মিন্নির ভাগ্য পরিক্ষা আজ - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
মিন্নির ভাগ্য পরিক্ষা আজ - Shera TV
মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন

মিন্নির ভাগ্য পরিক্ষা আজ

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

সেরা নিউজ ডেস্ক:
বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় ঘোষণা হবে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর)। বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আছাদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করবেন।

মামলার রায়ে রিফাতের স্ত্রী মামলার অন্যতম আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বেকসুর খালাস পাবে বলে প্রত্যাশা বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের। একই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম।

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, আমরা আসলেই হয়রানির শিকার। জীবন বাজি রেখে মিন্নি তার স্বামীকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো। অথচ মিন্নি প্রধান সাক্ষী থেকে এখন আসামির কাঠগড়ায়, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

তিনি বলেন, মিন্নির আইনজীবীরা যে যুক্তিতর্ক আদালতে উপস্থাপন করেছেন সেই যুক্তি খণ্ডন করতে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। মিন্নি যে নির্দোষ এটা আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন আমাদের আইনজীবীরা। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, মিন্নি এ মামলা থেকে বেকসুর খালাস পাবে।

মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে মিন্নির উপস্থিতিতে কলেজের শহীদ মিনারে হত্যার পরিকল্পনার যে মিটিংয়ের কথা বলা হয়েছে, সেখানে মিন্নি ছিল না। আহত রিফাত শরীফকে মিন্নি হাসপাতালে নিয়ে গেছে। কিন্তু সে বিষয়টি চার্জশিটের কোথাও নেই।

তিনি বলেন, রিফাত শরীফকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া মিন্নির রক্তমাখা জামা-কাপড় পুলিশ নিলেও আদালতে সেই জামা-কাপড় উপস্থাপন করা হয়নি। অথচ বলা হয়েছে, নয়ন বন্ডের বাসা থেকে মিন্নির জামা-কাপড় জব্দ করা হয়েছে এবং এই জব্দ তালিকায় নয়ন বন্ডের মা সাহিদা খাতুনের স্বাক্ষর রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে উদ্ধার করা জামা-কাপড় যে মিন্নির তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ হয়নি। নয়ন বন্ডের মাকে মামলায় সাক্ষীও করা হয়নি।

মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, যদি কেউ কাউকে খুনের পরিকল্পনা করে তাহলে সে কখনও তাকে বাঁচাতে যায় না। মিন্নি যেভাবে রামদার নিচে গিয়ে তার স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে এবং পরে রিফাতকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে; এতেই বোঝা যায় মিন্নি নির্দোষ। মিন্নি কোনোভাবেই হত্যায় জড়িত নয়। আমরা মনে করি, আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। তাই আশা করছি মিন্নি বেকসুর খালাস পাবে।

২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে শত শত লোকের উপস্থিতিতে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে (২৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ভাইরাল হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, ধারালো দা দিয়ে রিফাতকে একের পর এক কোপ দিতে থাকেন দুই যুবক। ওই সময় রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি দুই যুবককে বারবার প্রতিহতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ঘটনাটি পুলিশের সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল। কিন্তু সন্ত্রাসীর সঙ্গে যুদ্ধ করেও স্বামীকে বাঁচাতে পারলেন না স্ত্রী মিন্নি। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল নেয়ার পর মারা যান রিফাত।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন; এতে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল। এরপর আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও দেখে মিন্নির বাবার বিরুদ্ধেও মামলা করার কথা জানান রিফাতের বাবা।

এরই মধ্যে মামলার প্রধান সাক্ষী মিন্নিকে গত ১৬ জুলাই রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের তদন্তে স্বামী হত্যায় ফেঁসে যান মিন্নি। পরদিন তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। দুদিন পরে মিন্নিকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

পরদিন মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। মিন্নির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী।

পরদিন বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন।

এসপির সংবাদ সম্মেলনের পরদিন বিকেলে মিন্নি একই আদালতে তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

অবশ্য মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন শুরু থেকেই অভিযোগ করেন, নির্যাতন করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মিন্নিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে পুলিশ। এর পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের হাত আছে।

গত ৩০ জুলাই বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান মিন্নির জামিন নামঞ্জুর করেন। এর আগে ২১ জুলাই বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালত মিন্নির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরপর মিন্নির জামিনের বিষয়টি হাইকোর্টে আসে। এ অবস্থায় মিন্নির জামিন কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে গত ২০ আগস্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট। অবশেষে ২৯ আগস্ট দুই শর্তে মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট।

এরপর রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এক আসামির পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। সব আসামির পক্ষে-বিপক্ষে আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। ১৬ সেপ্টেম্বর নিহত রিফাতের স্ত্রী মিন্নিকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য আদালতে উপস্থাপিত যুক্তিখণ্ডন শেষে এ রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত।

 

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360