নিজস্ব প্রতিবেদক:
২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষ থেকেই দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ’। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত কলেজগুলোর স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর ভর্তির জন্যও এ প্রক্রিয়া প্রযোজ্য হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির ২৬২তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য রাষ্ট্রপতির অভিপ্রারায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য উপস্থিত সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা সর্বসম্মতিক্রমে এ পদ্ধতি অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেন।
জানা যায়, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির আলোকে প্রণীত পৃথক প্রশ্নপত্রে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে অনুষ্ঠিতব্য এই কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তিনটি শাখার বিভিন্ন বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। অনলাইনে দরখাস্ত আহবান করে প্রতি বছর নভেম্বর মাসের মধ্যেই সকল ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। কেন্দ্রীয় মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত শিক্ষার্থীরা সংশ্নিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদার আলোকে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া এমসিকিউ প্রশ্নের পরিবর্তে ভর্তি পরীক্ষায় সংক্ষিপ্ত লিখিত উত্তর বিশিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করার প্রস্তাব করা হয়।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মীজানুর রহমান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহাম্মদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানসহ ২৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, মঙ্গলবারের এ সভায় ঢাকা, জাহাঙ্গীর নগর ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্যরা উপস্থিত ছিলেন না। বুয়েট, ঢাবি, জাবি, রাবি ও চবি এই কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার মধ্যে থাকবে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহম্মদ বলেন, সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে এবং তাতে সবাই থাকবে। পুরনো ও বড় চারটি বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রক্রিয়ায় না আসলেও ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষ থেকেই এ ভর্তি পরীক্ষা চালু হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্রে জানা গেছে, বুয়েট, ঢাবি, জাবি, রাবি ও চবিসহ শীর্ষ ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের আজ ইউজিসিতে এক সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সেখানে ওইসব কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য জানতে চাওয়া হতে পারে। এইসব বিশ্ববিদ্যালয় এই ভর্তি পরীক্ষার আওতায় থাকছে কিনা, তাও আজ স্পষ্ট হয়ে যেতে পারে।
সভায় অংশ নেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, এ সভায় এ বছর থেকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা উপস্থিত ছিলেন না। তাই এসব বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। বুধবার বিষয়টি নিয়ে আমরা ইউজিসিতে যাব, সেখানেই এটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি বলেন, এটাকে ‘সমন্বিত’ কিংবা ‘গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা’ বলা যাবে না। এটি কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, জাবিতে তিনটি শাখায় (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায়) ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকি। ঠিক তেমনি কেন্দ্রীয়ভাবে এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এটার তদারকি করবে ইউজিসি। এ প্রক্রিয়ায় অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করবে। তবে যারা ইচ্ছুক না তারা করবে না।
সেরা নিউজ/আকিব