স্টাফ রিপোর্টার:
হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান, কোতয়ালী থানার ওসি নুরুল ইসলাম এবং ৫ জন আনসার সদস্যসহ ১১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
শুনানি শেষে আদালত মামলা দুটি গ্রহণ করে অভিযোগ তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে গত বুধবারের ঘটনায় পুলিশ এবং ইউএনও’র দায়ের করা দুই মামলায় গ্রেফতার আওয়ামী লীগের ১৮ নেতাকর্মীর জামিন না মঞ্জুর করে তাদের সু-চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সদর ইউএনও মুনিবুর রহমান, কোতয়ালী মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম, কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক শাহজালাল মল্লিক এবং ইউএনও’র বাসায় দায়িত্বরত ৫ আনসার সদস্যের পদ উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করে রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বরিশাল অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি নালিশী আবেদন করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও জেলা আইনজীবী সমিতির সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন।
অপরদিকে, সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার বাদী হয়ে সদর ইউএনও ও তার বাসার নিরাপত্তার দায়িত্বরত ৫ আনসার সদস্যের পদ উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করে একই আদালতে আরেকটি মামলার আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মাসুম বিল্লাহ শুনানি শেষে বিকাল সাড়ে ৪টায় আদেশ দেন।
আদালত মামলা গ্রহণ করে অভিযোগ তদন্তপূর্বক আগামী ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য পিবিআই বরিশালের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির কামরুল হাসান।
দুটি মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সরকারি কাজে বাধা প্রদান এবং মেয়র সাদিক আবদুল্লাহসহ অন্যান্যদের গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী তালুকদার ইউনুস এবং দিলীপ ঘোষ।
এদিকে, গত বুধবারের ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানায় দায়ের হওয়া দুই মামলায় গ্রেফতারকৃত ২১ জনের মধ্যে ১৮ জনের জামিনের জন্য রবিবার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। আদালত শুনানি শেষে তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন এবং একই সাথে বিচারক মাসুম বিল্লাহ কারাভ্যন্তরে আসামিদের সু-চিকিৎসার নির্দেশ দেন বলে জানান গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের আইনজীবী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম মাসউদ বাবলু।
পোস্টার-ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে গত বুধবার রাতে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অর্ধ-শতাধিক মানুষ গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়। এ ঘটনায় পরদিন ১৯ আগস্ট কোতয়ালী মডেল থানায় উপ-পরিদর্শক শাহজালাল মল্লিক বাদী হয়ে একটি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান বাদী আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ’কে প্রধানসহ দুটি মামলায় মোট ৬০২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় সব শেষ গত শনিবার রাতে নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস মুন্সিকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ নিয়ে ওই দুই মামলায় বরিশালে ২২ জন গ্রেফতার হয়েছে।
অপরদিকে, দুই মামলার আরেক আসামি নগরীর ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইয়েদ আহমেদ মান্নাকে গত শুক্রবার রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
সেরা টিভি/আকিব