ট্রাম্পের মানসিকতা ডকাত সর্দারের মতো - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
ট্রাম্পের মানসিকতা ডকাত সর্দারের মতো - Shera TV
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৫২ পূর্বাহ্ন

ট্রাম্পের মানসিকতা ডকাত সর্দারের মতো

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আচরণ ডাকাতের মতো। কৃষ্ণাঙ্গদের বিষয়ে তার কোনো মাথা ব্যথা নেই। ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মিশেল কোহেন তার নতুন বইয়ে এমন অভিযোগ তথ্য তুলে ধরেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় আর্থিক অনিয়মসহ নানা অপরাধে জেলে যেতে হয় কোহেনকে। কারাবন্দি থাকার সময় তিনি তার আত্মজীবনী ‘ডিসলয়্যাল: এ মেমোইর’ বইয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তোলেন।

কোহেন দাবি করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প নেলসন ম্যান্ডেলা এবং হিস্পানিক জাতিগোষ্ঠী নিয়েও বর্ণবাদী মন্তব্য করেছেন।

মিথ্যা বলছে কোহেন: হোয়াইট হাউস

কোহেন একজন ঘৃণিত অপরাধী এবং ব্যর্থ আইনজীবী। সে কংগ্রেসে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে। চলতি সপ্তাহে এক বিবৃতিতে জানান হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কালেলি ম্যাকেনি। বলেন, সে তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। সবশেষ মিথ্যাচারের মাধ্যমে ফায়দা লুটার যে ফন্দি করেছে তাতে আমরা বিস্মিত নই।

বইয়ে কোহেন অভিযোগ করেন, ট্রাম্পের অপরাধের কারণে তাকে জেলে যেতে হয়েছে। তার সাবেক বসকে প্রতারক, মিথ্যুক, ধোকাবাজ, ভাড়াটে গুণ্ডা, বর্ণবাদী, ধূর্ত বলে অভিহিত করেন। বলেন, ট্রাম্পের মানসিকতা ডকাত সর্দারের মতো।

মার্কিন বিভিন্ন গণমাধ্যম তার বইয়ের বরাতে খবর প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার কোহেনের ‘ডিসলয়্যাল: মেমোইর’ বইটি বাজারে আসে। তার আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরা হলো।

কৃষ্ণাঙ্গ এবং ম্যান্ডেলা সম্পর্কে মন্তব্য

কোহেন তার বইতে লেখেন, একজন শাসক হিসেবে কালোদের জীবন, তাদের সঙ্গীত থেকে সংস্কৃতি এবং রাজনীতির অধিকার নিয়ে ট্রাম্প খুব কম ভেবেছেন।

প্রয়াত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট এবং বর্ণবাদবিরোধী অভিসংবাদিত নেতা নেলসল ম্যান্ডেলা কোনো নেতাই নন বলে মন্তব্য করেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দাবি করেন কোহেন।

‘নিকৃষ্ট, দরিদ্র দেশ ছাড়া একটি রাষ্ট্র দেখান যেখানে কৃষ্ণাঙ্গরা নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা সবাই টয়লেটের পরিপূরক।’ ট্রাম্প এমন কথা বলেছেন বলে কোহেন তার বইতে উল্লেখ করেছেন।

২০১৮ সালে আফ্রিকানদের নিকৃষ্ট জাতি হিসেবে অভিহিত করেছিলেন ট্রাম্প। কোহেনের দাবি ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি।

তারপর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমি বর্ণবাদী নই। আমি সবচেয়ে কম বর্ণবাদী যার সাক্ষাতকার আপনারা নিয়েছেন।

বর্ণবাদের অভিযোগ ট্রাম্পের পুরো শাসনামলকে ব্যাহত করেছে। নভেম্বরের নির্বাচনেও তার বর্ণবাদী আচরণ ইস্যু হচ্ছে। ওই বিতর্ক নিয়েই আসন্ন নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে লড়ছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলাকে সাধারণ মানুষ ভালোবেসে মাদিবা বলে ডাকেন। তাকে নিয়ে ট্রাম্পের অযাচিত বক্তব্যের জবাব দিয়েছে নেলসন ম্যান্ডেলা ফাউন্ডেশন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের নেতৃত্ব সারাবিশ্ব দেখেছে। তার কার্যকলাপের সঙ্গে সবাই পরিচিত। এমন অবস্থান থেকে মাদিবার জীবন কর্ম সম্পর্কে মন্তব্য করার কোনো যোগ্যতাই  ট্রাম্পের নেই।

নেতৃত্বের গুণাবলি বিষয়ে মাদিবা একবার বলেছিলেন, ‘একজন ভালো নেতা খোলামেলা এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ বিতর্কে জড়ায়। এটা জেনেও যে শেষ পর্যন্ত প্রতিপক্ষের সঙ্গে আবার তাকে একত্রিত হতে হবে। পক্ষ-প্রতিপক্ষের ঐক্যমতের মাধ্যমেই একজন নেতা শক্তিশালী উঠে। যখন আপনার মধ্যে এ ধারণাটি থাকবে না তখন আপনি অহংকারী, প্রচারপ্রিয় এবং মুর্খ।’ মাদিবার কথাগুলো অনুধাবনের জন্য ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান থাকলো। বলা হয় বিবৃতিতে।

