সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশও কোভিড-১৯ এর প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য সারা দেশে গত এক বছর ধরে বিভিন্ন মেয়াদে চলেছে লকডাউন। যার ফলে দীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ রয়েছে। কিন্তু ২০২০ সালের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠান না কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল প্রতিষ্ঠানেই আটকে থাকা পরীক্ষা গুলো নেয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু তারপর আবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা আবার বন্ধ করে দেয়া হয়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বাংলাদেশেও লেগেছে। যার ফলে আবারো চলছে লকডাউন। ২৪ মে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও তা বোধয় আর খুলছে না।
এ অবস্থায় দেশের ছাত্র ছাত্রীর একটা বিরাট অংশ পড়াশোনা থেকে ছিটকে পড়ছে। তারা হয়ত ঝরেও যেতে পারে। তার উপর আবার পরিবার গুলোর অর্থনৈতিক অবস্থাও দিন দিন খারাপ হয়ে যাওয়ার কারনে প্রতিষ্ঠান খুললেও আর হয়ত অনেকের ফেরা হবে না নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অনেক ছাত্রের গ্রাজুয়েশন আটকে আছে একটা দুটো পরীক্ষার জন্য কারো আবার পোস্ট গ্রাজুয়েশন। এতে করে একটা বিশাল সংখ্যক ছাত্র ছাত্রী হতাশয় ও ডিপ্রেশনে ভুগছেন। আবার করনার কারনে দেশের কর্মক্ষেত্রে গুলোর অবস্থায়ও ভাল নয়। যার ফলে একটা বড় অংশ আবার ঝুকছে নেশার দিকে। ফলে আমরা সামনে একটা বড় সংখ্যক লাইনচ্যুত জনসংখ্যা পেতে চলেছি।লম্বা সেসন জট ওচাকুরির বয়স নিয়েও অনেকে চিন্তিত। কিন্তু এমতাবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রনালয় কোন পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত দিতে পারছেনা।
আবার আমাদের শিক্ষকদের মাঝেও রয়েছে এ নিয়ে উদাশীনতা। এত বড় একটা বিপর্যয়ের মুখে পরতে চলেছে শিক্ষা ব্যাবস্থা তারপরেও তারা নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন।তার এর দ্বায়ভার কিন্তু এরাতে পারে না।একটা দেশের ক্রান্তীকালে এগিয়ে আসে শিক্ষক সমাজ কারন তারা জাতির বিবেক। সকল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা মিলে একটি পরিকল্পিত নিতিমালা শিক্ষা মন্ত্রনালয় এর নিকট পেশ করতে পারেন যা হতে পারে ছাত্র সমাজের জন্য একটি মাইল ফলক। কিন্তু তারা সেটা করছে না। এথেকেই বোঝা যায় তারা এদেশের শিক্ষা ব্যাবস্থা নিয়ে কতটা ভাবেন। তারা নিছকই চাকুরি করেন শিক্ষকতা করেন না এটা স্পষ্ট। এই মানুষিকতা পরিহার করা এখন বাঞ্চনীয় হয়ে পরেছে। তা না হলে এর মাসুল দিতে হবে কয়েক যুগ ধরে। কিন্তু তারা এটা কেন করছেন তাও বোধগম্যা নয়। এখনও সময় আছে এই অভিশাপ থেকে জাতীকে মুক্ত করার। শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও শিক্ষক সমাজ মিলে একটি স্পষ্ট নিতিমালা করে পরিকল্পিত ভাবে এগোলে আমারা হয়ত এর থেকে মুক্ত হতে পারব। আশা করি শিক্ষক সমাজ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় এটা ভেবে দেখবেন।
ইমরান নূর নীরব
সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী
বরিশাল মহানগর এবং সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি।