করোনা পরিস্থিতির কারণে চলতি বছর সীমিত মানুষের অংশগ্রহণে হজের আয়োজন হচ্ছে। শুধুমাত্র সৌদি আরবে বসবাসকারী বিভিন্ন দেশের অধিবাসী ও দেশটির নাগরিকরা হজপালনের সুযোগ পেয়েছেন। সব মিলিয়ে হজযাত্রীর সংখ্যা দশ হাজার। এই সীমিত আয়োজনের হজেও সৌদি আরব ছাড়া থাকছে ১৬০ দেশের নাগরিকদের অংশগ্রহণ। সৌদি আরবের হজ মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
আগেই বলা হয়েছিল, মোট হজযাত্রীর ৭০ শতাংশ থাকবেন সৌদি আরবে অবস্থান করা বিভিন্ন দেশের প্রবাসী মুসলিমরা। অনলাইনে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া শেষে আবেদন করে এবারের হজে ১৬০ দেশের নাগরিকরা হজের অনুমতি পেয়েছেন। তবে কোন দেশের কতজন সেটা বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। হজের অনুমতি পাওয়া ব্যক্তিদের শিডিউল অনুযায়ী অনুমতিপত্র সঙ্গে নিয়ে হজের রীতিনীতি পালন করতে হবে।
এবারের হজে হাজিরা মিনার তাঁবুতে থাকবেন না। মিনার নির্দিষ্ট ভবনগুলোতে তারা অবস্থান করবেন। এই ভবনগুলো জামারাত থেকে মুজদালিফা যাওয়ার পথে অবস্থিত। ভবনের খুব কাছে মসজিদে খাইফ ও কংকর মারার স্থান। এখান থেকে আরাফা ও মুজদালিফা যাওয়া যায় খুব সহজে।
আগেই বলা হয়েছে, এবারের হজে কাবা শরিফ স্পর্শ ও হাজরে আসওয়াদে চুমো দেওয়া যাবে না। নির্দিষ্ট দূরত্বে থেকে তাওয়াফ ও সায়ী সম্পন্ন করতে হবে। তাওয়াফের সময দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে হাজিদের মধ্যে। নামাজের জামাতেও দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াতে হবে। সর্বাবস্থায় হজযাত্রীদের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
এদিকে হাজি ব্যতীত কেউ হজের স্থানগুলোতে প্রবেশ করলে বিশাল অংকের জরিমানা দিতে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে সৌদি হজ মন্ত্রণালয়।
ঘোষণায় বলা হয়, হজের অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যতীত অন্য কেউ যদি হজের পবিত্র স্থানগুলোতে প্রবেশ করেন, তবে তাকে ১০ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হবে। যদি দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করা হয়, তবে তার শাস্তি হবে দ্বিগুণ। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে বিশেষ অনুমতি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
হজ উপলক্ষ্যে ১৯ জুলাই (২৮ জিলকদ) থেকে ২ আগস্ট (১২ জিলহজ) পর্যন্ত হজের অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যতীত অন্যকারো মক্কার মিনা, মোজদালিফা ও আরাফায় প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
চলতি বছর হজের অনুমতি পাওয়া ১০ হাজার হাজিকে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে শিডিউল অনুযায়ী হজের রীতিনীতিগুলো পালন করার সুযোগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া হজের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। হাজিদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী কর্তৃপক্ষ প্রদান করবেন। হজযাত্রীরা বাইরে থেকে কোনোপ্রকার খাবার বা পানীয় নিয়ে হজের রীতিনীতি পালন করতে পারবেন না। সব হাজির জন্য খাবার ও পানি কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করবে।
অন্যদিকে সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, করোনা সংক্রমণরোধে নেওয়া সতর্কতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা যদি কেউ অমান্য করে তবে তাকে মুখোমুখি হতে হবে। আর শাস্তির বিধান অনুমোদন দিয়েছে সৌদি সরকার।