স্টাফ রিপোর্টার:
দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। বাংলা ও বাঙালির স্বাধীনতা ও স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যেই মূল দল আওয়ামী লীগের জন্মের এক বছর আগেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল গৌরব ও ঐতিহ্যের এই ছাত্র সংগঠন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার নেতৃত্বেই ঐ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়। করোনাভাইরাসের কারণে এবার সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হবে।
তৎকালীন তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেরণা ও পৃষ্ঠপোষকতায় একঝাঁক মেধাবী তরুণের উদ্যোগে সেদিন যাত্রা শুরু করে ছাত্রলীগ। ৭৩ বছরে ছাত্রলীগের ইতিহাস হচ্ছে জাতির ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা, মুক্তির স্বপ্ন বাস্তবায়ন, স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনা, গণতন্ত্র প্রগতির সংগ্রামকে বাস্তবে রূপদানের ইতিহাস। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল সংগ্রামে ছাত্রলীগ নেতৃত্ব দিয়েছে এবং চরম আত্মত্যাগের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে।
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা বাঙালি জাতির ইতিহাসে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্রলীগ। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে ১৪৪ ধারা ভেঙে বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে বাঙালির ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা, চুয়ান্নর সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, আটান্নর আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছিষট্টির ৬ দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে পাকিস্তানি শাসককে পদত্যাগে বাধ্য করা এবং বন্দিদশা থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করা, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা-পরবর্তী সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণসহ প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগের অসামান্য অবদান দেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনের নেতাকর্মীরা পরে জাতীয় রাজনীতিতেও নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখনো দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান জাতীয় রাজনীতির অনেক শীর্ষ নেতার রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছে ছাত্রলীগ থেকে। ছাত্রলীগ জন্মলগ্ন থেকে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। করোনা ভাইরাস মহামারিকালেও সাধারণ মানুষের পাশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়েছেন। তারা মৃতদেহ সত্কার করেছেন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক বিতরণসহ করোনাকালে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজ করেছে ছাত্রলীগ। কোথাও অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাব দেখা দিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিনা মূল্যে সেটি সরবরাহ করেছেন। বোরো মৌসুমে হাওরাঞ্চলে ধান কাটা শ্রমিকের অভাব দেখা দিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধান কেটে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন।
সেরা টিভি/আকিব