স্টাফ রিপোর্টার:
৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবস। দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন।
স্বাধীন বাংলাদেশে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও গণতন্ত্রের বিজয় ইতিহাসের একটি অবিস্মরণীয় দিন।
১৯৯০ সালের এদিনে ছাত্র-জনতার উত্তাল গণআন্দোলনের মুখে পতন হয় সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের। দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ ফিরে পায় তাদের কাঙ্খিত গণতন্ত্র।
১৯৮২ সালে এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে সামরিক শাসন কায়েম করেন। এরশাদের স্বৈরশাসনের এক বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ১৯৮৩ সালের প্রথমার্ধে যুব ও ছাত্রসমাজ শুরু করে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন। দীর্ঘ ৮ বছর তারা রাজপথে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করে এরশাদের পতন ঘটায়। এই স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলে ছাত্র, যুব, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ জীবন দেন।
এরশাদবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে রাজপথে প্রাণ দিতে হয় নূর হোসেন, টিটো, সেলিম, তাজুল, দেলোয়ার, দিপালী, ডা. মিলন, ফিরোজ, ময়েজউদ্দন, বসুনিয়া, জাহাঙ্গীরসহ আরও অনেককে। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ৮ দল, বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দলীয় এবং জাসদ নেতৃত্বে ৫ দলীয় জোট সম্মিলিতভাবে স্বৈরাচার এরশাদ বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুগপথ আন্দোলনে নামে ছাত্র, যুব, শ্রমিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। আন্দোলন দমনে চলে খুন, হত্যা, জেল, জুলুম, নির্যাতন। রক্তের সিঁড়ি বেয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের ঢেউয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকার রাজপথ।
এরশাদের পতন ত্বরান্বিত ও গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি হয় ১৯৯০ সালের ১৯ নভেম্বর। এদিনই তিনটি জোট ঐক্যবদ্ধভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করেন।
এর ইতিবাচক দিকটি হলো এরশাদের পতন ত্বরান্বিত করতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এক টেবিলে বসে আন্দোলনের ছক আঁকেন। সঙ্গে থাকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। জনতার সম্মিলিত আন্দোলনে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। স্বৈরাচারের পতনের মধ্য দিয়ে গণআন্দোলনের ও গণতন্ত্রের বিজয় সুচিত হয় ৷
সেরা টিভি/আকিব