চুল পড়া থেকে বাঁচবেন যেভাবে - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
চুল পড়া থেকে বাঁচবেন যেভাবে - Shera TV
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৬ অপরাহ্ন

চুল পড়া থেকে বাঁচবেন যেভাবে

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

লাইফস্টাইল ডেস্ক:

চুল পড়ার সমস্যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া বলা হয়। ডিএইচটি নামক হরমোনের কারণে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। এই হরমোনের পরিমাণ বেড়ে গেলে চুলের রক্ত সঞ্চালন কমে যায় এবং চুল পড়তে শুরু করে। আরেকটু পরিষ্কার করে বললে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের মাথায় স্বাভাবিকভাবেই প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০টি পর্যন্ত চুল ঝরে পড়ে। আবার নতুন চুল গজিয়ে যায় বলেই বিষয়টি নিয়ে ভাবনার দরকার পড়ে না।

যাদের ডিএইচটি হরমোন বেড়ে যায়, তাদের আর নতুন করে চুল গজায় না। ফলে ধীরে ধীরে চুল পড়ে যাওয়ার স্বাভাবিক মাত্রা অস্বাভাবিক হয়ে দেখা দেয়।

কীভাবে বুঝবেন চুল পড়ছে?

একজন সুস্থ মানুষের মাথায় গড়ে এক থেকে দেড় লাখ চুল থাকে। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০টা পর্যন্ত চুল পড়া স্বাভাবিক। কিন্তু এর চেয়ে বেশি পড়লে তা অবশ্যই উদ্বেগের কারণ। বালিশ, তোয়ালে বা চিরুনিতে লেগে থাকা চুল গুনতে চেষ্টা করুন। অন্তত পরপর তিন দিন। অথবা অল্প এক গোছা চুল হাতে নিয়ে হালকা টান দিন। যদি গোছার চার ভাগের এক ভাগ চুলই উঠে আসে, তবে তা চিন্তার বিষয়।

কি কারণে চুল পড়ে?

সাধারণত Androgenetic কারণে চুল পড়ে এবং এটি ছেলে এবং মেয়ে সবার ক্ষেত্রেই দেখা যায়। অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন যেমন টেস্টোস্টেরন, অ্যান্ড্রোস্ট্রেনডিয়ন, ডিএইচটি হরমোনগুলো সাধারণত ছেলেদের মধ্যে বেশী এবং তুলনামূলক ভাবে মেয়েদের কম দেখা যায়। এরা হেয়ার ফলিকলের ওপর কাজ করে ও চুল পড়া বাড়িয়ে তোলে।

এছাড়া চুল পড়া বংশগত হতে পারে। অনেক পরিবারের এই বংশগত চুল পড়ার সমস্যা দেখা যায়। যদিও চুল পড়া কোন রোগ নয় তবুও থাইরয়েডের সমস্যা, অ্যানিমিয়া, মাথার তালুর রিং ওয়ার্ম, এবং অনেক দিনের মানসিক দুশ্চিন্তার জন্য চুল পড়ে যেতে পারে।

অনেক সময় কিছু ঔষধের পার্শপ্রতিক্রিয়ায় যেমন ক্যান্সারের কেমোথেরাপি সাময়িক ভাবে চুল পড়া বাড়িয়ে দিতে পারে। মেডিসিন নেয়া বন্ধ করলে তা নিজ থেকে ঠিক হয়ে যায়।

আবার অনেক সময় খাবারে পুষ্টির অভাব ঘটলে চুল পড়া বেড়ে যায়। ডায়েটে প্রোটিনের অভাব হলে এবং কিছু কিছু মিনারেলস এবং ভিটামিনের ঘাটতি চুল পড়া বৃদ্ধি করে অনেক গুন। অনেক ক্ষেত্রে মেয়েদের সন্তান জন্মদানের পর কিছু হরমোনের কারণে অথবা মেনপজের পড় চুল পাতলা হয়ে যেতে পারে।

সবার একইরকম ভাবে চুল পড়ে না। কারো মাথার কিছু অংশে চুল গজায় না আবার কারো পুরো মাথার চুল কমে যেতে থাকে। এক এক জনের মধ্যে এক এক রকম চুল পড়ার সমস্যা দেখা যায়।

চুল পড়া বন্ধ করার আপনি কি করবেন?

