নির্বাচনের দিন যতই এগিয়ে আসছে, বাড়ছে শঙ্কা। বলা হচ্ছে, গণতন্ত্রে প্রতিষ্ঠিত শান্তিপূর্ণ ভোটদানের ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটতে পারে মার্কিন নির্বাচনে। বিনষ্ট হতে পারে শান্তির পরিবেশ। ফলে স্মরণকালের সবচেয়ে টেনশনের ও আশঙ্কার ভোটে পরিণত হয়েছে ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
মিথ্যা প্রচারণা, ভুয়া খবর, গুজব, বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়তে পারে মার্কিন নির্বাচনকালে, অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সূত্রের এমনই ধারণা। ভোটের সময় ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বয়ং ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ কর্ণধার মার্ক জাকারবার্গ।
অনেকগুলো কারণকেও চিহ্নিত করা হয়েছে নির্বাচনী অস্থিরতার জন্য। বলা হচ্ছে, এবারের ভোটে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো হতে চলেছে বড় পরীক্ষাগার। ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপকে তাই সতর্ক করেছেন কর্ণধার জাকারবার্গ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলগণনা ৩ নভেম্বর। তার এক সপ্তাহ আগে থেকে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি নাগরিকদের ভোট দানে নিরুৎসাহ করে, এমন প্রচার বা পোস্টের বিরুদ্ধেও তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
কিন্তু তারপরেও এমন বিজ্ঞাপন সামনে চলে আসে, যা ভোটগণনার পরে আসার কথা। তা নিয়েও কম বিতর্ক হয়নি। উভয় পক্ষই প্রচারণায় অত্যন্ত স্পর্শকাতর আচরণ করায় পরিস্থিতি হচ্ছে উত্তপ্ত ও ক্ষেত্র বিশেষে নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
বিগত ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময়েও এমন অভিযোগ ছিল যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় আমেরিকার ভোটকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। শুধু দেশের ভেতর থেকে নয়, বাইরে থেকে রাশিয়া, চীনের মতো শক্তিও কলকাঠি নেড়েছে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য। এবারও তেমন কিছু সামনে চলে আসতে পারে। নির্বাচনের ঠিক প্রাক্কালে তেমনটি হলে তা হবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং পরিস্থিতি চরম নাজুক করার কারণ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এতো বড় এবং নানা মত ও পথের মানুষে বিভাজিত দেশ, যেখানে কিছু হলে সামাল দেওয়া কঠিন। তদুপরি, সেদেশে ভোটের ফল ঘোষণা হতে কয়েক দিন থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সেই সময়ের মধ্যে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। হতে পারে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী গুজবের বিস্তার।
ফলে মার্কিন নির্বাচনের আগে ও পরের সপ্তাহটি কেবল গণতন্ত্রের জন্য পরীক্ষার সময় নয়, শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখার জন্যেও চ্যালেঞ্জের। বিশেষ করে, করোনা ও বিশ্বব্যাপী ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও জাতিগত অসহিষ্ণুতার পটভূমিতে বিপদের ধরণ ও আশঙ্কার ক্ষেত্র অনেক বেড়েছে।
তদুপরি বর্ণবাদী ও শ্বেতাঙ্গপ্রীতিতে আকীর্ণ উগ্র দক্ষিণপন্থীদের কথাবার্তা ও কার্যকলাপের মধ্যে অনেকেই উস্কানির ছাপ দেখতে পেয়েছেন, যা শুধু ভীতির কারণই নয়, শান্তিপূর্ণ-গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্যে বিপজ্জনকও। সব মিলিয়ে হাই টেনশনের মার্কিন নির্বাচন আশঙ্কার কালোমেঘ মাথায় নিয়ে এগিয়ে চলেছে ভোটের চূড়ান্ত ক্ষণের দিকে।