নিজস্ব প্রতিবেদক:
বেঈমান-মীরজাফররা বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বেঈমান-মীরজাফররা বেশি দিন ক্ষমতায় থাকতে পারে না। মীরজাফরও তিন মাসের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, খুনি মোশতাকও পারেনি।
রোববার বিকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওই সময়ের পরিস্থিতির বর্ণনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়। স্বাধীনতাবিরোধী, একাত্তরের গণহত্যাকারীদের মদদদানকারী, রাজাকার-আলবদর-আলশামসদের জিয়াউর রহমান প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, উপদেষ্টা বানায়, রাজনীতি করার সুযোগ দেয় এবং নিষিদ্ধ থাকা ভোটের অধিকারও তাদের ফিরিয়ে দিয়েছিল এই জিয়াউর রহমান। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ ভিন্নখাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সারাটা জীবন এদেশের মানুষের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে গেছেন। মানুষকে শোষণের হাত রক্ষা করে তাদের মুখে হাসি ফোটানোই ছিল জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য।
জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেই বৃটিশ এমপি টমাস উইলিয়ামের নেতৃত্বে গঠিত আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটিকে বাংলাদেশে আসতে ভিসা দেয়া হয়নি উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৮০ সালের ১৬ আগস্ট লন্ডনে আমরা শোক সভা করি। সেখানে বৃটিশ এমপি টমাস উইলিয়ামকে প্রধান করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তের জন্য একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন করা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, টমাস উইলিয়ামকে তদন্তের জন্য ঢাকায় পাঠানোর। কিন্তু তখন রাষ্ট্রপতি পদে থাকা জিয়াউর রহমান টমাস উইলিয়ামকে ঢাকায় আসতে ভিসা দেয়নি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেই ভীত হয়ে ওই তদন্ত কমিশনকে ঢাকায় আসার ভিসা দেয়নি এই জিয়া।
দীর্ঘ ছয় বছর রিফিউজি হিসেবে দেশের বাইরে থাকার পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরলে তাকে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে জিয়াউর রহমান ঢুকতে দেয়নি উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, আমাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করার পর যখন দেশে ফিরে আসি, তখন আমাকে ৩২ নম্বরের বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয়নি। রাস্তায় বসে বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া-মোনাজাত করেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রান্ত থেকে আলোচনায় অংশ নেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ’৭৫-এর দুঃসময়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফি ও উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।
কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপের সঞ্চালনায় আলোচনা সভার শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্ট শহীদ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নিরাবতা পালন করা হয়।
সেরা নিউজ/আকিব