মঙ্গলবারের (৩ নভেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন চিহ্নিত হয়েছে ‘হাড্ডাহাড্ডি লড়াই’ নামে। ভোররাতে মিশিগানের গ্র্যান্ড র্যাপিডসে জনসভার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রচার শেষ করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইডেন ও তার স্ত্রী, তার রানিং মেট কমলা হ্যারিস ও তার স্বামী পেনসিলভেইনিয়ায় কাটাবেন।
নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস, যাতে বিশ্বের শীর্ষ আক্রান্ত দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে এবং দুই কোটির বেশি লোক বেকার হয়েছেন। আর এবারই প্রথমবারের মতো মার্কিন নির্বাচনে সাংস্কৃতিক ও জাতিগত বিভাজনের স্পষ্ট ছাপ দেখা গেছে। নির্বাচনে কার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে বর্ণ, আঞ্চলিকা ও ভাষার প্রসঙ্গও, যা ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রসায়নকে জটিলতর করেছে।
নির্বাচনকে শঙ্কাযুক্ত করেছে বর্তমান প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্য যে, হেরে গেলেও তিনি অফিস ছাড়বেন না। নির্বাচনের নানা বিষয়ে তিনি আগে থেকেই অভিযোগের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। ‘মেল ইন’ ভোটের বিষয়ে মামলা করে হেরেছেন। উগ্র, বর্ণবাদী, শ্বেতাঙ্গ কট্টরপন্থীদের প্রতিনিয়ত সুড়সুড়ি ও উস্কানি দিচ্ছেন।
প্রতিপক্ষের বাইডেন করোনা মোকাবিলাসহ নানা ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করে মার্কিন আত্মা ও গৌরব রক্ষার আহ্বান জানাচ্ছেন।
সর্বশেষটি সহ প্রায় সবগুলো জনমত জরিপে ডেমোক্রেট প্রার্থী বাইডেনের চেয়ে পিছিয়ে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকানর ট্রাম্প। আর ১৩টি রাজ্যে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর ব্যবধান অল্প, এসব এলাকার ভোটারদের ‘দোদুল্যমান’ বলে গণ্য করে নাম দেওয়া হয়েছে ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’। এসব ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ এর ইলেকটোরাল কলেজ মিলিয়েই পাওয়া যাবে আগামী চার বছরের জন্য হোয়াইট হাউসের চাবি।
প্রচারণার শেষলগ্নে উভয় প্রার্থীই জোর দিচ্ছেন ভোটারদের নিজের পক্ষে টানার ব্যাপারে। বৈশ্বিক মহামারি থেকে উত্তরণ ও নাগরিকদের টিকা দেওয়ার অঙ্গীকারের সঙ্গে সঙ্গে ১৯৩০-এর দশকের ‘আর্থিক মহামন্দা’র পর সবচেয়ে মারাত্মক আর্থিক বিপর্যয় কাটানোর আশাবাদও শোনাচ্ছেন।
তথাপি নির্বাচনকে কেনোভাবেই শান্তিপূর্ণ বলা হচ্ছে না। পরিস্থিতি এমনই উতপ্ত হয়েছে যে, রেকর্ড সংখ্যক প্রায় ৯০ মিলিয়ন নাগরিক আগেই ভোট প্রদান সম্পন্ন করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে মুখোমুখি লড়াইয়ের উত্তেজক নির্বাচন বলা হচ্ছে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট ইলেশনকে। মাত্র একদিন পরেই জানা যাবে এমন দোদুল্যমান ও তপ্ত নির্বাচনের ফলাফল আর দেখা যাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভবিষ্যতের ছবি।