অনলাইন ডেস্ক:
সমালোচনা ও বিতর্কের মধ্যেই হঠাৎ করে ‘তাফসিরুল কোরআনের’ কয়েকটি মাহফিল মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে গবেষণার কাজে মালয়েশিয়া চলে যাওয়া ঘোষণা দিয়েছেন সময়ের আলোচিত ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী। তবে এর পরও সমালোচনা যেন তার পিছু ছাড়ছে না। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে আজহারীর গাড়ি চালানোর কিছু দৃশ্য। ছবিতে দেখা গেছে, মিজানুর রহমান আজহারী একটি ‘বেন্টলি’ গাড়ি চালাচ্ছেন যার বাজারমূল্য কমপক্ষে ৫ কোটি টাকা।
ছবিগুলো আজহারীবিরোধী বিভিন্ন ফেজবুক পেজ ও ‘নাইদরেইনস’ নামে এক আইডি থেকে পোস্ট করে প্রশ্ন ছোড়া হচ্ছে, ইসলামের দাঈ হয়ে মালয়েশিয়ায় কি করে এতো দামি গাড়ি কেনেন আজহারী? মাহফিলে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা:) ও সাহাবাদের ত্যাগি, সাদাসিধে জীবনের কথা বলে সেখানে কি তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন? সমালোচনাকারীরা বলছেন, দেশে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেই মালয়েশিয়ায় চলে গেছেন আজহারী।
বিষয়টি আজহারীর ব্যক্তিগত বলে অনেকেই বলছেন, মাহফিলমঞ্চে তিনি কি বলেছেন তা নিয়া কথা না বলে তার সম্পত্তি, আয়-ব্যয় বা তিনি কি গাড়ি চালাবেন তা নিয়ে কথা না বলাই উত্তম। এটা পুরোটাই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ছবিগুলোকে এডিট বলে অনেকেই বিষয়টি এড়িয়ে যেতে বলেছেন। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আজহারীভক্তদের সঙ্গে তার বিরোধীরা তুমুল বাকবিতণ্ডায় মেতেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া (আইআইইউএম) এর বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বলেন, যারা মালয়েশিয়ায় যাননি বা থাকেননি তারাই এমন সমালোচনা করছেন। উল্লেখ্য, মিজানুর রহমান আজহারী মালয়েশিয়ায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, মালয়েশিয়ায় মিজানুর রহমান আজহারীর নিজের কোনো গাড়ি নেই। তিনি সেখানে ভাড়ায় গাড়ি চালিয়েছেন। আজহারীকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে হলো কেন প্রশ্নে নাইমুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় পর্যাপ্ত গণপরিবহন থাকলেও দূরবর্তী কোনো স্থানে বা ভ্রমণে বের হলে অথবা গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজে অনেকেই গাড়ি ভাড়া নেন। আমিও এই কাজটা মাঝেমধ্যে করি। তিনিও হয়ত এমনটাই করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আপনি কুয়ালালামপুরে গেলে বাংলাদেশে বেশি ব্যবহৃত গাড়িগুলো দেখবেন না। মালয়েশিয়ায় যেসব গাড়ি সহজলভ্য তা ঢাকার গুলশান-বনানীতেও সচরাচর চোখে পড়ে না।
তবে আজহারীর এই গাড়ি মালয়েশিয়ায় নয়; সিঙ্গাপুরে চালিয়েছেন বলে ধারণা করছেন তিনি। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় অনুষ্ঠিত মাহফিলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোক সমাগম হতে দেখা গেছে যেখানে মিজানুর রহমান আজহারী উপস্থিত ছিলেন। আজহারীর কোনো কোনো মাহফিলে ৫ লাখের বেশি মুসল্লি সমাবেশ ঘটেছে।
এদিকে আজহারীর সঙ্গে জামায়েত-ইসলামের সম্পৃক্তরা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন সরকার দলীয় কেউ কেউ। এর পর পরই অজ্ঞাত কারণে চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত সব মাহফিল স্থগিত করেন আজহারী। ঠিক কী কারণে তিনি তার সব মাহফিল স্থগিত করেছেন তা পরিষ্কার করে বলেননি।
সেরা নিউজ/আকিব