অনলাইন ডেস্ক:
বৃটেনে সম্প্রতি শনাক্ত হওয়া করোনা ভাইরাসের অতি উচ্চ মাত্রায় সংক্রামক স্ট্রেইন মার্চের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহভাবে সংক্রমিত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন । এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, সম্প্রতি বৃটেনে যে করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন শনাক্ত করা হয়েছে, তা মূল ভাইরাসের চেয়ে শতকরা ৭০ ভাগ বেশি সংক্রামক। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সতর্ক করেছে যে, সামনের কয়েক সপ্তাহে নতুন করোনাভাইরাসের বিস্তার দ্রুতগতিতে ঘটতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে । এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। সিডিসি আরো বলেছে, এমনিতেই শীতের মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারাবিশ্বে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহভাবে দেখা দিয়েছে। তার উপর বৃটেনের নতুন করোনাভাইরাস স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর অতিরিক্ত হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে । এমন অবস্থার প্রেক্ষিতে শুক্রবার কথা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেন।
২০ জানুয়ারি তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। তার আগে করোনাভাইরাস ও এর ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি প্রণোদনা প্যাকেজ প্রস্তাব করেছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেন। তার ক্ষমতার মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনে ১০ কোটি মার্কিনিকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, তার প্রশাসন পদক্ষেপ আরো জোরালো করবে।
নতুন পরিকল্পনায় তিনি বলেছেন, গণহারে টিকা দেয়ার জন্য আরো নতুন নতুন টিকাদান কেন্দ্র খুলবেন, অতিরিক্ত স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ দেবেন, সব মার্কিনিকে এই টিকা দেয়া হবে। এরমধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সবাইকে করোনা মহামারি থেকে রক্ষা করার জন্য তিনি তার এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
সরকারি তথ্যমতে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনার টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে ১ কোটি ২২ লাখ মানুষের উপর। এই সংখ্যাকে অপর্যাপ্ত বলে এর সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত বাইডেন। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যের বিতরণ করা হয়েছে কমপক্ষে তিন কোটি টিকা। বাইডেন বলেছেন, আমরা এখনো অন্ধকারময় শীত মৌসুমের মধ্যে অবস্থান করছি। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার আগেই মারাত্মক অবনতির দিকে যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্র । এ পর্যন্ত যত সব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, টিকাদান কর্মসূচি তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং। পর্যন্ত সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসে যে পরিমাণ মানুষ আক্রান্ত এবং মারা গেছেন তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সংখ্যা সর্বোচ্চ। যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ২ কোটি ৩৫ লাখ মানুষ । মৃতের সংখ্যা ৩ লাখ ৯১ হাজার। বিশ্বে করোনা ভাইরাসে এ পর্যন্ত যত মানুষ মারা গিয়েছেন, তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রেএক পঞ্চমাংশ। অর্থাৎ বিশ্বে করনা ভাইরাসে মারা যাওয়া প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজন হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের । শুক্রবার সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০ লাখ। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভয়াবহ ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে নভেম্বরের পর করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা শতকরা ১ হাজার ভাগেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ অবস্থার প্রেক্ষিতে সিডিসি সতর্ক করেছে যে বৃটেনে করোনাভাইরাসের অতি ঝুঁকিপূর্ণ যে ভেরিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে, তা সামনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অতি দ্রুত গতিতে যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমিত হতে পারে।
সেরা টিভি/আকিব