ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের অনেক পদবি রয়েছে। সবগুলো মিলিয়ে এখন তিনি ‘দ্য চেয়ারম্যান অব এভেরিথিং’ নামে পরিচিত।
চীনা প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্র, ক্ষমতাসীন দল এবং সশস্ত্রবাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। শি জিনপিং ক্ষমতায় আসেন ২০১২ সালে। দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্র, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের দায়িত্বে সীমিত থাকেননি তিনি। তৈরি করেছেন নতুন উপদল এবং সর্বোচ্চ কমিটি। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই বলে থাকেন, তিনি প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি স্বৈরাচারী।
মার্কিন কংগ্রেসে এখন নতুন একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। যাতে শি জিনপিংয়ের ‘প্রেসিডেন্ট পদবি’ রহিতের দাবি জানানো হয়। পশ্চিমা সরকার এবং সিএনএনসহ পশ্চিমা অনেক গণমাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেছে।
৭ আগস্ট পেনসিলভানিয়া থেকে নির্বাচিত রিপাবলিকান আইনপ্রেণেতা স্কট পেরি ‘নেম দি এনিমি অ্যাক্ট’ নামে ওই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। প্রস্তাবনায় প্রেসিডেন্ট না বলে, চীনা কমিউনিস্টি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব বা সাধারণ সম্পাদক নামে শি জিনপিংকে সম্বোধনের সুপারিশ করা হয়।
গেলো কয়েক দশক ধরে চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিকৃতধারা অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়, চীনের সরকার প্রধানকে প্রেসিডেন্ট বলার অর্থ, তাকে জনগণ গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত করে শাসন ক্ষমতা দিয়েছে। আসলে তা নয়। এ ভুল আমরা করতে পারি না।
শি’র প্রেসিডেন্ট পদবি নিয়ে বিতর্ক এবং বিভ্রান্তি রয়েছে। তার দাফতরিক পদবিতে প্রেসিডেন্ট বা চীনা ভাষায়ও এমন কোনো পদবি নেই যার ইংরেজি অর্থ প্রেসিডেন্ট। কিন্তু ১৯৮০ সাল থেকে চীন উন্মুক্ত বাণিজ্যে প্রবেশ করার পর চীনা রাষ্ট্র প্রধানের দাফতরিক ইংরেজি পদবি ছিল প্রেসিডেন্ট।
শুধু পেরি নয়, এর আগেও শি’র পদবি বাতিলের দাবি জানানো হয়েছিল। বহু বছর ধরে বিশ্লেষকদের ভাষ্য, চীনা এবং ইংরেজি ভাষায় শি’র পদবি নিয়ে বিভক্তি তাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে স্বচ্ছ প্রতিচ্ছবি তৈরি এবং প্রতিনিধিত্বমূলক নেতৃত্বের সুযোগ করে দিচ্ছে। যা শিয়ের কর্তৃত্ববাদী এবং স্বৈরাচারী নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
চীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়। চীনাদের ভোট দেয়ার অধিকার নেই। তারা প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারেন না। স্বাধীন মত প্রকাশেরও অধিকার নেই তাদের। ২০১৯ সালে মার্কিন-চীন অর্থনীতি এবং সুরক্ষা পর্যালোচনা কমিটি কংগ্রেসে এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উত্থাপন করেন। কমিশন মার্কিন সরকারকে বলেছে, জেনারেল শি’কে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আখ্যা দেয়া কমিউনিস্ট সরকার এবং তার কর্তৃত্ববাদী নীতিকে গণতান্ত্রিকভাবে বৈধতা দেয়ার সামিল।
শি চীনে তিনিটি প্রধান পদবিতে রয়েছেন। রাষ্ট্রের চেয়ারম্যান হিসেবে রাষ্ট্রপ্রধান। সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে চীনা লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) কমান্ডার ইন চিফ। সিসিপি’র সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ক্ষমতাসীন দলের প্রধান। ক্ষেত্র বিশেষে এ পদবিগুলো ব্যবহার করা হয়। যখন পিএলএ’র বিষয় আসে তখন কমান্ডার ইন চিফ পদবি ব্যবহার করে থাকে সরকারি এবং রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত চীনা গণমাধ্যম। প্রেসিডেন্ট হিসেবেও তাকে উপস্থাপন করা হয়। তবে তা সবসময় না।
চীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কয়েক বছর পর ১৯৫৪ সালে দেশটির প্রথম সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। এতে চীনা নেতাকে চেয়ারম্যান হিসেবে অভিহিত করা হয়। মাওসেতুং দেশটির প্রথম চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ১৯৭৫ সালে নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে দেশটিতে কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতা এবং গুরুত্ব আরো বাড়ানো হয়। রাষ্ট্রের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা বাতিল করে পার্টির চেয়ারম্যানের ক্ষমতা বাড়ানো হয় বহুগুণে।
মাওসেতুংয়ের সংবিধান চলে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত। নতুন নেতা চীনকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেন; নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে। এ সংবিধানে মাওয়ের অনেক কিছু পরিবর্তন করা হয়। পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয় রাষ্ট্রীয় চেয়ারম্যানের পদবি। পার্টির চেয়ারম্যানের পদবিকে সাধারণ সম্পাদক নামে অভিহিত করা হয়। রাষ্ট্রের চেয়ারম্যানকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় প্রেসিডেন্ট পদবিতে। তখন থেকে পরবর্তীতে চীনের শাসনকর্তাকে প্রেসিডেন্ট বলা হয়।
প্রেসিডেন্ট শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘টু সিট বিফোর’ থেকে। যার অর্থ সভাপতিত্ব করা। তখন এ শব্দটি সংগঠনের প্রধানের নামের সঙ্গে ব্যবহার হতো। যেখানে নির্বাচন বা গণতন্ত্রর বিষয় ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র প্রথম রাষ্ট্রের প্রধানকে প্রেসিডেন্ট পদবিতে অভিহিত করে। পরবর্তীতে অন্যান্য দেশ তা অনুসরণ করছে।
১৯৮০’র দশক ছিল চীনে ব্যাপক সংস্কার ও বিশ্বায়নের সময়। তখনকার নেতা দেং জিয়াওপিং অর্থনীতির উপর থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে নেন। ব্যক্তিগত স্বাধীনতার পথ উন্মুক্ত করেন। প্রেসিডেন্ট পদবির গুরুত্ব প্রতিফলিত হওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চীনের কূটনীতি বাড়তে থাকে। যা দেশটির নতুন নেতৃত্ব এবং মাওসেতুংয়ের কর্তৃত্ববাদী নীতির মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য গড়ে তুলে। অন্যান্য দেশের রাজনৈতিক নেতাদের মতোই চীনের নেতার ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। যদিও ওই সময়ে সাড়ে ৪ কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষে মারা যায়।
চীনের এ পরিবর্তনকে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ যোগসূত্র তৈরি বলে আখ্যা দিয়েছেন হংকং ইউনিভার্সিটির ইংরেজি ল্যাঙ্গুয়েস্টিক ডিপার্টিমান্টের অধ্যাপক জ্যানি লেউনং। যা সোভিয়েত শাসনমালের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যদিও সমাতন্ত্রের সঙ্গে চীনের ঐতিহ্যগত শক্তিশালী মেলবন্ধন রয়েছে, বলেন লেউনং।
২০০৯ সালে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম চীনা ডেইলি জানায়, চীনের রাষ্ট্রপ্রধানের পদবি প্রেসিডেন্ট করার কারণ হলো-বিশ্বের গণপ্রজাতন্ত্রী দেশগুলোতে রাষ্ট্রপ্রধানকে ইংরেজিতে প্রেসিডেন্ট বলা হয়, তাই। পশ্চিমা কিছু গণমাধ্যম সে সময় প্রেসিডেন্ট শব্দটি ব্যবহার শুরু করে। অন্যান্য দেশ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা পদবি ব্যবহার করতো।