যদি পুস্টির অভাবে চুল পড়া শুরু হয় তবে আপনার খাদ্য তালিকার দিকে নজর দিন। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান বেশী করে। খাবারের সাথে কিছু ভিটামিন এবং মিনারেলস গ্রহণ করুন।

পরিমিত পরিমাণে আয়রন আর জিঙ্ক চুল গজানোর জন্যে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। মটরশুঁটি, বাদাম, কলিজা, মাংস, দুধে আপনার প্রয়োজনীয় জিংক আর আয়রন পাবেন। তাই এগুলো খাদ্য তালিকায় রাখুন। আর প্রচুর পানি পান করুন।

চুলের যত্নে কিছু টিপস: 

১) স্নানের আগে চুল আঁচড়িয়ে নেবেন। চুল সবসময় নিচ থেকে আচড়াবেন তাহলে খুব সহজে চুলে জট থাকলে খুলে যাবে, চুল নষ্ট হবে কম। আর চুলের জট খোলার জন্য সবসময় মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করবেন।

২) সপ্তাহে ৩ দিন চুলে শ্যাম্পু করবেন। চুলে বেশি Shampoo করলে চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে গিয়ে চুল শুস্ক হয়ে যায়।চুলে শ্যাম্পু করার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে-

ক) চুল আগে ভিজিয়ে নিতে হবে।

খ) যতটুকু শ্যাম্পু চুলে দিবেন তা একটা বাটিতে নিবেন। তার মধ্যে একটু পানি মিক্স করে পাতলা করে নিবেন, তাহলে লাগাতে সুবিধা হবে। আর চুল যখন ধুবেন তাড়াতাড়ি পরিষ্কার হবে।

গ) চুলে শ্যাম্পু লাগানোর সময় মাথার তালুতে ভালোভাবে লাগাবেন, তারপর চুলের নিচের দিকে লাগাবেন। খুব যত্ন করে আলতো হাতে লাগাবেন।

ঘ) চুল ধোয়ার পর কন্ডিশনার লাগাবেন। কন্ডিশনার চুলের শুধুমাত্র নিচের দিকে লাগাবেন, উপরে লাগানো জরুরি নয়। ৫/১০ মিনিট চুলে রেখে চুল ভালো করে ধুয়ে নেবেন।

৩) স্নানের শেষে চুল টাওয়েল বা গামছা দিয়ে শক্ত করে বেধে রাখবেন না। চুলে গামছা বা টাওয়েল দিয়ে বাড়ি দিয়ে পানি ঝরানোর চেষ্টা করবেন না।এতে চুলের আগা ফেটে যায়।

৪) ভেজা চুল আঁচড়াবেন না কারণ তখন চুলের গোঁড়া নরম থাকে।

৫) চুলে অতিরিক্ত তেল দিবেন না, চুলের গোড়ায় তেল লাগিয়ে অবশ্যই চুলে ম্যাসাজ করবেন।

৬) রাতে ঘুমানোর আগে চুল আঁচড়িয়ে হালকা করে বেনি করে ঘুমাবেন, তাহলে আর যত পাকাবেনা। আর স্যাটিনের বালিশে ঘুমালে চুল কম ঝরে।

৭) নারিকেল তেলের সাথে দারুচিনি গুড়া করে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করলেও চুল পড়া বন্ধ হয়

৮) সপ্তাহে ৩/ বার পছন্দের Hair প্যাক লাগাতে পারেন।

৯) শ্যাম্পু করার পর এক মগ পানিতে লেবু/চায়ের লিকার দিয়ে চুল ধুতে পারেন চুল সিল্কি হবে।

১০) স্নানের পর চুলে এক মগ এর পানিতে ৬/৭ টা পেয়ারা পাতা সিদ্ধ করে সে পানি দিয়ে চুল ধুতে পারেন, এতে চুল পড়া অনেক কমে যাবে।

১১) বেশি করে পানি খাবেন,আর সপ্তাহে ২ বার চিরনি ধোবেন।

১২) আমলকি ও জবাফুল নারকেল তেলে ফুটিয়ে কাঁচের বোতলে সংরক্ষন করুন। শ্যাম্পু করার আগে ওই তেল চুলের গোড়ায় ম্যাসেজ করেন।

১৩) চুল পড়া বন্ধ করতে হলে পেয়াজ এর রস চুলের গোড়ায় গোড়ায় ভালো করে লাগিয়ে ১০ মিনিট রাখুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন । নিয়মিত ব্যবহার করলে অবশ্যি নতুন চুল গজাবে এবং চুলে খুসকি থাকলে সেটাও কমে যাবে।

১৪) খাঁটি নারকেল তেল অথবা অলিভ ওয়েলের সাথে ভিটামিন ‘ই’ ক্যাপসুল মিশিয়ে চুলে ম্যাসাজ করলে নতুন চুল গজাতে পারে।

১৫) মধু এবং দারুচিনির গুঁড়া মিশিয়ে চুল কমে যাওয়া জায়গায় লাগালে নতুল চুল গজায়।

১৬) খাবারের সাথে এবং তেলের সাথে চুলে কালিজিরা ব্যাবহার করুন।

চিকিৎসা

বেশির ভাগ চিকিৎসায় কিছুটা উন্নতি হলেও একেবারে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। ২-৫ শতাংশ মিনস্কিডিল ব্যবহার করে বেশ উপকার পাওয়া যায়। ইদানীং চুল প্রতিস্থাপন করা হয়, কিন্তু এটি ব্যয়বহুল।


সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360