বারাক ওমাবা বিষয়ে ট্রাম্প

কোহেন বলেন, ট্রাম্প তার পূর্বসূরী বারাক ওমাকে ঘৃণা এবং অবজ্ঞা করতেন। বলেন, ট্রাম্প একটি ভিডিও বানিয়েছিলেন। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে যা তা ভাবে অপমান করেন। পরে তাকে বরখাস্ত করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মার্কিন গণমাধ্যমে তখন পুরানো একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছিল। ওই ভিডিওতে ট্রাম্প তার টিভি অনুষ্ঠান অ্যাপ্রেন্টিস টেলিভিশন শো’র উপস্থাপক ছিলেন। তখন তিনি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভূমিকায় থাকা একজনকে বহিষ্কার করেন।

ধারণা করা হচ্ছে ওবামাকে অপমান করে বরখাস্তের সেই ভিডিও ২০১২ সালে রিপাবলিকান সম্মেলনের জন্য তৈরি হয়েছিল। ওবামার বিরুদ্ধে তখন রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর মননোয়ন পান মিট রোমনি। পরে ওই ভিডিও আর প্রচার করা হয়নি।

হিস্পানিক ভোটারদের সম্পর্কে ট্রাম্প

কোহেনের মতে ট্রাম্প একবার বলেছিলেন, আমি কখনও হিস্পানিকদের ভোট পাবও না। কৃষ্ণাঙ্গদের মতো তারাও বোকা। ট্রাম্পকে তারা ভোট দেবে না। তারা আমার মানুষ নয়।’

২০১৬ সালের নির্বাচনে তিনি বারবার ম্যাক্সিকানদের বিরুদ্ধে বিষদগার করেছেন। ল্যাটিন আমেরিকানদের উদ্দেশ্যে ট্রাম্পের কটুক্তি তার শাসনামলজুড়ে সামলোচনার শীর্ষে ছিল।

২০১৯ সালে নিউ মেক্সিকোতে এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেছেন, হিস্পানিকদের কেউ এখন আর পছন্দ করে না।

ইভানজেলিক খ্রিস্টীয় ভাববাদ

কোহেন জানান, ২০১৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরপরই তিনি ইভানজেলিক খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারকেদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন। তখন তিনি তাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, আপনারা কি বিশ্বাস করেন মানুষ এতে বিশ্বাস করে?

ট্রাম্প ইভানজ্যালিক্যাল ভাববাদ ব্যাপকভাবে প্রচার করেন। দাবি করেন তিনি একজন বিশ্বাসী। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স একজন ইভানজেলিক ভাববাদে বিশ্বাসী ধর্মপ্রাণ খ্রিস্টান। তবে ট্রাম্পের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে কোহেনের বইতে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

বিষয় যখন পুতিন

কোহেন বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে নিয়ে ট্রাম্প গর্ব করতেন। বলতেন, তিনি তার পুরো দেশকে নিজের ব্যক্তিগত কোম্পানির মতো দখল করতে পেরেছেন। ট্রাম্প অর্গানাইজেশন যেমন আমার।

এছাড়া, ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প হেরে গেলে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে রুশ অর্থের প্রবাহ চালু রাখা যায় সে নিয়েও পুতিনের সঙ্গে একমত ছিলেন ট্রাম্পের।

তবে কোহেন বলেছেন, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় রুশ সংখ্যতা থেকে দূরে ছিল। প্রকৃত ষড়যন্ত্র হয়েছে ক্ষমতায় আসার পর।

স্টর্মি ড্যানিয়েলস

২০১৬ সালে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে মোটা অংকের অর্থ দেন কোহেন। কারণ স্টর্মি দাবি করেছেন, তার সঙ্গে ট্রাম্পের গোপন সম্পর্ক রয়েছে। তার এ কাজ নির্বাচনী তহবিলনীতির লঙ্ঘন ছিল। এ অপরাধে কোহেনকে কারাভোগ করতে হচ্ছে।

কোহেন জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্টের নির্দেশ পালন করেছেন মাত্র। কিন্তু ট্রাম্প বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছেন ট্রাম্প।

কোহেন বলেন, ধামাচাপা দেয়ার জন্য আমি কাউকে অর্থ দেইনি। আমার অনেক বন্ধুবান্ধব পরামর্শ দিয়েছেন অর্থ দিতে। ট্রাম্প বলেছেন, বিষয়টি যদি জনসম্মুখে আসে তাহলে সমর্থকদের উপর কেমন প্রভাব পড়বে বা তাদের কি প্রতিক্রিয়া হবে-আমি নিশ্চিত না। তবে আমি চাই, তারা বিষয়টিকে দুর্দান্ত ভাবুক যে, আমি পর্ণ তারকার সঙ্গে রাত কাটিয়েছি।

মিশেল কোহেন কে?

দীর্ঘদিন ধরে ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করেছেন কোহেন। তাকে ট্রাম্পের মধ্যস্থতাকারীও বলা হতো। পরে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। গেলো বছর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মার্কিন কংগ্রেসে সে নৃশংস সাক্ষ্য দেয়। যা ২০১৮ সালে ট্রাম্পের অভিশংসন প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে। যদিও পরে সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় অভিশংন থেকে রক্ষা পান ট্রাম্প। কিন্তু কর ফাঁকি, মিথ্যা বিবৃতি এবং প্রচারণার অর্থ তছরুপের অভিযোগে জেল হয় কোহেনের।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বর্তমানে কোহেন নিউইয়র্কে নিজ বাড়িতে তিন বছরের কারাদণ্ডের সাজা ভোগ করছেন।

ট্রাম্প তাকে ইদুর এবং মিথ্যাবাদী বলে ভর্ৎসনা করেছেন। কোহেন একবার বলেছিলেন তিনি ট্রাম্পের জন্য একটি বুলেট রাখবেন। কারণ তিনি ট্রাম্প সমর্থকদের থেকে তিনি জীবননাশের হুমকি পেয়েছেন।

সূত্র: বিবিসি ওয়ার্ল্ড।

 

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360