অনলাইন ডেস্ক:
জুলকারনাইন সায়ের খান ওরফে সামিউল আহমেদ খান ওরফে সামি। দেশে বর্তমানে আলোচিত এই নাম। কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরায় বাংলাদেশ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর আলোচনায় আসেন এই সামি। বাংলাদেশবিরোধী চক্রান্তের সঙ্গে সামির নাম অনেক দিন ধরেই আলোচিত হচ্ছে। অথচ এই সামিকেই কিনা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম! থানাপুলিশ নাকি এই সামির ঠিকানা খুঁজে পায়নি।
অথচ অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার ছেলে সামির বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এমনকি পুলিশের হাতে আগে তিনি গ্রেফতারও হয়েছেন। কাউকে না জানিয়ে ওসি কীভাবে এই মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দিলেন, তা নিয়েই পুলিশে তোলপাড় চলছে।
কেন তাকে অব্যাহতি দেওয়া হলো—অনুসন্ধান করতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি ঐ মামলা অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
তবে রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্তে তার প্রকৃত ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়নি, এ কারণে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’ এমন একজন আলোচিত ব্যক্তির ঠিকানা খোঁজার প্রকৃত চেষ্টা কি পুলিশের পক্ষ থেকে ছিল, নাকি অন্য কোনো বিষয় এর সঙ্গে জড়িত—জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, ‘বিষয়টি এখন পুলিশ সদর দপ্তরের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। যদি এর মধ্যে অন্য কিছু ধরা পড়ে, তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ এই সামি রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছেন।’
জানা গেছে, সামির প্রকৃত নাম সামিউল আহমেদ খান। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল মো. আবদুল বাসেত খান। চার সন্তানের মধ্যে সামিউল আহমেদ খান সবার বড়। ১৪ বছর বয়সে সামি মাকে হারায়। এর দুই বছর পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সত্-মায়ের সংসার থেকেই অন্ধকার জগতে পা বাড়ান সামি। ক্যাডেট কলেজ থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর ভর্তি হন কুমিল্লার ইস্পাহানি স্কুলে।
১৫-১৬ বছর বয়স থেকে ড্রাগ নেওয়া, মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাসহ নানা অপরাধে যুক্ত হন তিনি। নিজেকে সেনা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়েই এক সেনা কর্মকর্তার মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন সামি। অ্যান্টেনা ভাঙা ভিএইচএফ (ওয়াকিটকি) নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেওয়ার নামে কয়েকজনের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও ছিল সামির বিরুদ্ধে। শ্বশুরের অর্থে হাঙ্গেরিতে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করার পর বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হন সামি।
সেরা টিভি/আকিব