সেরা টেক ডেস্ক:
বিশ্বের ১ নম্বর ধনী জেফ বেজোস এক দিনের ব্যবধানেই আরও ধনী হয়ে উঠলেন। গত সোমবার তার সম্পত্তি এক দিনেই বাড়ে ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা বা প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার। পৃথিবীর ইতিহাসে এক দিনে এক ব্যক্তির সম্পদ বৃদ্ধির হিসাবে এটি একটি রেকর্ড। প্রযুক্তি ও ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান জায়ান্টের ব্যক্তিগত সম্পত্তিই এখন আমেরিকার জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান নাইকি, এক্সন ও ম্যাকডনাল্ডের প্রাতিষ্ঠানিক সম্পত্তির চেয়েও বেশি! এ খবর দিয়েছে লন্ডনের দ্য টাইমস পত্রিকা।
খবরে বলা হয়, ব্লুমবার্গের বিলিয়নিয়ার্স ইন্ডেক্স-এর হিসাব মতে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি যেখানে পঙ্গুপ্রায়, সেখানে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের ব্যবসা হু হু করে বাড়ছে। পুরো প্রতিষ্ঠানে জেফ বেজোসের শেয়ার রয়েছে ১১ শতাংশ। এই বছর শুরুর পর তার সম্পত্তির পরিমাণ ৭৪০০ কোটি ডলার বা ৬ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা বেড়ে ১৮৯৩০ কোটি ডলার বা ১৬ লাখ সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়ায়। অর্থাৎ, তার ব্যক্তিগত সম্পত্তি কাতারের মতো ধনী দেশের রাষ্ট্রীয় জিডিপির (১৮৩০০ কোটি ডলার) চেয়েও বেশি।
জেফ বেজোসের পাশাপাশি তার সাবেক স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি বেজোসের সম্পত্তি বেড়েছে ৪৬০০ কোটি ডলার। জেফ বেজোসের সাথে বিচ্ছেদের পর বিপুল সম্পত্তির মালিক হন তিনি।
বর্তমানে তিনি বিশ্বের ১৩ তম ধনী ব্যক্তি। বিচ্ছেদের অংশ হিসেবে জেফ বেজোস তার সদ্য সাবেক স্ত্রীকে অ্যামাজনে থাকা নিজের শেয়ার থেকে ১.৯৭ কোটি শেয়ার দিয়েছিলেন।
জেফ বেজোসের পাশাপাশি সোমবার আরেক প্রযুক্তি ব্যবসায়ি এলন মাস্কের সম্পদ বেড়েছে ব্যাপকভাবে। তার কার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দামও বেড়েছে ব্যাপকভাবে।
এছাড়াও এই মহামারির সময় প্রযুক্তি জায়ান্টরা লাভবান হয়েছে ব্যাপকভাবে। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ঘরে তুলেছেন বাড়তি ১৫০০ কোটি ডলার। তার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ৯৩০০ কোটি ডলার।
এই মহামারিতে লকডাউনের মধ্যে হোম ডেলিভারির চাহিদা বেড়ে যায় ব্যাপক। ফলে ব্যাপকভাবে লাভবান হয় অ্যামাজন।
১৯৯৬ সালে শুরু করা এই কোম্পানি প্রথমে অনলাইনে বই বিক্রি করতে শুরু করে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের অনলাইন বিকিকিনির অর্ধেক ও বৃটেনের ৪০ শতাংশ অ্যামাজনের দখলে। এছাড়া বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ক্লাউড কম্পিউটিং প্ল্যাটফর্মও অ্যামাজনের। ২০২০ সালে অ্যামাজনের মূল্য অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১.৫ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ ৫০ হাজার বিলিয়ন বা ১ কোটি ৫০ লাখ কোটি ডলারে দাঁড়ায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যানজেলেসের সবচেয়ে দামি ঘর, ওয়াশিংটনের সবচেয়ে বড় ঘর ও ম্যানহ্যাটনে বিরাট এক ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। টেক্সাসে তার রয়েছে ৩ লাখ একরের একটি র্যাঞ্চ। সিয়াটলে রয়েছে তার দু’টি বাড়ি।
মহাবিশ্বে অনুসন্ধানের পেছনেও তিনি মনোনিবেশ করেছেন। প্রতিষ্ঠা করেছেন ব্লু অরিজিন নামে একটি কোম্পানি, যার প্রধান নির্বাহী তিনি। এই কোম্পানি বর্তমানে পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেট নির্মাণ করতে চায়। ফেব্রুয়ারিতে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নিজের ১০০০ কোটি ডলার সম্পত্তি দান করার প্রতিশ্রুতি দেন।
জেফ বেজোসের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধনী হলেন মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। তার রয়েছে প্রায় ১১৮০০ কোটি ডলারের সম্পদ। এরপরে রয়েছেন ফরাসি বিলিয়নিয়ার বার্নার্ড আরনল্ট, লুইজ ভুইটন ও মার্ক জাকারবার্গ।
সেরা নিউজ/আকিব