যা জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দের ফেসবুক ওয়ালে পোষ্ট করা হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি এস এম আশিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো: সুমন হোসেন স্বাক্ষরিত এক পত্রে রাজিব ইমরানকে সভাপতি ও হাছানুর জামানকে সাধারণ সম্পাদক করে শুক্রবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দেওয়ার পর আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। কি কারণে এবং কিসের বিনিময়ে একজন শিবির ক্যাডারকে সভাপতি করা হলো তা নিয়ে বিতর্ক চলতেই থাকে।
বিশেষ করে সদ্য অনুমোদিত এই কমিটির সভাপতি রাজিব ইমরানের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠে আসে বিভিন্ন মহলে। সদর উপজেলা ছাত্রলীগে অপরিচিত মুখ রাজিব ইমরানের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইল ঘেটে রীতিমত বিস্মিত হয়েছেন অনেকেই। ২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাজিব ইমরান তার ব্যক্তিগত প্রোফাইলে দা হাতে একটি শিশুর ছবি পোস্ট করেছেন, যেখানে লেখা আছে, ‘আমি লেংটা মনির, নৌকায় ভোট চাইতে আইলে ঠ্যাং কাইট্টা রাইখা দিমু।’
২০১৪ সালের ৪ জানুয়ারি তিনি তার প্রোফাইলে আরও একটি ছবি পোস্ট করেছেন। যেখানে ২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে লেখা আছে, ‘হালার-পো হালা, আজ তোর একদিন, কি আমার একদিন! ভোট না দিয়ে যাবি কৈ?’ ২০১৮ সালের ৬ আগস্ট তিনি তার প্রোফাইলে একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘কাদের সাহেব, “যারা হেলমেট পড়ে বা মুখ ঢেকে ছাত্রদের মারধর করে এবং লাঠি, চাপাতি নিয়ে পুলিশের সাথে ঘুড়ে বেড়ায় তাদেরকে কি বিএনপি জামাত শিবির বলে, আপনার চাইতে মখা ভাল ছিলো।”
২০১৮ সালের ৮ আগস্ট তিনি তার প্রোফাইলে একটি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, মেজর অব শাহ আলম যা বলছিলেন সেটা এখন আমাদের কাছে পরিষ্কার।
আর ছাত্রলীগের কমিটিতে সভাপতি পদ পাওয়ার পর ৩০ এপ্রিল প্রথম প্রহরে তিনি তার প্রোফাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন হোসেনের সাথে একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ধন্যবাদ দিলে আপনাকে ছোট করা হবে ভাই, অনেক আগে থেকে আপনার সাথে আমার পরিচয়, সব সময় নিজের ছোট ভাইয়ের মত ভালবাসা দিয়েছেন, ভুলগুলো সব সময় ধরায় দিবেন, আর যে দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন তার সঠিক ব্যবহার যেন করতে পারি তার জন্য দোয়া করবেন।’
কাকে দেওয়া হলো সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের পদ এমন প্রশ্ন এখন ছাত্রলীগেরই ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মুখে। বিষয়টি নিয়ে সভাপতি রাজিব ইমরানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানার জন্য সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমানের সাথে সোমবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাজিব ইমরানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরেছি। এরপর প্রদত্ত আংশিক কমিটির অনুমোদন স্থগিত করা হয়েছে।
আমরা কমিটিগতভাবে এবং গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে খোজখবর রাখছি। ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড দেখার কাজ চলছে। খোজ খবর নিয়ে খুব দ্রুত এই বিতর্কের অবসান ঘটাবো। তিনি আরো বলেন, এখন ফেসবুক স্ট্যাটাস এডিট করা যায়, সেটাও হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সাথে অতি দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে এই কমিটির সার্বিক বিষয় নিয়ে দলীয়ভাবে আমাদের মতামত তুলে ধরা হবে।
এটিভি বাংলা/সামিয়া