অনলাইন ডেস্ক:
অনুপ্রেরণা ও প্রভাব বিচারে বিশ্বের বর্ষসেরা ১০০ জন নারীর তালিকা তৈরি করেছে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (বিবিসি)। দুজন বাংলাদেশিও ওই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। তাঁরা হলেন সাবেক যৌনকর্মী রিনা আক্তার এবং কক্সবাজারভিত্তিক ইয়াং উইমেন লিডার্স ফর পিসের সদস্য ও শিক্ষক রিমা সুলতানা রিমু।
তালিকায় যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কভিড ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দেওয়া বিজ্ঞানী সারাহ গিলবার্ট, হলিউড অভিনেত্রী জেন ফনডা, ভারতে নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিলকিস বানু, পাকিস্তানের অভিনেত্রী মাহিরা খান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ড. সানিয়া নিশতার, ইথিওপিয়ার ফুটবলার লোজা আবেরা জেইনোর, সিয়েরা লিওনের মেয়র ইয়ভনে আকি সাভিয়্যের, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মন্ত্রী সারাহ আল আমিরি, সিরিয়ার চলচ্চিত্র নির্মাতা ওয়াদ আল কাতিয়াবের মতো ব্যক্তিরা আছেন।
বিবিসি জানায়, বিবিসির ওয়ার্ল্ড সার্ভিস ল্যাংগুয়েজ টিমগুলোর দেওয়া নামগুলো থেকে তালিকা তৈরি করেছে বিবিসির ‘হানড্রেড উইমেন টিম’। এরপর গত ১২ মাসে গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম এমন ব্যক্তিদের এবং শিরোনাম হয়নি কিন্তু সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন এমন ব্যক্তিদের বাছাই করা হয়। পরবর্তী সময়ে এ বছরের প্রতিপাদ্যের (পরিবর্তনে নেতৃত্ব দেওয়া নারী) সঙ্গে সংগতি রেখে যথাযথ নিরপেক্ষতা ও আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্ব বজায় রেখে নাম চূড়ান্ত করা হয়।
তালিকায় ১০০টি নামের মধ্যে একটি ‘আনসাং হিরো’। অসাধারণ এ বছরে অন্যের সেবায় ও সহযোগিতায় নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া বিশ্বের অগণিত নারীর প্রতি সম্মান জানাতে তালিকায় প্রথমেই রাখা হয়েছে ‘আনসাং হিরোকে’।
বাংলাদেশি রিনা আক্তারের সম্পর্কে বিবিসির বর্ণনায় বলা হয়েছে, মাত্র আট বছর বয়সে তাঁর এক আত্মীয় তাঁকে যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দিয়েছিল। সেখানেই তিনি বেড়ে ওঠেন ও পরে যৌনকর্মীতে পরিণত হন। কিন্তু এখন তিনি অন্য যৌনকর্মীদের জীবনমানের উন্নয়নে কাজ করছেন। করোনা মহামারির সময়ে রিনা ও তাঁর দল ঢাকায় প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৪০০ যৌনকর্মীকে খাবার সরবরাহ করেছেন। এই যৌনকর্মীরা মহামারির কারণে অর্থনৈতিক দুরবস্থায় পড়েছেন।
অন্যদিকে রিমা সুলতানা রিমুর কক্সবাজারভিত্তিক ‘ইয়াং উইমেন লিডার্স ফর পিস’ কর্মসূচি ‘গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব উইমেন পিসবিল্ডার্সের’ মূল উদ্দেশ্য হলো সংঘাতসংকুল দেশগুলো থেকে আসা তরুণ নারীদের ক্ষমতায়ন করা, যাতে তাঁরা নেতৃত্ব দেওয়া ও শান্তির দূতে পরিণত হবেন।
রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মোকাবেলায় রিমা তাঁর মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন। রোহিঙ্গা শরণার্থী, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের, যাদের শিক্ষার সুযোগ নেই তাদের জন্য লিঙ্গ সংবেদনশীল ও বয়সভিত্তিক সাক্ষরতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তিনি। রিমা রেডিও ব্রডকাস্ট ও থিয়েটার পারফরম্যান্সের মাধ্যমে নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে জাতিসংঘের সিদ্ধান্তগুলো সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতেও কাজ করেছেন।
সেরা নিউজ/আকিব