রোদের ক্ষতিকর আলোর প্রভাবেও চুলের বৃদ্ধি কমে যায়। সেক্ষেত্রে নিম পাতার ব্যবহার অনন্য উপকারিতা এনে দেবে।
এর জন্য আধা কাপ নারিকেল তেল, এক চা চামচ মেথি, এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল এবং ১৫-২০টি নিম পাতা একসাথে জ্বাল দিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। তৈরিকৃত তেলটি রাতে চুলে ম্যাসাজ করে পরদিন সকালে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। সপ্তাহে দুই বার এই তেল ব্যবহারে ২ মাসের মাঝে লক্ষণীয় পরিবর্তন পাওয়া যাবে।
সেরা নিউজ/আকিব