সেরা নিউজ ডেস্ক:
গ্রেপ্তারের পর ৪০ ঘণ্টায়ও দোষ স্বীকার করেননি টাইরেস ডি হ্যাসপিল। তদন্তকারীদের প্রশ্নের মুখে তেমন কিছুই বলছেন না তিনি। এ কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া প্রলম্বিত হতে পারে। নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের (এনওয়াইপিডি) সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে এই তথ্য। বাংলাদেশি-আমেরিকান প্রযুক্তি-উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহ হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত তার দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত সহচর টাইরেস ডেভোন হ্যাসপিল গ্রেপ্তারের পর আদালাতের নির্দেশে এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাকে একটি ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে।
গত শুক্রবার মধ্যরাতের পর অভিযুক্ত টাইরেসকে ম্যানহাটন ক্রিমিনাল কোর্টের ভার্চুয়াল শুনানীতে উপস্থাপন করা হয়। দুই পক্ষের শুনানী শেষে আদালতে তাকে জামিনের কোনো সুযোগ না দিয়ে বন্দী রাখার নির্দেশ দেন।
ওই শুনানীতে টাইরেসের এটর্নি স্যাম রবার্ট বলেন, এই মামলায় পুলিশ ও প্রসিকিউশন মিলে অভিযোগের যে বর্ণনা উপস্থাপন করেছে বাস্তবে আরও অনেক কিছুই এখনও সামনে আসেনি। অনেক বর্ণনাই এখনও বাকি রয়েছে। তিনি বলেন, এই মামলায় প্রকৃত সত্য উদঘাটনের ব্যাপারে আমরা একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে। মামলাটি অনেক দীর্ঘ এবং জটিল হতে পারে। আমরা জনসাধারণকে একটি খোলা মন নিয়ে বিষয়টি দেখার আহবান জানাবো।
এর আগে ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের সহকারী এটর্নি লিন্ডা ফোর্ড আদালে বলেন, অভিযুক্ত হ্যাসপিল হোম ডিপোট নামের স্টোর থেকে যে ইলেক্ট্রিক করাত ও অন্যান্য ক্লিনিং সরঞ্জাম কিনেছিল সেগুলো নিহত ফাহিম সালেহ’র এপার্টমেন্টে পাওয়া গেছে। অপরদিকে নিহত ফাহিম সালেহ’র এপার্টমেন্টে সিসি ক্যামেরার ভিডিওচিত্র অনুযায়ী সন্দেহভাজন খুনীর পরনে যেসব পোশাক ছিল সেগুলো টাইরেস হ্যাসপিলের ব্রুকলিন উডরাফ এভিনিউ’র বাসায় পাওয়া গেছে এছাড়া এনওয়াইপিডি’র তদন্তকারীরা প্রযুক্তির সাহায্যে নিশ্চিত প্রমাণ পেয়েছেন যে, টাইরেস হ্যাসপিলই পরিকল্পিতভাবে ফাহিম সালেহকে হত্যা করেছেন। অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগে এবং পরের ভিডিও সার্ভিলেন্স থেকে অন্তত দু’জন স্বাক্ষী হ্যাসপিলকে শনাক্ত করতে পেরেছেন।
অবশ্য তিনি এ কথাও বলেন যে, প্রসিকিউশন এখনও এই হত্যাকান্ডের মোটিভ সম্পর্কে চুড়ান্তভাবে নিশ্চিত নয়। ধারণা করা হচ্ছে যে, আর্থিক এবং তাদের ব্যাক্তিগত বিষয়াদির সূত্রেই ঘটে থাকতে পারে এই নৃশংস হত্যাকান্ড।
এদিকে শনিবার নিউ ইয়র্কের আই উটনেস নামের একটি লোকাল টিভি চ্যানেলে প্রচারিত এক খবরে বলা হয়েছে যে, এদিন ফাহিম সালেহ’র পরিবার আরও একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে পরিবারটি তাদের ব্যাক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি সন্মান দেখানোর জন্য আবারও মিডিয়ার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেছে, এরইমধ্যে আমাদের অজান্তে অনেক বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ হয়ে গেছে। বিবৃতিতে যারা ফাহিমের প্রতি ভালবাসা ও সমর্থন দেখিয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানানো হয়। এছাড়া ফাহিমের দাফনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন এবং চলতি সপ্তাহান্তে পারিবারিক পরিসরে দোয়া অনুষ্ঠিত হবে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়। এর আগে গত বুধবার ফাহিমের পরিবার থেকে আরেকটি বিবৃতি দেয়া হয়েছিল নিউ ইয়র্কের একটি মূলধারার লোকাল টিভি চ্যানেলকে।
নিউ ইয়র্কে দায়িত্বরত বাংলাদেশি মিডিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কিংবা এখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটি মিডিয়াগুলোর সঙ্গে ফাহিম সালেহ’র পরিবারের কোনো ধরনের সংযোগের খবর শনিবার পর্যন্ত মেলেনি।
এদিকে শনিবারও ম্যানহাটনের লোয়ার ইস্টসাইডে অবস্থিত ফাহিমের এপার্টমেন্ট ভবনের সামনে অনেককেই তার প্রতি ভালবাসা জানিয়ে ফুলের স্তবক রেখে গেছেন। গত কয়েকদিন ধরেই তার বন্ধু ও শুভাকাঙ্খীরা শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানিয়ে ভবনটির সামনে ফুল রেখে যাচ্ছেন।
সেরা নিউজ/আকিব