১৯৯০ সালের শেষ দিকে চীন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থায় যোগদানের জন্য প্রস্তুতি নেয়। ধারণা করা হয়েছিল দেশটি গণতান্ত্রিক পন্থার দিকে এগুতে চাচ্ছে। তখন চীনা প্রেসিডেন্ট পদবি ব্যাপকহারে ব্যবহার হয়।
দেং শাসনামলের সঙ্গ তুলনা করলে বর্তমানে চীন অনেক পাল্টে গেছে। বিশ্ব নেতৃত্বে পাকাপোক্ত অবস্থান চীনের। ১৯৭৮ সালে দেশটির জিডিপি ছিল ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। গেলো বছর তাদের জিডিপি ছিল ১৪ ট্রিলিয়ন। চীন এখন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থনীতির রাষ্ট্র।
চীনের নেতৃত্ব এবং রাজনীতির চিত্রেও অনেক রূপান্তর হয়েছে। দেংয়ের শাসনকালের নেতা সচেতনভাবে মাওসেতুংকে এড়িয়ে যেতো। কিন্তু সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে কমিউনিস্ট পার্টির নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে কাজ করছে শি। মাওয়ের শাসনামলের সঙ্গে নিজের সরকার পরিচালনা ব্যবস্থার একটি সমান্তরাল সম্পর্ক স্থাপন করছেন তিনি।
২০১৬ সালে শি’কে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কাণ্ডারি ঘোষণা করা হয়। তার সমক্ষদের চেয়ে তার অবস্থান সবার উপরে এবং তার ক্ষমতাকে প্রশ্নাতীত করা হয়। এর আগে প্রথমে মাওকে পরে দেং এবং ড্যাংয়ের উত্তরসূরি জিয়াং জেমিনকে এ উপাধি দেওয়া হয়েছিল।
এর এক বছর পর চীনা নতুন যুগের ভিত্তি স্থাপনের লক্ষ্যে শি জিনপিং সমাজতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিলিয়ে নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শ উত্থাপন করেন। যা শি জিনপিং চিন্তাধারা নামের পরিচিত। অন্তর্ভুক্ত করা হয় কমিউনিস্ট পার্টির গঠনতন্ত্রে। যা মাওসেতুংয়ের চিন্তাভাবনার প্রতিধ্বনি। শি জিনপিংয়ের ছাড়া কোনো ক্ষমতাসীন চীনা নেতার আদর্শ কমিউনিস্ট পার্টির গঠনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। দেং জিয়াওপিংয়ের মৃত্যুর পর তার মতাদর্শ কমিউনিস্ট পার্টির গঠনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়।
সবচেয়ে চমকপ্রদ পদক্ষেপটি গ্রহণ করা হয় ২০১৮ সালে। তখন দেশটির সংবিধান রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদের সময়সীমা বাতিলের জন্য সংশোধন করা হয়। শি’কে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাষ্ট্রপ্রধান থাকার ক্ষমতা দেয়া হয়। এসময় শিয়ের পার্টি এবং সামরিক প্রধানের পদের ক্ষমতা আরো বাড়ানো হয়। এ দুটি পদে থাকার কোনো সময়সীমা নেই।
শি’য়ের কঠোরনীতি এবং স্বাধীন মতের কণ্ঠরোধের কারণে পশ্চিমা সাংবাদিক, নীতিবিশ্লেষকরা ইংরেজি অনুবাদে প্রেসিডেন্ট পদবি বাতিলের দাবি জানান। কারণ তার নেতৃত্বে প্রেসিডেন্ট শব্দের প্রতিফলন নেই। বরং চীনা ভাষায় শি’কে যেসব পদবিতে বিশেষায়িত করা হয় সেসব পদবি ইংরেজিতে প্রচলনের আহ্বান জানানো হয়। যাতে তার নেতৃত্ব সঠিকভাবে ফুটে উঠে।
২০১৯ সালে মার্কিন-চীন অর্থনীতি এবং সুরক্ষা পুনর্বিবেচনা কমিশন ঘোষণা দেয় তারা চীনা কর্তৃপক্ষ শি’কে যে পদবিতে নামকরণ করেছে তথা চীনা কমিউিনস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নামে অভিহিত করবে।
মার্কিন-চীন সম্পর্কে যখন নিম্নগামী তখন পেরি তার প্রস্তাব কংগ্রেসে উত্থাপন করলেন। সম্প্রতি করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র-চীন একে অপরকে দোষারোপ করছে। জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে একে অপরের কনস্যুলেট বন্ধ করে দিয়েছে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ চীনা কয়েকটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। জনপ্রিয় চীনা অ্যাপস টিকটক, উইচ্যাপ বন্ধের হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভাষায়ও উঠে এসেছে তারা কীভাবে শি’কে দেখছেন। গেলো দু’মাস ধরে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ক্রিস্টোফার ওরে, মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রেইন এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বিভিন্ন বিবৃতিতে শি জিনপিংকে কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলে সম্বোদধন করেছেন। যা তাদের আগের অবস্থানের বিপরীত। পূর্বে চীনা নেতাকে প্রেসিডেন্ট শি বলে অভিহিত করতো হোয়াইট হাউস।
চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেছেন পম্পেও। জুলাইতে তিনি বলেছেন, কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের কোনো সম্পর্ক নেই। এমন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শি জিনপিং। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণ মানুষের উপর আরো কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কমিউনিস্ট পার্টিকে সাজানো হচ্ছে।
হংকং ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লেউনং বলেন, শি’য়ের পদবি পরিবর্তন যতোটা না ভাষাগত তার চেয়ে অধিক রাজনৈতিক। বিশ্বে অনেক স্বৈরশাসক রয়েছেন যারা গণতন্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রেসিডেন্ট শব্দটি ব্যবহার করেন। যেমন উত্তর কোরিয়ার দাফতরিক নাম- ডেমোক্র্যাটিক পিপলস রিপাবলিক অব কোরিয়া। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজেকে প্রেসিডেন্ট পরিচয় দিচ্ছেন। তার বিরোধী এবং সমালোচকরা অব্যাহতভাবে পুতিনের বিরুদ্ধে দেশে ভুয়া নির্বাচন আয়োজনের অভিযোগ তুলেছেন।
লেউনং বলেন, শি’র পদবি পরিবর্তন একটি বাগযুদ্ধ। মার্কিন-চীন উত্তেজনার মধ্যে তার পদবি পরিবর্তনকে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির বৈধতা বা গ্রহণযোগ্যতা খর্ব করারা চেষ্টা। যদি কোনো দেশ বলে আমরা চীনের দাফতরিক এ নাম ব্যবহার করবো না। তার মানে দাঁড়ায় দেশটির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা। তারা একটা নাম ঠিক করেছে। আপনি সেটা স্বীকার করছেন না। তার অর্থ তার দেশের ভাবমূর্তিতে আপনি আঘাত করছেন।
কংগ্রেসে যে বিল উত্থাপন করা হয়েছে পেরি ছাড়াও আরো চারজন উত্থাপক আছেন। তবে বিষয় হচ্ছে কংগ্রেসের মেয়াদ আর কয়েক মাস বাকি। যদি এটি জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় শেষ অধিবেশন আইনে পরিণতও হয়, পরবর্তীতে বাস্তবায়ন করতে গেলে তা আবার কংগ্রেসের নতুন অধিবেশনে উত্থাপন করতে হবে।
শি এখনো চান তাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডাকা হোক। এক্ষেত্রে মার্কিন প্রস্তাবনার একটি গুরুত্ব আছে। তবে বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, মাওসেতুংয়ের মতো তিনিও হয়তো চাইবেন তাকে কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে ডাকা হোক।
২০২২ সালে কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম সম্মেলন। ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। চেয়ারম্যানের ইংরেজি পদবিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানান বেইজিংয়ের রাজনীতি বিশ্লেষক উ চিয়াং। তিনি বলেন, চীনে চেয়ারম্যানের পদবি মানে শীর্ষ, নিখুঁত শীর্ষ, নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব। পার্টির নেতা সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
যদি শি চেয়ারম্যান পদবিতে ফিরে যান তাহলে তা হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি মাওয়ের যুগকে অনুসরণ করছেন। চীনকে ফিরিয়ে নিতে চাচ্ছেন মাওসেতুংয়ের শাসনামলে। বলেন চিয়াং। চেয়ারম্যান শব্দটি গ্রহণ, শি’র শক্তিকে আরো একীভূত করতে সহায়তা করবে। সম্ভবত স্পষ্টভাবে তাকে সবকিছুর চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
সেরা নিউজ/আকিব