বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ আরও শক্তিশালী হচ্ছে। এটি ক্রমান্বয়ে শক্তি সঞ্চয় করে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে। ঘণ্টায় ১৫-২০ কিলোমিটার গতিবেগে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়টি।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে এবং গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ সরাসরি বাংলাদেশ ভূখণ্ডে আঘাত হানতে পারে। খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে আগামী মঙ্গলবার (১৯ মে) শেষরাত থেকে বুধবার (২০ মে) বিকেল অথবা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি।
বজলুর রশিদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান অনেক শক্তিশালী রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের আশপাশসহ ৮৫ কিলোমিটার ঝড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। আম্পানের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫-২০ কিলোমিটার। আগামী মঙ্গলবার (১৯ মে) রাতের দিকে অথবা বুধবারের (২০ মে) যেকোনো সময় এটি বাংলাদেশ অতিক্রম করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সোমবার সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে মহাবিপদ সংকেত দেখানোর নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে। এ সময় উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড়ো বাতাসসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাপমাত্রাও কিছুটা কম থাকতে পারে। তবে ভ্যাপসা গরম থাকতে পারে।’
ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাস সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কয়েকটি ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় আম্পান ৪ নম্বর ক্যাটাগরিতে পরিণত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২৪১ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৯৬ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে স্থলভাগের দিকে এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে এর গতিবেগ পরিবর্তন হতে পারে। আগামী বুধবারের মধ্যে (২০ মে) খুলনা চট্টগ্রামের মাঝামাঝি দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রম করবে। এ সময় এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় আম্পান রোববার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১১১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলায় উপকূলীয় অঞ্চলেগুলোতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টরা। এরইমধ্যে উপকূল থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যেতে প্রস্ততি করা হয়েছে সাইক্লোন শেল্টার। সেখানে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে কাজ করছে সংশ্লিষ্টরা।
সেরা নিউজ/আকিব