কোর্ট রিপোর্টার:
দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে বিলাসবহুল বাড়ি ও গাড়ীর মালিকের সংখ্যা এখন অসংখ্য। কানাডার বেগমপাড়ায় ব্যবসায়ি, আমলা, রাজনীতিক নেতাদের নামও অনেক সময় উঠে এসেছে। দুদক থেকে অর্থ পাচারকারীদের ব্যাপারে দ্রুত কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় উচ্চ আদালত উষ্মা প্রকাশ করেছেন। যত্রতত্র ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের ছুটে বেড়ানোর ঘটনায় হাইকোর্ট বলেছেন, যারা দেশের বাইরে বেগমপাড়া করছেন, যারা মালয়েশিয়া, আমেরিকাতে টাকা পাঠাচ্ছেন, এগুলো হলো বড় বড় মানি লন্ডারিং। তাদের ধরুন। ২২ মামলার আসামি, বিদেশে অর্থপাচারের ঘটনায় দুদকের মামলায় যুবলীগের নেতা মিল্টনের আগাম জামিনের শুনানিকালে গতকাল রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম জাহিদ সারোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই অভিমত ব্যক্ত করেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
দিনাজপুর জেলা যুবলীগ নেতা খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টনের জামিন আবেদনের শুনানিকালে আদালত দুদক আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন যদি এভাবে ছুটে তাহলে দেশের উন্নয়ন হবে কিভাবে? যারা দেশের বাইরে বেগমপাড়া করছেন, যারা মালয়েশিয়া, আমেরিকা টাকা পাঠাচ্ছেন, এগুলো হলো বড় বড় মানি লন্ডারিং। তাদের ধরুন।
এরপর আদালত অর্থপাচার মামলায় খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টনকে আট সপ্তাহের জামিন দেন। তবে জামিনের শর্ত হিসেবে আসামিকে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে এবং তিনি দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না বলেও আদেশ দিয়েছেন আদালত।
পরে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, দিনাজপুরের সোনালী ব্যাংকের যে ব্রাঞ্চের কথা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে ওই ব্রাঞ্চের কোন অস্তিত্ব নেই। অথচ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে ১৪ কোটি ৭১ লাখ ৭৩ হাজার ২১৮ টাকার জমা করেছেন খলিলুল্লাহ আজাদ। বিভিন্ন সময়ে তিনি এই টাকা উত্তোলন করেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। জানা গেছে, খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টন আরও প্রায় ২২টি মামলায় জামিনে আছেন। জেলে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে মোট চার মাসে ১৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি খলিলুল্লাহ আজাদের পরিবার থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় যে, চার মাসের ব্যবধানে খলিলুল্লাহ আজাদ মিল্টনের বিরুদ্ধে পুলিশ ১৬টি মামলা দিয়েছে। এক মামলায় জামিন হলে অন্য মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে খলিলুল্লাহকে কারাগার থেকে বের হতে দিচ্ছে না পুলিশ। তবে সেসব অভিযোগ অস্বীকার করে গত ২ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুরের পুলিশ কর্মকর্তা পাল্টা প্রতিবাদ জানান।