অনলাইন ডেস্ক:
টাঙ্গাইলের সখীপুরে স্ত্রীর নির্যাতন সইতে না পেরে আশরাফ কাজী (৩৫) নামে এক ব্যক্তি বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে স্বজনেরা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
মঙ্গলবার উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের নলুয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আশরাফ কাজী ওই এলাকার ওমর কাজীর ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে আশরাফ আলী টাঙ্গাইল শহরে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে শাহনাজ আক্তার নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। তারা দীর্ঘদিন সংসার করার পরে তাদের ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ের সন্তানের জন্ম হয়। গত তিন বছর আগে আশরাফ কাজী কাজের খোঁজে জেলার মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই এলাকায় একটি বাইসাইকেল কারখানায় শ্রমিকের কাজ নেন। ওই কারখানায় কাজ করার সুবাধে ওই কারখানার রোকসানা নামের এক নারী শ্রমিকের প্রেমে পড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে কারখানার পাশে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন।
এদিকে, দ্বিতীয় বিয়ের খবর পেয়ে প্রথম স্ত্রী অভিমান করে বাপের বাড়ি চলে যায়। গত ১৫ দিন আগে দ্বিতীয় স্ত্রীর নির্যাতন সইতে না পেরে কারখানার চাকরি ফেলে আশরাফ নলুয়ায় চলে আসেন। গত রবিবার সকালে দ্বিতীয় স্ত্রী রোকসানাও স্বামী আশরাফের খোঁজে গ্রামে চলে আসেন। আশরাফ কেন ওই কারখানার চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামে এলে এর কারণ জানতে আশরাফের মা-বাবার সামনেই রোকসানা তার স্বামীকে চুলে ধরে চর-থাপ্পর মারতে থাকে।
এ লজ্জা ঢাকতে এক পর্যায়ে আশরাফ ঘর থেকে কীটনাশকের বোতল এনে স্ত্রীর সামনেই খেয়ে ফেলেন। বিষ খাওয়ার সময় আশরাফ উচ্চ কণ্ঠে বাবা-মা ও ভাইয়ের কাছে স্ত্রীর দ্বারা কখন কীভাবে নির্যাতিত হয়েছেন সেসব কাহিনী বর্ণনা করতে থাকেন। এ দৃশ্য দেখে বাবা-মা ও ভাইয়েরা রোকসানার ওপর ক্ষেপে গেলে রোকসানা পালিয়ে যায়। পরে স্বজনেরা আশরাফকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের উপ-সহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, স্বামীর নির্যাতনে অনেক নারী বিষপান করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবরটি পুরনো হয়ে গেছে। স্ত্রীর নির্যাতনে পুরুষেরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে এ খবর নতুন।
সখীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এএইচএম লুৎফুল কবির বলেন, কোনো পুরুষ স্ত্রীর হাতে নির্যাতিত হয়ে থানায় অভিযোগ করলে সেগুলোও আমলে নেওয়া হবে। তবে এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি।
সেরা নিউজ/আকিব