আকিব মাহমুদ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইটি খাতে বাংলাদেশি প্রতিনিধিত্ব করা শেখ গালিব রহমানের জন্মদিন আজ। ব্যাংকার বাবা এস এম সিদ্দিকুর রহমান ও শিক্ষিকা মায়ের সন্তান শেখ গালিব রহমান বরিশাল শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার দাদা অ্যাডভোকেট আশরাফ আলী বরিশাল অঞ্চলের একজন খ্যাতিমান আইনজীবী হিসেবে পরিচিত। ছোট বেলায় স্বপ্ন দেখতেন দাদার মতো বড় মাপের একজন আইনজীবী হবেন। সে লক্ষ্যে এক বছর ঢাকায় আইন বিষয়ে পড়াশোনাও করেন। কিন্তু মাত্র ১৭ বছর বয়সে ২০০৭ সালে ইউএসএ আসার পর তার জীবনের মোড় বদলে যেতে শুরু করে।
আমেরিকার ওহাইওতে থাকাকালে অধ্যয়নের পাশাপাশি কিউ এনালিস্ট হিসেবে আইবিএমে প্রথম চাকরি শুরু করেন। ২০১১ সালে সাফল্যের সঙ্গে কম্পিউটার সাইন্স পাস করার পরে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে হান্টিংটন ন্যাশনাল ব্যাংক এ কম্পিউটার এনালিস্ট হিসেবে যোগ দেন। এরপর আইটি কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি নেন চেজ ব্যাংক, ক্যাপিটাল ওয়ান ও ডিজনি ওয়ার্ল্ডে।ইতোমধ্যে সিআইএস সিসিএনএ মতো ডাটা বেইজ কোর্সগুলো সম্পন্ন হয়। রেগুলার ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে লিড এর দায়িত্ব দেন কর্তৃপক্ষ। এ সময় ৪টা সম্মাননা অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয় তাকে।
মাত্র ১১ বছরের মধ্যে নিজ কর্মদক্ষতার গুনে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে পরিচিতি পেয়েছেন একজন মেধাবী আইটি টেকনোলজিষ্ট হিসেবে। কাজ করেছেন আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (ডিএইচএস) প্রকল্পে একজন তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) বিশেষজ্ঞ হিসেবে।
ডিএইচএসের সাবেক এ কর্মকর্তা ও আইটি উদ্যোক্তা কাজ করেছেন বিখ্যাত আইটি প্রতিষ্ঠান কেপজিমিনির সঙ্গে। শুধু এখানেই থেমে থাকেননি তিনি, ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডিজিটাল সার্ভিস (ইউএসডিএস) প্রকল্পে আইটি কনসালটিং ডাইরেক্টর হিসেবে যোগ দেন গালিব। ওয়াশিংটন ডিসিতে রিজার্ভ ব্যাংক অব রিচমন্ডে আইটি কনসালটিং ডাইরেক্টর হিসেবে কাজ করেন তিনি।
তাছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষাকে বহুমাত্রিকভাবে ছড়িয়ে দিতে গড়ে তুলেছেন নিজের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান ট্রান্সফোটেক। জ্যামাইকায় ১৭৩ স্ট্রিট-এ অবস্থিত ‘ট্রান্সফোটেক’-এর মাধ্যমে ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইটি) আধুনিক শিক্ষায় গড়ে তুলছেন বাংলাদেশিসহ নানা দেশের অসংখ্য তরুণকে। এখানে তরুণদের বহু কাঙ্খিত স্বপ্নকে বাস্তব করে তুলছেন নতুন প্রজন্মের এই কারিগর। শিক্ষার্থীরা আইটি জগতে তাদের একজন পথ প্রদর্শক হিসেবে দেখছেন গালিব রহমানকে। শুধু তাই নয়, প্রশিক্ষণ শেষে এই প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরিও নিশ্চিত করা হচ্ছে সরকারী এবং কর্পোরেট হাউজে। এভাবে অসংখ্য পরিবারের কাছে গালিব রহমান একজন আলোকিত মানুষ হিসেবে পরিচিতি। এখন গতিময় এক উজ্জ্বল জীবনের নাম। এই প্রতিষ্ঠানটি শত শত তরুণকে উপহার দিচ্ছে সুন্দর এক জীবনের সন্ধান।
তরুন এই উদ্যোক্তা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত একজন গর্বিত বাংলাদেশি, যার জীবনের লক্ষ্যই দেশের জন্য কিছু করা। নিজের মেধা দিয়ে দেশ ও দশের উন্নয়নে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চান শেখ গালিব রহমান। শেখ গালিব জানান বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে একটি ক্যাম্পাস ও যৌথ উচ্চশিক্ষা কর্মসূচি চালুর চেষ্টা করছেন তিনি। এ চেষ্টা সফল হলে বাংলাদেশের তরুণদের সামনে নিঃসন্দেহে খুলে যাবে সম্ভাবনার দুয়ার। স্বপ্নবান তরুণ গালিবের লক্ষ্যও তা-ই। ‘দেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারা এবং মানুষের উপকার করতে পারাটাকেই সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ’ বলে মনে করেন স্বপ্নচারী গালিব রহমান।
সেরা নিউজ/আকিব