মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তৃতীয়
প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিশংসিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে
অভিশংসনের প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে অনুমোদিত হয়েছে। তবে তিনি
প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকতে পারবেন কি না তা জানুয়ারিতে সিনেটের ভোটে চূড়ান্ত
হবে।
ট্রাম্প অভিশংসিত হওয়ার পর থেকে গণমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত শব্দ এখন অভিশংসন বা ইমপিচমেন্ট। কিন্তু এই ইমপিচমেন্ট বা অভিশংসনের অর্থ কী আর কিভাবে এই অভিশংসন করা হয়।
অভিশংসন বা ইমপিচমেন্ট কী:
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ইমপিচমেন্ট বা অভিশংসনের ঘটনা বিরল। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় ভারসাম্য রক্ষা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস, যেখানে আইন তৈরি করা হয়, তারা দেশটির প্রেসিডেন্টসহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বলা আছে, বেশ কিছু অপরাধের জন্যে প্রেসিডেন্টকেও তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া অর্থাৎ তাকে ইমপিচ করা যেতে পারে। এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছে, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, ঘুষ নেওয়া অথবা অন্য কোন বড় ধরনের কিংবা লঘু অপরাধ।
যেভাবে অভিশংসন করা হয়?
অভিশংসন বা ইমপিচমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু হতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ বা হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস থেকে। এটি মার্কিন কংগ্রেসের একটি অংশ।এই প্রক্রিয়া শুরু করার জন্যে এটি সেখানে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস হতে হবে। আর পাস হলে পরের ধাপে বিচার অনুষ্ঠিত হবে সিনেটে, যেটা কংগ্রেসের দ্বিতীয় অংশ।
সিনেট অনেকটা আদালত কক্ষের মতো, যেখানে সিনেটররা বিচারক বা জুরি হিসেবে কাজ করবেন। তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রেসিডেন্ট দোষী নাকি নির্দোষ। প্রেসিডেন্টকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিতে হলে এই সিনেটে দুই-তৃতীয়াংশ সিনেটরকে ইমপিচমেন্টের পক্ষে ভোট দিতে হবে।
আরও যারা অভিশংসিত হয়েছেন:
ট্রাম্পের আগে আরও দুইজন প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করা হয়েছিল। তারা হলেন-বিল ক্লিনটন এবং এন্ড্রু জনসন।
১৯৯৮ সালে ক্লিনটনের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্যে ভোট পড়েছিল প্রতিনিধি পরিষদে। এর আগে ১৮৬৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এন্ড্রু জনসনের বিরুদ্ধেও ইমপিচমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।
কিন্তু ক্লিনটন বা জনসন তাদের কাউকেই সিনেটে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি। সুতরাং, ইমপিচমেন্টের অর্থ এটা নয় যে এর প্রক্রিয়া শুরু হলেই প্রেসিডেন্টকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত কোন প্রেসিডেন্টকে ইমপিচমেন্টের কারণে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়নি। তবে একজন প্রেসিডেন্টকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তিনি রিচার্ড নিক্সন। ১৯৭৪ সালে তার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই তিনি পদত্যাগ করেন। ধারণা করা হয়, প্রক্রিয়াটি শুরু হলে তাকে হয়তো প্রেসিডেন্টের পদ থেকে শেষ পর্যন্ত সরিয়ে দেওয়া হতো। সূত্র: বিবিসি বাংলা।
সেরা নিউজ/আকিব