অনলাইন ডেস্ক:
জার্মানিতে ক্যাথলিক চার্চের যাজকদের বিরুদ্ধে এক হাজারেরও বেশি শিশু ও কিশোরকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। চার্চের বিভিন্ন অংশের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে।
একটি জরিপে দেখা গেছে, শিশু-কিশোর থাকা অবস্থায় যাজকদের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এমন অন্তত এক হাজার ৪১২টি অভিযোগ জমা পড়েছে চার্চের বিভিন্ন সংগঠনের কাছে।
জার্মানির ধর্মীয় নেতাদের সংগঠন ডিওকে সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রকাশ করেছে। গবেষণায় নেতারা এই ইস্যুকে সঠিকভাবে ‘মোকাবিলা করতে ব্যর্থতার’ কথাও স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে ক্যাথলিকদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপও একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যাজকদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ গোপন রাখার বিধানও গত বছর বাতিল করেন বর্তমান পোপ ফ্রান্সিস। কিন্তু জার্মান চার্চের একটি অংশ এতদিন এ নিয়ে নীরব ভূমিকাই পালন করে এসেছে।
ডিওকে জানিয়েছে, অন্তত ৬৫৪ জন যাজক, যাজিকা এবং চার্চ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এসেছে এসব অভিযোগ। অভিযোগকারীদের ৮০ শতাংশই পুরুষ, বাকি ২০ শতাংশ নারী। এদের ৮০ শতাংশই মারা গেছেন আর ৩৭ জন চার্চের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।
জার্মান চার্চের ৩৯২টি অর্ডারের মধ্যে ২৯১টি জরিপে অংশ নিয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের এক-তৃতীয়াংশই জানিয়েছে, তারা এমন যৌন হয়রানির অভিযোগ পেয়েছেন। এসব অভিযোগের কিছু কিছু ১৯৫০ এবং ৬০ এর দশকের। তখন স্থানীয় অনেক স্কুল এংব বোর্ডিং স্কুল পরিচালিত হতো যাজক ও যাজিকাদের অধীনে।
ডিওকে আরও জানিয়েছে, জার্মানির চার্চের সদস্যদের ৭৫ শতাংশই নারী হলেও বেশিরভাগ যৌন হয়রানির অভিযোগ এসেছে পুরুষ যাজকদের বিরুদ্ধেই। গবেষণা ও জরিপে যৌন হয়রানির যেসব ঘটনার উঠে এসেছে, বাস্তবে এ সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি।
চার্চের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে জার্মান সমাজের বিভিন্ন অংশ। কিন্তু ক্যাথলিক সংগঠনগুলো বরাবরাই এর বিরোধিতা করায় তাদের সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে।
ডিওকে চেয়ারওম্যান কাটারিনা ক্লুইটমান বলেন, এই ধরনের কর্মকাণ্ড অভিযোগকারীদের জীবনে অবর্ণনীয় দুর্দশা বয়ে এনেছে। অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা না হওয়ায় অনেকেই আবার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছেন।
সূত্র : ডয়েচে ভেলে
সেরা নিউজ/আকিব