স্পোর্টস ডেস্ক:
ম্যাচের শেষ ওভার, জয়ের জন্য ৪ বলে ৯ রান প্রয়োজন বেক্সিমকো ঢাকার। আগের বলে ছক্কা হজম করেছেন বোলার কামরুল ইসলাম রাব্বি। পরের বলের জন্য তাকে পরামর্শ দিতে রীতিমত জটলা বেঁধে গেল বোলিং মার্কের সামনে। তবে সেখানে ছিলেন না দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল, রাব্বিকে ঘিরে রেখেছিলেন মেহেদি মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, সাইফ হাসান ও সুমন খান।
অবশ্য তামিম থাকবেনই বা কী করে? ফরচুন বরিশালের ফিল্ডিং ইনিংসের শুরু থেকেই যে তিনি ছিলেন মাঠের বাইরে! তার বদলে পুরো ফিল্ডিং ইনিংসটা অধিনায়কত্ব করেছেন দলের অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ। বিপিএলে নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতা থাকায় মিরাজের ওপরই ভরসা করেছিল বরিশাল।
কিন্তু প্রশ্নই থেকেই যায়, ব্যাটিং করার পর হঠাৎ কী হলো যে ফিল্ডিংয়ে নামলেন না তামিম? পুরো ব্যাটিং ইনিংসে তো কোনো চোট বা ইনজুরির চিহ্ন দেখা যায়নি। তাহলে কি ড্রেসিংরুমে ফেরার পর কোনো সমস্যা হলো তার? এমন অনেক কৌতূহলী প্রশ্নের উদ্ভব ঘটে তামিম মাঠে না নামায়।
এরই মধ্যে খবর চাউর হয়ে যায়, মাঠে অতিরিক্ত কুয়াশা পড়ায়, ঠাণ্ডা লাগার ভয়ে ফিল্ডিং করতে নামেননি বরিশাল অধিনায়ক। অথচ ম্যাচটি ছিল বরিশালের জন্য ডু অর ডাই; এই ম্যাচটি ঢাকা ১৮.৩ ওভারের মধ্যে জিতে গেলে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যেতে হতো বরিশালকে।
শেষপর্যন্ত ম্যাচটি জিততে পারেনি ঢাকা। নাঈম শেখের সেঞ্চুরি বিফলে যাওয়া সেঞ্চুরির ম্যাচটি মাত্র ২ রানের ব্যবধানে জিতেছে বরিশাল, পেয়েছে প্লে-অফের টিকিট। কিন্তু খটকা থেকেই যায়। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পুরো দলের দায়িত্ব তরুণ এক খেলোয়াড়ের হাতে ছেড়ে দিয়ে স্রেফ ঠাণ্ডা লাগার ভয়ে ফিল্ডিং করেননি অধিনায়ক তামিম?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ খবর ছড়িয়ে গেলে শুরু হয় একের পর এক তীর্য্যক প্রশ্ন, সমালোচনার ঢেউ ধেয়ে আসে তামিমের দিকে। প্রশ্ন উঠতে থাকে তামিমের দায়িত্বজ্ঞান নিয়েও। শেষপর্যন্ত বরিশাল অধিনায়ক নিজেই অবসান ঘটিয়েছেন বিতর্কের, জানিয়েছেন ফিল্ডিং না করার কারণ।
ফরচুন বরিশালের পক্ষ থেকে সরবরাহকৃত এক অডিওবার্তায় তামিম জানিয়েছেন, মূলত শরীর দুর্বল লাগায় বিসিবির মেডিকেল টিমের পরামর্শেই মাঠে নামেননি তিনি। মাঠে নামার সুযোগও ছিল না তার। করোনা সতর্কতার কারণে সোজা হোটেলেই পাঠিয়ে দেয়া হয় তাকে, যেখানে আপাতত আইসোলেটেড অবস্থায় আছেন তিনি।
তামিম বলেছেন, ‘আমার কালকে থেকেই শরীর খারাপ লাগছিল। তো আজকে সকালে একটু ভালো মনে হয়েছে। আজকে ব্যাটিং করে আউট হয়ে আসার পর একটু বেশিই দুর্বল লাগা শুরু হইছে। তখনই বিসিবির যে মেডিকেল স্টাফ আছে, উনারা এসে আমার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছে এবং উনারাই মনে করেছেন যে, ঐ সময় আমার ড্রেসিংরুমে থাকাটা ঠিক হবে না।’
রোববার সকালে করোনাসহ সবধরনের পরীক্ষা করানো হবে তামিমের। পরীক্ষাগুলোতে উৎরে গেলেই প্লে-অফ খেলতে পারবেন তামিম। এ কথাও জানিয়েছেন তিনি নিজেই, ‘আমাকে তখন হোটেলে পাঠিয়ে দেয়া হয়, আইসোলেশনে। কালকে (রোববার) আবার সব পরীক্ষা করা হবে। আল্লাহ্র রহমতে যদি সব পরীক্ষার ফল ঠিক থাকে, আমি আশা করি যে সেমিফাইনাল (প্লে-অফ) ম্যাচটি খেলতে পারব।’
উল্লেখ্য, ঢাকার বিপক্ষে ২ রানে জেতায় কোনো সমীকরণের ধার ধারতে হয়নি তামিমের দলকে। নিজেদের আট ম্যাচ থেকে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সরাসরি প্লে-অফে চলে গেছে তারা। সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) এলিমিনেটর ম্যাচে আবার ঢাকার বিপক্ষেই নামতে হবে তাদের।
সেরা টিভি/আকিব