স্পোর্টস ডেস্ক:
ফুটবলের কালো মানিক পেলের পুরো নাম এডসন আরান্তেস নসিমেন্ত। তিনবার বিশ্বকাপ জয়ী (১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০) পেলে ১৯৭১ সালে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলা শেষ করেন। পেলে যখন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ফুটবল হতে সরে আসেন তখন আর্জেন্টিনার লিওনেল আন্দ্রেস মেসির জন্মও হয়নি। মেসি জন্মেছেন ১৯৮৭ সালে। বয়সের ব্যবধান কতো বেশি! ফুটবলের এই দুই মহাতারকা হঠাৎ করেই আলোচনায় এসে গেলেন।
ব্রাজিলে অনুষ্ঠানরত কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে রবিবার আর্জেন্টিনা ৩-০ গোলে হারিয়েছে ইকুয়েডরকে। এই ম্যাচেই মেসির মন্ত্রমুগ্ধ পারফরম্যান্সের কারণে পেলের সঙ্গে মেসির আলোচনা শুরু হয়েছে। পেলের রেকর্ড ভাঙতে চলেছেন মেসি। আর একটি গোল হলেই পেলের রেকর্ড স্পর্শ করে ফেলবেন তিনি। আর দুই গোল করলে পেলেকে ছাড়িয়ে যাবেন ফুটবলের খুদে জাদুকর মেসি।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে পেলে ৯২ ম্যাচ খেলে ৭৭ গোল করেছেন। সেই রেকর্ড স্পর্শ করতে মেসি এখন জীবন্ত কিংবদন্তী পেলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন। মেসি ১৪৯ ম্যাচ খেলে ৭৬ গোল করেছেন। রবিবার ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচের তৃতীয় গোলটি করে মেসি এখন পেলের একহাত দুরে অবস্থান করছেন। কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনা সেমিফাইনালে খেলবে। জিতলে ফাইনালে উঠবে। দুই ম্যাচ খেলতে পারলে মেসি গোলের দেখা পাবেন, মেসি ভক্তরা সেটা ধরেই নিচ্ছেন।
পেলেকে ছাড়িয়ে যেতে আরো একটি রেকর্ডের মুখে মেসি। ব্রাজিলের জার্সিতে পেলের হ্যাটট্টিক ৭টি, আর মেসির হ্যাটট্টিক ৬টি। গতকাল ভোরে আর্জেন্টিনাকে কোপার সেমিফাইনালে তুলে রেকর্ডের কথা উঠতেই ম্যাচ শেষে বিনয়ী মেসি বলে দিয়েছেন তিনি রেকর্ড করার জন্য খেলছেন না। বলেন, ‘আমি সব সময় বলে আসছি ব্যক্তিগত রেকর্ড আমার কাছে মুখ্য নয়। এটা পরের ব্যাপার। আমরা আর্জেন্টিনায় এসেছি কিছু একটা করার জন্য। আমি আমার খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানাই তারা সঠিকভাবে দলের জন্য কাজটা করে যাচ্ছে। আমরা পরিবার হতে অনেক দূরে অবস্থান করছি। আমরা এখন সেমিফাইনাল নিয়ে ভাবছি। এখানে দুটো সাফল্যের কথা ভেবে পারফরম্যান্স নষ্ট করতে চাই না।’
রবিবারের ম্যাচে ফ্রি কিক হতে ৫৮তম গোল করেন মেসি। কোপায় মেসির অনবদ্য পারফরম্যান্স ছিল। পাঁচ খেলায় চার গোল করেছেন। দুই গোল ফ্রিকিক হতে করেন। চারটা গোল করিয়েছেন, চার খেলায় ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন, পনেরবার গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন। কিন্তু আফসোস হচ্ছে এই ছয় বার ব্যালন ডিঅর জয়ী মেসি তার আর্জেন্টিনাকে ট্রফি এনে দিতে পারেননি। অথচ ক্লাব ফুটবলে বার্সেলোনাকে সব ধরনের ট্রফি এনে দিয়েছেন তিনি। নিজ দেশকে বিশ্ব ফুটবলের মঞ্চ হতে ট্রফি এনে দিতে না পারার আক্ষেপ আছে তার। মেসির ছন্দময় ফুটবলেই ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলয় বিদায় নেওয়া আর্জেন্টিনার মেসি কি পারবেন কাতার ২০২২ বিশ্বকাপ জয় করতে।
সেরা টিভি/আকিব