এম.এ হান্নান, বাউফল:
পটুয়াখালীর বাউফলের মদনপুরা ইউনিয়নের ৯ওয়ার্ড চন্দ্রপাড়া গ্রামের ৪২টি পরিবার হয়রারিমুলক মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচার জন্য ও চন্দ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে হত্যার হুমকি দাতা মনিরুল ইসলাম শাহিনের বিচারের দাবীতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন। এলাকায় শাহিন কুত্তা শাহিন নামে পরিচিত। ৩৫মামলার বাদী ওই শাহিন।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে চন্দ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষার্থীরা জানায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর (রবিবার) চন্দ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অভিভাবক সদস্য পদে শহিন, তার স্ত্রী ময়না, চাচা হারুন মৃধা ও চাচী কহিনুর প্রার্থীতা করেন। নির্বাচনে তাঁরা বিপুল ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত হয়। পরাজিত হওয়ায় শাহিন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে গিয়ে ভোটে কারচুপির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মাহমুদা বেগমকে হত্যার হুমকি ও মামলার ভয় দেখায়। পরে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আমিনুল খাঁন বলেন, শাহিন ভোটে পরাজিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে হত্যার হুমকি দেয়। এছাড়াও শাহিন আমার নামে মিথ্যা ৫টি মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করছে এবং প্রতিনিয়ত আমাকে হুমকি দিচ্ছে।
অপর দিকে এলাকাবাসী জানায়, শাহিন একজন মামলাবাজ। তাঁর নামে অবৈধ জমি দখল ও চাাঁদাবজির অভিযোগ রয়েছে। শাহনি এলাকায় ৪২টি পরিবারকে মিথ্যা মামলায় জরজরিত করে নি:স্ব করে দিয়েছেন। মিথ্যা মামলার খরচ বহন করতে গিয়ে অনেকে হয়েছেন ভিটে-মাটি ছাড়া।
মো: কাওসার নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জানায়, শাহিনের ৬মিথ্যা মামলার আসামী সে। তাঁর অত্যাচারে টিকতে না পেরে বাঁচার জন্য তাঁরা মানববন্ধন করছেন। প্রশাসনের কাছে তাকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার দাবী জানায়।
স্থানীয় ফার্মেসী ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন বলেন, ‘ আমার দোকন থেকে শাহিন ৫০হাজার টাকার ঔষধ নিয়ে যায় এবং আমার বিরুদ্ধে উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করে।
শফিকুল নামের আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জানায়, শাহিন ও জুয়েল দু’ভাই মারামারি করে। তিনি তাদের মার ছাড়িয়ে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিন একে একে তার বিরুদ্ধে ১৮টি মিথ্যা মামলা দেয়। মামলার খরচ বহন করতে গিয়ে তিনি আজ পথের ভিক্ষারী। ছেলে মেয়েদের পড়াশুনাও করাতে পারছে না।
সামসুল হক ও আবদুর রহিম ব্যাপারী বলেন, শাহিন গ্রামবাসীকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। মামলায় মামলায় শেষ হয়ে যাচ্ছে এক একটি পরিবার। অবৈধ ভাবে দখল করে নিচ্ছে মানুষে জমি।
খোজ নিয়ে জানা যায়, শাহিনের মামলার জালে আটকা পড়েছেন বাউফল উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাহজাহান সিরাজ, সংবাদকর্মী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
চন্দ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েল প্রধান শিক্ষক মাহমুদা বেগম বলেন, ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে হেরে গিয়ে মিথ্যা ভোট কারচুপির অভিযোগে এনে আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। এব্যাপারে আমি বাউফল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
তিনি আরো বলেন, শাহিনের অনুমতি ছাড়া বিদ্যালয়ে কোন কার্যক্রম চালানো যাবে না বলে হুশিয়ারী দেয়। যদি আমি তার হুকুম না মানি তাহলে আমাকে এই স্কুলে চাকরি করবো না।
এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আমি এখন পর্যন্ত কোন উকিল নুটিশ পাইনি। তাই আমি নিয়মানুযায়ী স্কুল পরিচালনা করবো।
এব্যাপারে মনিরুল ইসলাম শাহিন বলেন, যে লোক আমার সাথে ফাইট করছে সেই লোক টাকা পয়সা দিয়া আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মানববন্ধন করিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ম্যানেজিং কমিটির ভোটে কারচুপি হয়েছে। যার বিরুদ্ধে তিনি কোর্টে মামলা করেছেন।
এব্যাপারে বাউফল তানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চন্দ্রপাড়া একটি স্কুল কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দ্বন্ধ চলছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে তার অফিসে ডুকে হুমকি দিয়েছেন এই মর্মে অভিযোগ দিয়েছেন। সত্য- মিথ্যা তদন্ত করে জানা যাবে।