অনলাইন ডেস্ক:
খেলোয়াড়দের মাঠের পারফর্মে এমনিতেই অস্বস্তিতে আছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা। দেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থায় এবার হানা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন ও র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব)। দেশের ক্রীড়াঙ্গণে যা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
র্যাব-দুদকের কর্মকর্তারা হানা দিয়েছেন বোর্ডের শীর্ষ দুই পরিচালক লোকমান হোসেন ভুঁইয়া ও মাহবুব আনামের ঘরে।। দু’জনেই বিসিবির শীর্ষ কর্তা। প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের তালিকায় সবার উপরে। অথচ তাদের ঘরে হানা দিয়েছে র্যাব ও দুদক।
এরই মধ্যে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন লোকমান। তাঁকে গ্রেফতারের সময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক দ্রব্য উদ্ধার করেছে র্যাব সদস্যরা। সঙ্গে তথ্য উদঘাটন করেছেন, বোর্ডের শীর্ষ এই কর্তা অস্ট্রেলিয়ায় পাচার করেছেন কোটি কোটি টাকা।
মোহামেডান ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন। বিসিবির শীর্ষ এই কর্তা ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটিকে করেছেন কুলষিত। অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনা করে লাভের ৪১ কোটি টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাংকে। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।
বিসিবির এই পরিচালককে তেজগাঁও থানায় হাস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার গভীর রাতে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে পুলিশের কাছে দিয়েছে র্যাব। মাদক আইনে করা হয়েছে মামলা। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, লোকমানের বিরুদ্ধে মাদক আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।
এদিকে বোর্ডের আরেক কর্তা মাহবুব আনামকে তলব করেছে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশন জানিয়েছে, ৪ কোটি ৭৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকার স্থাবর এবং ৫৬ কোটি ৭৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে বিসিবির প্রভাবশালী এই কর্মকর্তার। সব মিলিয়ে ৬২ কোটি ৫৪ লাখ ৮২ হাজার টাকার এই সম্পদের হিসাব চেয়েছে দুদক। কোন সূত্র থেকে এই বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি তা জানতে চেয়েছে দুর্নীতি দমন সংস্থাটি।
গত বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশন লিখিত জবাব দিতে নোটিশ পাঠিয়েছে মাহবুব আনামের কাছে। আগামি ২১ কার্য্য দিবসের মধ্যে এই বোর্ড পরিচালককে দুদকের দরবারে হাজির হয়ে এই বিশাল সম্পদের বিস্তারিত জানাতে হবে। দুদকের নোটিশ পেয়েও তিনি আছেন বেশ বেকায়দায়।
দুই শীর্ষ বোর্ড পরিচালকের এমন কাণ্ডে বিব্রত বিসিবি। বোর্ড পরিচালকরা পড়েছেন বিপাকে। যে লোকমান হোসেন ভুঁইয়া অপরাধী হয়ে এখন থানা হেফাজতে, দিন দু’এক আগেও তাঁকে দেখা গেছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। ইন্টারন্যাশনাল সিরিজের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ছিলেন তিনি। এখন তাকে থাকতে হচ্ছে হাজতে। মাহবুব আনামের মতো প্রভাবশালী কর্মকর্তাকে দুদকে হাজির হতে হবে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে। দেশের ক্রিকেটের জন্য যা কখনো সুখকর নয়। ক্যাসিনো কাণ্ডে এমনিতেই বেশ নড়বড়ে অবস্থা বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গণে।