বিশেষ প্রতিবেদক:
অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীরকে সভাপতি ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদিক আবদুল্লাকে সাধারণ সম্পাদক করে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ কমিটি গঠিত হয় ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মহানগর কমিটির মেয়াদ তিন বছর। তবে ৭৫ সদস্যবিশিষ্ট এই পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন মিলেছে ১ বছর ২২ দিন পর গত শুক্রবার।
রোববার (৩ জানুয়ারি) রাত ৯টায় বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আবদুল্লাহ পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়।
কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ ছাড়াও তার পরিবারের অন্তত চারজন স্থান পেয়েছেন। তারা হলেন- সাদিক আবদুল্লাহর স্ত্রী লিপি আব্দুল্লাহ, মামা কাজী নজরুল ইসলাম মনু, চাচা (চাচাতো) আমান সেরনিয়াবাত ও ফুফাতো ভাই মোস্তফা কামাল।
দলের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনে একেএম জাহাঙ্গীরকে সভাপতি ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদিক আবদুল্লাকে সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক নির্বাচিত হন। কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় এতদিন দুই নেতা চালাচ্ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগ। গত ১ জানুয়ারি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই কমিটি অনুমোদন দেন। যা রোববার রাতে প্রকাশিত হয়।
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ কমিটিতে থাকা একাধিক নেতার দাবি, নতুন কমিটিতে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি করা হয়েছে । এতে দল আগের তুলনায় আরও বেশি শক্তিশালী এবং গতিশীল হবে।
তবে পদ ও কমিটিতে ঠাঁই না পাওয়া নেতারা মনে করেন, মহানগর আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটিতে প্রাধান্য পেয়েছে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারীরা। কমিটিতে ত্যাগী ও দীর্ঘদিন ধরে সংগঠন করা অনেক নেতারই ঠাঁই হয়নি।
এ বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘দলের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদেরই যথাস্থানে মূল্যায়ন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর হলেও কমিটি প্রকাশের পর কর্মীদের মধ্যে চাঙ্গাভাব দেখা গেছে।’
সাদিক আবদুল্লাহর পরিবারের চার সদস্যের নাম থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যোগ্যতার ভিত্তিতেই তারা দলে আছেন বা অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। তাদের কারণে দল আরও বেশি শক্তিশালী ও গতিশীল হবে।’
মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রয়েছেন-
সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর এবং সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। কমিটির ১১জন সহ-সভাপতি হলেন, অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম, অ্যাডভোকেট কেবিএস আহম্মেদ কবির, গাজী নঈমুল হোসেন লিটু, আনোয়ার হোসাইন, আমীর হোসেন তালুকদার, সাইদুর রহমান রিন্টু, ইঞ্জিনিয়ার হেমায়েত উদ্দিন খান, নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নাসির আহম্মেদ বাবুল, আবুল ফারুক হুমায়ুন ও বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য জেবুন্নেসা আফরোজ।
কমিটিতে হাসান মাহমুদ বাবু, কাজী মুনির উদ্দিন তারিক এবং অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার রাজিবকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। আইন বিষয়ক সম্পাদক হয়েছেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ গোলাম মাসুদ বাবলু, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রাশেদ শাহনেওয়াজ খান রানা, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন ফিরোজ, দফতর সম্পাদক হেমায়েত উদ্দিন সেরনিয়াবাত সুমন, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা সাইদুর রহমান কাশেমী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. চান মিয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম ঝন্টু, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর শাহনাজ পারভীন মিতা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এ এম জি কবির ভুলু, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মো. মাসুদ খন্দকার, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল, শ্রম সম্পাদক কায়সার হোসেন শিপন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান এবং স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক জহুরুল হক। ৩জন সাংগঠনিক সম্পাদক যথাক্রমে সৈয়দ নুর উদ্দিন শাহিন, এম. জাহিদুর রহমান মনির ও শেখ সাইদ আহম্মেদ মান্না। উপ-দফতর সম্পাদক পাপ্পা দাস, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জনি এবং কোষাধ্যক্ষ তৌহিদুল ইসলাম।
কমিটির ৩৬ জন সদস্য হলেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম তোতা, আমান সেরনিয়াবাত, কাজী নজরুল ইসলাম মনু, অ্যাডভোকেট আনিচ উদ্দিন শহিদ. অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন, নিজামুল ইসলাম নিজাম, অ্যাডভোকেট গোলাম কবির বাদল, এসএম জাকির হোসেন, ফরহাদ-বিন আলম জাকির, মেহেদী হাসান চৌধুরী বাদল, ফজুলল করিম শাহিন, মেজবাহ উদ্দিন জুয়েল, পরিমল চন্দ্র দাস, কামরুজ্জামান কারুন, মোস্তাফিজুর রহমান টুটু, কামরুল আহসান, আজিম সরোয়ার দিদার, আখতারুজ্জামান গাজী হিরু, অ্যাডভোকেট সামছুন্নহার মুক্তি, মেয়র সহধর্মীনি লিপি আবদুল্লাহ, মাহাবুব মোর্শেদ শামিম, মীর মিজানুর রহমান সোহেল, এটিএম শাহিদুল্লাহ কবির, হারুন-অর রশিদ, নজরুল ইসলাম নিলু, শরীফ মো. আনিছুর রহমান, শেখ মিজানুর রহমান দিপু, মজিবুর রহমান মৃধা, মজিবুর রহমান পনু, মোস্তফা কামাল, একেএম মোস্তফা সেলিম, কবির হোসেন, আফতাব হোসেন, মো. মেহেদী পারভেজ খান আবির এবং শেখ আরাফাত হোসেন বাবু।
সেরা টিভি/আকিব