কোন পথে এগোচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
কোন পথে এগোচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি - Shera TV
বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০১:২০ অপরাহ্ন

কোন পথে এগোচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০

সেরা নিউজ ডেস্ক:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর দুই সপ্তাহ হয়েছে। বেশির ভাগ মার্কিন গণমাধ্যম পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন জয়ী হয়েছেন। তিনি রিপাবলিকান প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে ৬০ লাখ ভোট বেশি পেয়েছেন। অথচ ট্রাম্প পরাজয় মানতে নারাজ। তিনি এই বিপুল ভোটকে অস্বীকার করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ফল উলটে দিতে চাইছেন। যে কারণে যুক্তরাষ্ট্রে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে।

ট্রাম্পের প্রচারণা টিম নির্বাচনের পরদিন থেকেই ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে সরকারিভাবে ফল ঘোষণা বন্ধ রাখা, ভোট পুনর্গণনার জন্য মামলা করেছে। কিন্তু রিপাবলিকান রাজ্য হিসেবে পরিচিত জর্জিয়ায় ভোট পুনর্গণনায় জয়ী হয়েছেন বাইডেনই। তিন গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে রিপাবলিকান পার্টি ও ট্রাম্পের প্রচারণা টিমের মামলা খারিজ করে দিয়েছে আদালত। কারণ তারা ভোট জালিয়াতির কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।

আদালতে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিকল্প উপায় খুঁজছেন ট্রাম্প। শুক্রবার তিনি মিশিগান অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যাতে তারা বাইডেনের জয়কে অগ্রাহ্য করেন এবং তাকে সমর্থন করবে এমন ইলেকটরদের মনোনীত করেন। মিশিগানের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা জানিয়েছেন, ভোট জালিয়াতি বা কারচুপির কোনো প্রমাণ তারা পাননি। তারা জয়ী প্রার্থীকেই সমর্থন দেবেন।

মার্কিন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্পের আইনজীবী ও সমর্থকদের কৌশল বেপরোয়া এবং অদ্ভুত। ট্রাম্প ইতিমধ্যে জাতির অপূরণীয় ক্ষতি করে ফেলেছেন। যিনি বিশ্বাস করেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনের পর রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে তদন্তে তার বৈধ জয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হয়েছে। এখন তিনিই বাইডেনের ‘প্রেসিডেন্সিকে’ ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন। মূলত এসব প্রচেষ্টার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রকেই দুর্বল করছেন তিনি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ডানপন্থি গণমাধ্যম এবং ট্রাম্পের বিশ্বস্তরা কোনো ধরনের যৌক্তিক জয় প্রত্যাশা না করেই বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে। রাজনৈতিক বিষবাষ্প ছড়ানোর যে চেষ্টায় ট্রাম্প রয়েছেন তা তার হোয়াইট হাউজ ছাড়ার দীর্ঘ সময় পরও স্থায়ী হবে।

আলজাজিরার এক মন্তব্য প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোট জালিয়াতির অভিযোগে করা মামলায় কোনো কিছুই বদলাবে না। তাহলে এই কৌশলের পেছনে উদ্দেশ্য কি? এর বড় একটি কারণ ট্রাম্পের ‘ইগো’ এবং পরাজয় মেনে নেওয়ার অক্ষমতা।

ট্রাম্পের টিম ও রিপাবলিকান পার্টি পাঁচটি ব্যাটেলগ্রাউন্ড রাজ্য পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান, অ্যারিজোনা, নেভাদা ও জর্জিয়ার স্টেট ও ফেডারেল আদালতে এক ডজনের বেশি মামলা করেছে। রিপাবলিকান কৌশল প্রণয়নকারীরা প্রায়ই বলছেন ২০০০ সালের নির্বাচনে ফ্লোরিডায় ভোট পুনর্গণনার কথা। যেখানে রিপাবলিকান প্রার্থী জর্জ ডব্লিউ বুশ জয় পেয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। কিন্তু তারা ভুলে যাচ্ছেন যে, ঐ নির্বাচনে একটি মাত্র সুইং স্টেটে ৫০০ ভোটের প্রশ্ন ছিল। কিন্তু ২০২০ সালের নির্বাচনে পাঁচ অঙ্গরাজ্যে লাখ লাখ ভোটের বিষয় রয়েছে। যেখানে ট্রাম্প স্পষ্ট ব্যবধানেই পরাজিত হয়েছেন। অর্ধেকের বেশি মামলা ইতিমধ্যে খারিজ হয়ে গেছে। ভোট পুনর্গণনায় এক শতাংশেরও অনেক কম ভোটের হেরফের হতে পারে। সেই হিসেবে ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

ঐ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ট্রাম্প জানেন যে, তিনি নির্বাচনের ফল পরিবর্তন করতে পারবেন না। তারপরও তিনি অনড় রয়েছেন। অনেক রিপাবলিকান নেতা তাকে সমর্থন দিচ্ছেন। এর কারণ ট্রাম্প হারলেও সাত কোটি ৩০ লাখ ভোট পেয়েছেন। কোনো রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গিয়ে তার সমর্থকদের বিরাগভাজন হতে চাইছেন না।

এই কৌশলে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে লাভ দেখছে রিপাবলিকানরা। জানুয়ারিতে জর্জিয়ায় কংগ্রেশনাল নির্বাচন। এই ধারাবাহিকতায় তারা সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা চায়। ২০২২-এর নির্বাচনে তারা পুরো কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিতে চায়। আর ২০২৪ সালে হোয়াইট হাউজ। তবে সবচেয়ে আতঙ্কজনক বিষয় হলো, রিপাবলিকানরা নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ভবিষ্যত্ বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছে। সম্ভবত আগামী কয়েক মাস, এমনকি কয়েক বছর ট্রাম্পের অনুসারীরা এই মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে যাবে। এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন কমিউনিটির মধ্যে উত্তেজনা ছড়াবে। একই সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনকে চাপে রাখবে, যাতে তারা প্রগতিশীল নীতি অনুসরণ করতে না পারে।

অন্যদিকে কংগ্রেসেও রিপাবলিকানদের এই খেলা চলতে পারে। তারা স্বাস্থ্যনীতি, অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন, নারী অধিকার ও অন্যান্য ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসনের বিভিন্ন পদক্ষেপে সমর্থন নাও দিতে পারে। বাইডেন জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেও রিপাবলিকানরা ট্রাম্পের বিষাক্ত রাজনীতি অনুসরণ করছে। যে কারণে মার্কিন সমাজের বিভেদ দূর করা তার জন্য কঠিন হবে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে সামনে অশান্ত সময় আসছে সেটা ধরে নেওয়া যায়।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360