ডেস্ক রিপোর্ট:
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ আসন্ন নির্বাচনগুলোতে বিএনপি অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার বিকেল চারটায় চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ীস্থ বিএনপি দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবন মাঠে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমরা অংশ নেবো। এ সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছে। উপনির্বাচনগুলোতেও আমরা অংশ নিচ্ছি। সেই সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন হয়নি। মির্জা আলমগীর বলেছেন, জুলুম নির্যাতন, লুটপাট, অব্যবস্থায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকেও হার মানিয়েছে সরকার। জনগণের ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে তারা ৭৫ এর মত দেশে আবার বাকশাল কায়েম করতে চায়।
মির্জা আলমগীর বলেন, সারাদেশে ৩৫ লাখ বিএনপির নেতাকর্মীকে আসামি করে এক লাখ মামলা করা হয়েছে। যখন যেভাবে পারছে হত্যা করছে, গুম করছে জুডিসিয়াল কিলিং করছে। কিন্তু এরপরও বিএনপি গণতন্ত্রের অধিকার আদায় থেকে দূরে থেকে যায়নি। তিনি বলেন, পুরো দেশের জনগণ বিএনপির সাপোর্টার। বিএনপি ইজ দ্যা পার্টি অব পিউপল। যখনই বিএনপিকে ধ্বংস করতে চেয়েছে বিএনপি ফিনিক্স পাখির মতো আবারও জেগে উঠেছে। কারণ জনগণ বিএনপির সঙ্গে আছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে পরিকল্পিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার। বেগম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। বিছানা থেকে তিনি উঠতে পারেন না, দাঁড়াতেও পারেন না। ডায়াবেটিস বেড়ে গেছে। তাকে সরকার পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ চৌধুরীর দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বিএনপি কোনও দল নয়, বিএনপির জনসমর্থন নেই এরকম বলে বেড়ানো মন্ত্রীরা প্রতিদিনই বিএনপির কথা বলেন। আচ্ছা আমরা জনপ্রিয় না হলে, আপনারা প্রতিদিন আমাদের কথা বলেন কেন। এছাড়া তিনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বেফাঁস কথাও বলেন। অথচ মুক্তিযুদ্ধেও সময় এই মন্ত্রীর জন্মও হয়নি। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন, কেন্দ্রিয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) মাহবুবুর রহমান শামীম। বক্তব্য দেন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল, নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
তবে তার বিপরীতে গিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে ফখরুল বলেন, “নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব থেকে বড় গণতান্ত্রিক আন্দোলন।”
ঢাকা সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও একই কারণ দেখিয়ে তিনি বলেছিলেন, আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই ভোটে অংশ নিচ্ছেন তারা।
বিএনপির চট্টগ্রামের নেতাদের ভোটের প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনাও দেন বিএনপি মহাসচিব।
“এই যে নির্বাচনে যাবেন, সংগঠন যদি শক্ত না থাকে তাহলে কেন্দ্রে দাঁড়াতে পারবেন না। দ্বিধা-বিভেদ-দ্বন্দ্ব না রেখে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলুন, যাতে এই দানবকে পরাজিত করতে পারি।”
নগরীর নাসিমন ভবনে বিএনপির মহানগর কার্যালয়ে নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্করের সঞ্চালনায় এই সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম।
আগামী ১৬ই ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে ইসি।
২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে হারলেও তার আগের মেয়াদে বিএনপির এম মঞ্জুর আলম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন।
সেরা নিউজ/আকিব