ব্যারিস্টার সুমনের একাডেমিতে ফুটবল খেলতে ৪০০ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
ব্যারিস্টার সুমনের একাডেমিতে ফুটবল খেলতে ৪০০ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি - Shera TV
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন

ব্যারিস্টার সুমনের একাডেমিতে ফুটবল খেলতে ৪০০ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০

স্পোর্টস ডেস্ক:

ছোট বেলা থেকে ভালো ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন রায়হানের। পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যার কারণে কখনও দিনমজুর আবার কখনও শ্রমিকের কাজ করে চলতে থাকে তার সংগ্রামী জীবন। তবে খেলার নেশায় মাঝে মাঝে বিভিন্ন জেলায় সাইকেল চালিয়েই খেলতে যেত রায়হান। এবার ফুটবলের নেশায় অবিশ্বাস্য চার দিনে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার পথ সাইকেল চালিয়ে পরিবারের কাউকে না বলে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ব্যারিস্টার সুমনের ফুটবল একাডেমিতে খেলতে গিয়েছে সে। অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনাটি সত্য। এবিষয়ে ব্যারিস্টার সুমন তার নিজস্ব ফেসবুক পেজে লাইভে তার পরিচয় প্রকাশ করেছেন।

রায়হান যশোরের বাঘারপাড়ার রায়পুর ইউনিয়নের ভদ্রডাঙ্গা গ্রামের আব্দুর সাত্তারের ছেলে। তার বয়স ১৫ বছর। সে সিলুমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পাশ করে বাঘারপাড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রায়হান এর আগেও যশোর, নড়াইল, মাগুরা, সাতক্ষীরাসহ বেশ কয়েকটি জেলায় সাইকেল চালিয়ে ফুটবল খেলতে গিয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি মনোযোগী সে। তবে ফুটবল খেলা সবচেয়ে বেশি পছন্দ তার। স্কুলের টিফিনের পর প্রতিদিন বাড়ি এসে সাইকেল চালিয়ে যশোর সদরের হামিদপুর এলাকার শামসুল হুদা ফুটবল একাডেমিতে প্রশিক্ষণ করতে যায় রায়হান। উপজেলাভিত্তিক স্কুলের ফুটবল খেলায় অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করে কয়েকবার বিভাগীয় পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। টাকা পয়সার দরকার হলে শ্রমিকের কাজ করে সে। বাঘারপাড়া-কালীগঞ্জ সড়কের সংস্কার কাজে কিছুদিন আগে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছে। হবিগঞ্জ যাওয়ার দু’দিন আগে স্থানীয় এক কাঁকরোল খেতে শ্রমিকের কাজ করেছে। সেই টাকা নিয়েই সে ব্যারিস্টার সুমনের ক্লাবের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল বলে ধারণা করা যাচ্ছে।

রায়হানের মামা ফয়সাল আহমেদ জানিয়েছেন, গত ২০ জুন থেকে রায়হানের মা ও বাবা তার বোনকে নিয়ে হাসপাতালে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাউকে না বলে গত ২৩ জুন বাড়ি থেকে চলে যায়। খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, সে (রায়হান) বলে আমাকে খোঁজাখুঁজির দরকার নেই মামা, আমি ভালো আছি বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যারিস্টার সুমনের পেজে তার সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রকাশ করা হয়। সেখান থেকে জানতে পারি রায়হান হবিগঞ্জে ব্যারিস্টার সুমনের ফুটবল একাডেমিতে খেলছে। বর্তমান সে ওইখানে থেকে খেলাধুলা করছে।

রায়হানের পিতা আব্দুর সাত্তার বলেন, রায়হান ছোটবেলা থেকেই ফুটবল খেলতে খুব ভালোবাসে। রায়হানকে ভালো ফুটবলার বানানোর সামর্থ্য আমার নাই। এখন যদি সে নিজের প্রতিভা দিয়ে এগিয়ে যেতে পারে, তাতেই আমার শান্তি। রায়হানের মামার মাধ্যমে জানতে পেরেছি সে ব্যারিস্টার সুমনের ফুটবল ক্লাবে খেলছে।

এ বিষয়ে রায়হান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যারিস্টার সুমনের ফুটবল একাডেমি খোলার একটি পোস্ট দেখতে পাই। সেখান থেকে স্বপ্ন তার একাডেমিতে খেলার। বাড়িতে বললে এখানে আসতে দেবে না, তাই কাউকে না বলেই চলে এসেছি। স্বপ্ন আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। আমি একজন সৎ দক্ষ ফুটবল খেলোয়াড় হতে চাই। সাইকেলে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আর্থিক সমস্যার জন্য সাইকেল চালিয়ে এসেছি। হবিগঞ্জ আসতে চারদিন সময় লেগেছে। রাত দিন সমান করে সাইকেল চালিয়েছি। বাড়ি থেকে শ্রমিকের কাজ করে ৬০০ টাকা সাথে নিয়ে এসেছি। সুমন স্যার খুবই ভালো একজন মানুষ। আমার মতো অনেক ফুটবল খেলোয়াড় এখানে খেলতে এসেছে। তদের সকলের দায়িত্ব তিনি নিয়েছেন।

মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ‘ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমি’র পরিচালক সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, রায়হান যশোর থেকে সাইকেল চালিয়ে আমার একাডেমিতে খেলতে আসায় আমি অনেক কৃতজ্ঞ। বিষয়টি নিয়ে আমরা আর্শ্চয্য হয়েছি। শুনেছি রায়হান দরিদ্র ঘরের সন্তান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হবিগঞ্জের লোকজন সবসময়ই অতিথিপরায়ণ। আমি ওর থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। যে স্বপ্ন নিয়ে রায়হান এখানে আসছে, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। আমাদের এখন প্রশিক্ষণ চলছে। সে অনেকের তুলনায় ভালো খেলছে। এখন যদি সে ভালো পারফর্ম করতে পারে তাহলে সে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

 

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360