প্রশংসায় ভাসছেন ছাত্রীর বাচ্চা কোলে নিয়ে ক্লাস করানো সেই শিক্ষক - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
প্রশংসায় ভাসছেন ছাত্রীর বাচ্চা কোলে নিয়ে ক্লাস করানো সেই শিক্ষক - Shera TV
সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন

প্রশংসায় ভাসছেন ছাত্রীর বাচ্চা কোলে নিয়ে ক্লাস করানো সেই শিক্ষক

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৪ অক্টোবর, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক:

হোয়াইট বোর্ডে লেখা শুরু করলেন শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের বললেন সেটি খাতায় তুলতে। এক ছাত্রী ছাড়া সবাই খাতা নিয়ে লিখতে শুরু করল। এদিক-ওদিক তাকানো ওই ছাত্রীকে খেয়াল করলেন শিক্ষক। দেখলেন ওই ছাত্রীর কোলে একটি শিশু। লেখার মতো অবস্থা নেই তার। এগিয়ে গিয়ে শিশুটিকে কোলে নিয়ে ছাত্রীকে লেখার সুযোগ করে দিলেন। ছাত্রীর শিশুসন্তানকে কোলে নিয়েই হোয়াইট বোর্ডে লিখে চললেন শিক্ষক।

এক পর্যায়ে ওই শিক্ষক হোয়াইট বোর্ডে ইংরেজিতে লিখলেন দুটি বাক্য, যার বাংলা অর্থ—‘আমি দশম শ্রেণির ছাত্রী। আবার ক্লাসে ফিরতে পেরে আমি খুব খুশি।’ মূলত ওই ছাত্রীকে পড়াশোনায় উৎসাহ দিতেই এই বার্তা শিক্ষকের।

ক্লাসের বাইরে থেকে কেউ একজন মোবাইল ফোনে ধারণ করলেন মানবিক এই শিক্ষকের আন্তরিকতা। পরে সেই ছবি ফেসবুকে দিয়ে দেন। মুহূর্তেই সেটি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের। গতকাল রবিবার বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী শিশু কোলে নিয়ে উপস্থিত হয়েছিল ক্লাসে। আর ওই শিশুকে কোলে নিয়ে শিক্ষার্থীকে পড়ালেখার সুযোগ করে দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন শিক্ষক পঙ্কজ মধু।

খোজ নিয়ে জানা যায় বিষয়টি নিয়ে গতকাল দুপুরে ফেসবুকে পোস্ট দেন স্থানীয় এক যুবক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রীর সন্তান কোলে নিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালাচ্ছেন চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক পঙ্কজ মধু স্যার। সন্তান কোলে নিয়ে পাঠে মনোযোগী হতে না পারা শিক্ষার্থীর সুবিধার্থে তিনি এ কাজ করেছেন। স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি, ভালোবাসা।’

তিনি অবশ্য এও লিখেছেন, ‘কিন্তু আমাদের গ্রামসহ পাশের গ্রামগুলোতে এখনো পুরোপুরিভাবে বাল্যবিয়ে রোধ সম্ভব হচ্ছে না। এর পুরোপুরি দায় নিতে হবে ইউনিয়ন পরিষদ অর্থাৎ মেম্বার-চেয়ারম্যানের, পরিষদে কর্মরত উদ্যোক্তা, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। নিকাহ রেজিস্ট্রারও এর দায় এড়াতে পারে না। দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী নিশ্চয় ১৮ বছর কিংবা তদূর্ধ্ব না।’

এ লেখাটি অনেকে কপি করে বিভিন্ন গ্রুপ ও নিজেদের ফেসবুক আইডিতে দিয়েছেন। সেখানে অনেকেই শিক্ষকের প্রশংসা করেন। পাশাপাশি বাল্যবিয়ে নিয়ে সমালোচনা করেছেন। রৌনক রুবেল নামের একজন লিখেছেন, ‘স্যারের প্রতি আরো রেস্পেক্ট বেড়ে গেল। উনার প্রতি শ্রদ্ধা ও সালাম। তবে এর চেয়েও অসংগতি এবং দুঃখের বিষয় হলো দশম শ্রেণির ছাত্রীর বাচ্চাসহ ক্লাস করা।… শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি, গণ্যমান্য ব্যক্তিরাসহ আমরা প্রত্যেকে এগিয়ে এলেই এই বাল্যবিয়ে নামক মারাত্মক ব্যাধি এবং অন্যায় প্রতিরোধ সম্ভব।’

মুক্তি খান নামের একজন লিখেছেন, ‘এর দায়ভার নিতে হবে ইউনিয়ন পরিষদকে। এদের সঠিক তদন্ত করা উচিত।’ রিদোয়ান আলম নামের একজন লিখেছেন, ‘অন্তত এই যুগে এসে নারীদের ন্যূনতম এইচএসসি পর্যন্ত পড়িয়ে হলেও বিয়ে দেওয়া উচিত। এতে মেয়ে, তার স্বামী-সংসার এমনকি ভবিষ্যৎ সন্তানের জন্যই বিরাট মঙ্গল।’

কথা হলে পঙ্কজ মধু বলেন, ‘একজন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ কিছু করার চেষ্টা করি। এরই অংশ হিসেবে চেষ্টা করেছি যেন মেয়েটি স্কুলে আসা বন্ধ না করে দেয়। তার স্বামীও বলে গেছেন যে তাকে নিয়মিত স্কুলে পাঠাবে। আশা করি, মেয়েটি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা তাকে করা হবে।’

তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সংশ্লিষ্ট একজনের বরাত দিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে আমাকে না করা হয়েছে।’ তবে বিষয়টি তিনি জানেন বলে স্বীকার করেছেন।

সেরা টিভি/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360