সেরা নিউজ ডেস্ক:
পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিয়ে ভোগান্তি ও অর্থ লেনদেনের পুরনো অভিযোগ উতরে উঠে রীতিমতো চমক সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশের কাছে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন এবং ক্লিয়ারেন্স আবেদন যাওয়া মাত্রই আবেদনকারী পাচ্ছেন এসএমএস। এমনকি পুলিশ প্রতিবেদন পাঠানোর পরও মিলছে কনফার্মেশন এসএমএস।
বিনা খরচে জরুরি ক্ষেত্রে তিনদিনে এবং সাধারণ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচদিনে মিলছে এই পুলিশি সেবা। গত বছরের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা রেঞ্জে নাগরিক সেবা কার্যক্রমের মাধ্যমে এই পদ্ধতি চালু হয়েছে। সুবিধাটি চালু করার ফলে প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পাচ্ছেন এই সেবা। ফলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন নিয়ে কয়েক দশকের ভোগান্তি, দুর্ভোগ ও হয়রানির অভিযোগ দেশের ১৩ জেলার ৯৬ থানায় এখন শূন্যের কোঠায় বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, পাসপোর্ট অফিসে ফরম পূরণ করে জমাদানের পর আবেদন সংশ্লিষ্ট থানায় প্রতিবেদনের জন্য তা পৌঁছলে আবেদনকারী তার মোবাইল ফোনে এসএমএস (ক্ষুদেবার্তা) পাচ্ছেন। যাতে তার পাসপোর্ট আবেদন ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তার নাম এবং মোবাইল ফোন নম্বরের পাশাপাশি থাকছে এ সংক্রান্ত কোনো ধরনের অভিযোগ থাকলে তা জানানোর জন্য ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার মোবাইল ফোন নম্বর। জরুরি ক্ষেত্রে নির্ধারিত তিনদিন ও সাধারণ ক্ষেত্রে পাঁচদিন পর পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে পাঠানোর পর আবেদনকারী পাচ্ছেন আরেকটি এসএমএস। যাতে উল্লেখ থাকছে কোনো তারিখ ও স্মারকে পাসপোর্ট অফিসে পুলিশ প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে এবং প্রতিবেদন সন্তোষজনক বা সন্তোষজনক নয় এমন তথ্য। পুলিশের জেলা বিশেষ শাখার (ডিএসবি) মাধ্যমে ভেরিফিকেশন ও ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেয়া হয়।
জানা গেছে, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ভেরিফিকেশন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ অফিস থেকে এর তদারকি করা হচ্ছে। ১৩ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) তার অধিনস্ত থানা এলাকায় এই কার্যক্রমের চিত্র অনলাইনে দেখতে পাচ্ছেন। যাতে নির্ধারিত ৩/৫ দিনের মধ্যে পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন না হলে অনলাইনের ওই অংশ লাল হয়ে থাকছে। বিলম্বের জন্য তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তাকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। পুলিশের যে কর্মকর্তা ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব পাবেন তিনিও এসএমএস-এর মাধ্যমে তার দায়িত্বের ব্যাপারে জ্ঞাত হচ্ছেন। অন্যদিকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদনকারীও অনুরূপভাবে এসএমএস পাবেন এবং ‘আপনার সার্টিফিকেট ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত’ মর্মে সর্বশেষ এসএমএস পাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেছেন, নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে এবং জনবান্ধব পুলিশ গড়তে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জনগণ তার সুফল পেতে শুরু করেছে। সর্বত্রই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে গৃহীত উদ্যোগে সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছে। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এবং ভেরিফিকেশন নিয়ে এখন মানুষের কোনো ভোগান্তি নেই। ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর নির্দেশে এ কার্যক্রম বেগবান হয়েছে। হেডকোয়ার্টার্সের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে এই সেবা কার্যক্রম সারাদেশে পুলিশের সব ইউনিটে ছড়িয়ে পড়বে বলে তিনি মনে করেন।
সেরা নিউজ/আকিব